নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

গণপরিবহন চালু, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা : লঞ্চ, বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় আজ বুধবার থেকে আবারো সরব হয়ে উঠছে দেশের সড়ক, নৌ ও রেলপথ। দীর্ঘ বিরতির আড়মোড়া ভেঙে কাজে নেমে পড়তে গতকাল মঙ্গলবারই সব প্রস্তুতি শেষ করেন গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা। সেরে নেন প্রয়োজনীয় মেরামত ও ধোয়ামোছার কাজটিও। গতকাল থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে গণপরিহনে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মেনে চলা হবে, তা নিয়ে এরই মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা লঞ্চ, বাস ও ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে স্বাস্থ্যবিধি উধাও হতে দেখা গেছে।
সড়কে বাস চালুর জন্য গত রবিবার থেকেই পরিবহন কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেয়। এরপরই বাস ধোয়ামোছা, মেরামতসহ সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু হয়। গতকাল গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকার পরিবহন কোম্পানিগুলোর গ্যারেজে কর্মচারীদের ব্যস্ত সময় কাটতে দেখা যায়। আমিনবাজারের শ্যামলী পরিবহনের নিজস্ব গ্যারেজে দেখা যায়, কেউ বাসের যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করছেন, আবার কেউ বাসের গায়ে জমে থাকা ধুলো পরিষ্কার করছেন। কেউ বাসের ভেতরের সিটগুলো পরিষ্কার করছেন। কর্মী রফিক জানান, অনেকদিন বাস চলাচল না করায় যন্ত্রাংশে মরিচা ধরেছে। মিস্ত্রিরা এগুলো ঠিক করছেন। ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে এবং চালিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ভেতরে এবং বাইরে

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজও চলছে। সন্ধ্যার মধ্যে বাসগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত করে টার্মিনালে পাঠাতে হবে। রাত বারোটা থেকেই বাসগুলো চলাচল শুরু করবে বলে শুনেছি। কল্যাণপুর, পান্থপথ, সায়েদাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার বাস কাউন্টারগুলো গতকাল সকালের দিকেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা শেষে খুলে দেয়া হয়। অগ্রিম টিকেট বিক্রি করতে কাউন্টারের লোকজনকে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পরিবহনকর্মী বাবুল জানান, ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ায় কাউন্টার খুলে বাসের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এখনো যাত্রীর দেখা নেই।
এদিকে, আজ সকাল থেকে সব আসনে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এ জন্য গতকালই রেলের বগি ও আসনগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। দুপুরে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশনের ১০টি কাউন্টারে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টারে কয়েকজন যাত্রী টিকেট সংগ্রহ করছেন। গতকাল ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ আগস্টের টিকেট দেয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, প্ল্যাটফর্মের ভেতরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ব্যস্ততা দেখা যায়। ধুয়েমুছে প্ল্যাটফর্ম পরিষ্কার করছেন একদল কর্মী। আরেক দল ব্যস্ত জীবাণুনাশক দিয়ে ট্রেনের ভেতর ও বাইরে পরিষ্কারে।
সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, বুধবার থেকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শতভাগ যাত্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ঢাকা থেকে ২৫ জোড়া আন্তঃনগর ও ১২ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। আর সারাদেশ থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ও ২০ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। তিনি বলেন, আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করব। ইতোমধ্যেই স্টেশন ধোয়ামোছার কাজ শেষ। সে সঙ্গে জীবাণুনাশক দিয়ে ট্রেনের ভেতর ও বাইরে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
কমলাপুর রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর পৌনে ৫টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশে বলাকা কমিউটার ট্রেন ছেড়ে যাবে। এর পর ভোর ৫টায় তুরাগ লোকাল, ৫টা ৪০ মিনিটে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ছেড়ে যাবে। প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন হিসেবে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে পারাবত এক্সপ্রেস ছেড়ে যাবে। এরপর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে নীলাসাগর এক্সপ্রেস, ৭টায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, সাড়ে ৭টায় তিস্তা লোকাল, পৌনে ৮টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে মহানগর প্রভাতী, সোয়া ৮টায় সুন্দরবন এক্সপ্রেস, সাড়ে ৮টায় মহুয়া কমিউটার, ৯টা ১০ মিনিটে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, পৌনে ১০টায় তিতাস কমিউটার, ১০টা ১০ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ও পৌনে ১১টায় কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীদের জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- মাক্স ছাড়া স্টেশন চত্ব্রে প্রবেশ ও ট্রেন ওঠা যাবে না। সব অগ্রিম টিকেট যাত্রার পাঁচদিন আগে ক্রয় করা যাবে। তবে অনলাইনে কেনা টিকেট ফেরত দেয়া যাবে না। কমিউটার ট্রেনের টিকেট যথারীতি নির্দিষ্ট বক্স কাউন্টার থেকে দেয়া হবে। আসনবিহীন টিকেট বিক্রি বন্ধ থাকবে। ট্রেনে ভ্রমনেচ্ছু যাত্রীদের নিজ নিজ টিকেট নিশ্চিত করেই কেবল ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। টিকেটবিহীন কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে গতকাল বিকাল থেকেই যাত্রী বোঝাই করে লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। লঞ্চে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী বহনের অনুমতি দেয়া হলেও দেখা গেছে, প্রতিটি লঞ্চই কানায় কানায় পূর্ণ। ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, স্বরূপকাঠি, ইলিশা, টরকি, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন রুট থেকে লঞ্চ ছাড়ে বলে আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এ সময় মাস্ক পরা, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাসহ কোনো স্বাস্থ্যবিধিরই বালাই ছিল না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়