শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

সালমা আক্তার মেয়র, মির্জাপুর পৌরসভা, টাঙ্গাইল > যুগোপযোগী পৌরসভা গঠনে সদা কাজ করে যাচ্ছি

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. জহিরুল ইসলাম, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম পৌরসভা মির্জাপুর পৌরসভা। দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার জন্মভূমি এ পৌরসভা। এ পৌর এলাকায় দেশের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতাল, ঐতিহ্যবাহী ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী ওইমেন্স মেডিকেল কলেজ, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল এন্ড কলেজ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ২০০০ সালে এ পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের ২০১৯ সালের ৩১ মে তারিখের ৮১১নং পরিপত্র অনুযায়ী মির্জাপুর পৌরসভাকে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে এ পৌরসভা গঠিত। এ পৌরসভার আয়তন ৮.৫৮ বর্গকিলোমিটার।
নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সালমা আক্তার। তিনি টাঙ্গাইল জেলার প্রথম নির্বাচিত নারী মেয়র। তার স্বামী প্রয়াত সাহাদত হোসেন সুমন ছিলেন এ পৌরসভার অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন মেয়র ও মির্জাপুর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা। সালমা আক্তার পৌরসভায় তার স্বামীর ব্যাপক উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আধুনিক ও যুগোপযোগী পৌরসভা গঠনে তিনি খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন। টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো. একাব্বর হোসেনের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি এ পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে মডেল ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
ভোরের কাগজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, করোনাকালীন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে পৌরবাসীকে উন্নত সেবা দিতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের সামাজিক বেষ্টনীর গৃহীত কর্মসূচি সফলতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে

যাওয়াসহ তার নির্বাচনকালীন প্রতিশ্রæতি, প্রয়াত স্বামীর অসমাপ্ত উন্নয়নমূলক কাজ ও জনগুরুত্বপূর্ণ কাজকে তিনি প্রাধান্য দিচ্ছেন।
মেয়র সালমা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তিনি কিশোর ক্রাইম, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ও যাবেন। নারী অধিকার, নারীর স্বাধীনতা ও নারী উন্নয়নে তিনি সদা তৎপর। নারী নির্যাতন বন্ধে ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছেন। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে নারীরা যাতে তাদের যোগ্য সম্মান পায় ও নির্যাতিত না হয় এ ব্যাপারে তিনি পৌর কাউন্সিলরদের সচেতন থাকতে বলেছেন।
তিনি জানান, পৌর এলাকাকে মাদকমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা ও অনুদান যাতে সঠিকজন পেতে পারেন তার জন্য সদা খোঁজখবর রাখছেন তিনি এবং ভবিষ্যতেও এ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ করোনা মহামারিতে তিনি তার এলাকার জনগণকে সদা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, স্বাস্থ্য উপকরণ বিতরণসহ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছেন। ডেঙ্গুতে যাতে কেউ আক্রান্ত না হন সেজন্য মশক নিধনসহ পৌরবাসীকে সচেতন করছেন বলেও তিনি জানান। টেন টাউন প্রকল্প ও এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে শহর উন্নয়ন ও শহর পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ আরো গতিশীল করছেন। পৌর এলাকা অন্ধকারমুক্ত রাখতে রাস্তায় সোলার বাতি (সৌর বিদ্যুৎ) স্থাপন করেছেন। পৌর কাউন্সিলদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে কার এলাকায় কী কী সমস্যা সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান ও তদারকি করছেন। তাছাড়া পৌরসভার কোনো ওয়ার্ডের প্রতি বিশেষ নজর না দিয়ে প্রত্যেক ওয়ার্ডে যাতে সমান দৃষ্টিতে কাজ করতে পারে এ ব্যাপারে তিনি সজাগ আছেন বলেন জানান এবং তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
শহরের ময়লা-আবর্জনা যাতে সঠিক জায়গায় ফেলা হয় এ ব্যাপারে তিনি পৌরবাসীকে উৎসাহিত করছেন এবং ভবিষ্যতে পৌর এলাকার নিত্যদিনের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য একটি ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার পরিকল্পনা আছে তার। জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তা সংস্কারের কাজ করছেন এবং পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ খালটি পুনরুদ্ধারসহ এর সংস্কার কাজ করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান। তিনি ভবিষ্যতে শিশু-কিশোরদের বিনোদন পার্ক নির্মাণ, সংস্কৃতি চর্চা করার জন্য সংস্কৃতি কেন্দ্র ও খেলাধুলার করার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি হাটবাজার উন্নয়ন, ফুটপাতে নির্বিঘেœ চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, দিনের বেলা ট্রাক মির্জাপুর বাজার এলাকায় ঢুকলে বেশ যানজটের সৃষ্টি হয়, এতে জনগণ খুবই ভোগান্তিতে পড়েন। এজন্য দিনের বেলা অর্থাৎ রাত ৮টার আগে যাতে মির্জাপুর বাজার এলাকায় কোনো ট্রাক না ঢুকতে পারে সে ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কসাইখানায় যাতে সুস্থ গরু-ছাগল জবাই করা হয় এবং পৌরবাসী যাতে স্বাস্থ্যসম্মত মাংস খেতে পারেন সেজন্য তিনি তদারকির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান।
জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন প্রকার সার্টিফিকেটের জন্য পৌরবাসীকে যাতে পৌরসভা কার্যালয়ে এসে ভোগান্তির শিকার না হতে হয় এজন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনাও আছে তার। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতির সঙ্গে মির্জাপুর পৌরসভার নাগরিকরা যাতে সেই সেবা থেকে পিছিয়ে না থাকে সেজন্য তিনি কাজ করছেন বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, তার প্রয়াত স্বামীর বিপুল জনপ্রিয়তা ও মানুষের ভালোবাসার কখনো অমর্যাদা হতে দেবেন না। বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। কাজেই জনগণের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও মমতা দিয়ে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী পৌরসভা গঠনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সর্বদা কাজ করে যাব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়