জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার থেকে : এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ৫৬টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেয়ার কার্যক্রম চালানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) শাহ্ রেজওয়ান হায়াত। তিনি জানান, আগামীকাল থেকে সরকারি উদ্যোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে। সে অনুযায়ী ক্যাম্পগুলোতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার থেকে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘গণটিকাদান কর্মসূচি’ শুরু করেছে সরকার। টিকাদানে শৃঙ্খলা আনতে বয়স ও অঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়ে কার্যক্রম চলছে। গণটিকাদান কর্মসূচি চলবে আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত। আগামীকাল থেকে প্রথম পর্যায়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছর ঊর্ধ্ব বয়সিদের টিকা দেয়া হবে। এ কার্যক্রমে সাড়ে ৪৮ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি টিকা সরবরাহ করেছে রোহিঙ্গাদের জন্য। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএইচসিআর ও ইউনিসেফসহ কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অন্য সহযৈাগিতা দিচ্ছে টিকা কার্যক্রম সফল করতে। অন্য কোনো আদেশ না হলে আগামীকাল থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ১০ থেকে ১২ আগস্ট ৩ দিন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল রোহিঙ্গাদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলেও ৩ দিনের বেশি টিকা প্রয়োগ করা হতে পারে। এতে ৪৮ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেয়া হবে। প্রত্যেককে সিনোফার্মার প্রথম ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা এম আর এইচ ভূঁইয়া জানান, টেকনাফ-উখিয়ার ৩৪টি ক্যাম্পের ৫৬টি কেন্দ্রে ৪৮ হাজার ৬০০ জন ৫৫ বছরের ঊর্ধ্ব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে এ ধাপে টিকা দেয়ার টার্গেট করা হয়েছে।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মো. সামছুদ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে যাতে টিকা গ্রহণের মনোভাব তৈরি হয় সেজন্য বেশ কিছু দিন ধরে সচেতনতা কার্যক্রম চালায় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প ইনচার্জসহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো। এতে করে করোনা ভ্যাকসিন দিতে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ জেলায় টিকা ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, কক্সবাজারে ২২৮টি টিকাদান কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সব সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।