শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

শেরপুরে করোনার প্রভাব : সবজির ন্যায্যমূল্য না পেয়ে বিপাকে কৃষক

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম শেরপুর থেকে : করোনাকালীন বাজারে সবজির ন্যায্যমূল্য না থাকায় শত শত কৃষক বিপাকে পড়েছেন। স্বল্পমূল্যে সবজি বিক্রি করার পাশাপাশি অনেক কৃষকের সবজি খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শেরপুর জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়। তবে শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার চরাঞ্চলে সবজির আবাদ হয় বেশি। এছাড়া ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায়ও প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর গ্রীষ্মকালীন সময়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে রয়েছে করলা, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, লাউ, বেগুন, বরবটি ও কুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের সবজি উল্লেখযোগ্য। শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার চরাঞ্চলে এসব সবজির আবাদ করা হলেও শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় পাহাড়ি এলাকার বেশিরভাগ কৃষকরা বন বিভাগের জমিতে সবজির আবাদ করে থাকে। শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুরি ফরেস্ট রেঞ্জ এলাকায় বন বিভাগের শত শত একর পাহাড়ি জমিতে সবজির আবাদ করা হচ্ছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুরি, খাড়ামুড়া, মেঘাদল, কর্নঝোড়া, কাকিলাকুড়া, বাবেলাকুনা, হাড়িয়াকোনা, ডুমুরতলা, ঝুলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ও ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের রাংটিয়া, সন্ধ্যাকুড়া, গোমড়া, হলদীগ্রাম, ফাঁকড়াবাদ, ভারুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়। এখানে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। এবার গ্রীষ্মকালীন সময়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শেরপুর জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সীমান্তের পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন হাটে-বাজারে, পাড়া-মহল্লায় প্রতিদিন শত শত মণ সবজি বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানের সবজি ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাকালীন সময়ে পরিবহন সমস্যাসহ নানা কারণে সবজির বাজারে ধস নেমেছে। স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে সবজি। আবার অনেক সময় বাজারে পাইকার না থাকায় উত্তোলন করা সবজি খেতেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতি মণ চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা মণ দরে। এতে খেত থেকে উত্তোলন খরচও উঠছে না। পাইকার ফাঁকড়াবাদ গ্রামের শফিকুল, আব্দুস ছালাম, রফিকুল ইসলাম, সন্ধ্যাকুড়া গ্রামের কামরুস, মানিককুড়া গ্রামের জামালসহ আরো অনেকেই জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সবজির ব্যবসা করেন। ট্রাকযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজি নিয়ে তারা বিক্রি করে থাকেন। তাদের মতে, করোনাকালীন সময়ে ট্রাকে সবজি পরিবহন করতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক সময় ট্রাকও পাওয়া যায় না। আবার পাওয়া গেলেও ভাড়া দিতে হয় বেশি। এছাড়া বাজারে সবজির চাহিদাও কম। সবকিছু মিলে তাদের ব্যবসায় এখন মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। শেরপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপপরিচালক ড. মোহিদ কুমার দে এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অনুকূল পরিবেশ থাকায় গ্রীষ্মকালীন সময়ে সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে সবজির চাহিদা কম থাকায় কৃষকরা সবজির ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়