শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য : ৮০ শতাংশ মানুষ আগের চেয়ে কম খাবার খাচ্ছেন

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অর্থনৈতিক উচ্ছ¡াসের নিচে কালো ছায়া খেলা করছে বলে মন্তব্য করলেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বিদায়ী অর্থবছরের তথ্যউপাত্ত এবং বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। জিডিপি অনুপাতে মাত্র ২১ শতাংশ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, যা গত পাঁচ বছরে সর্বনি¤œ। ছোট ও মাঝারি শিল্প খাত ভালো নেই। আয় ও মজুরি কমায় মানুষের ভোগ কমেছে। এর ফলে পিছিয়ে পড়া মানুষের সঙ্গে আরো মানুষ যুক্ত হওয়ার চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি ১ হাজার ৬০০ পরিবারের ওপর জরিপের ভিত্তিতে তিনি জানান, আমরা পরিষ্কার দেখতে পারছি ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ তাদের খাদ্যব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ তিন বেলার বদলে এক বেলা বা দুই বেলা খাচ্ছেন। শিশুখাদ্যও কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে ১০ শতাংশ মানুষ।
গতকাল রবিবার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ বাস্তবায়ন : পিছিয়ে পড়া মানুষেরা কীভাবে সুফল পাবে?’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন কোর গ্রুপের সদস্য ড. মুশতাক রাজা চৌধুরী, রাশেদা কে চৌধূরী, শাহীন আনাম, ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, কয়েক বছর ধরে আমাদের অর্থনীতির সব থেকে শক্তিশালী জায়গা ছিল বৈদেশিক খাত। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাসের উৎস বলছে এই বৈদেশিক খাতে এক ধরনের ভাঙন ধরেছে। রেমিট্যান্স খাতের যে জাদু, সেটা সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। কারণ মানুষ গেছে কম, এসেছে আগের চেয়ে বেশি। মুদ্রানীতির দুর্বলতা হিসেবে তিনি বলেন, মুদ্রানীতিতে ব্যক্তিখাতের ঋণের যে প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে, তার কাছে যেতে পারছে না। ব্যবসায়িক গোষ্ঠীসহ অনেকে বলেছিলেন- সুদের হার কমিয়ে দিলে বিনিয়োগ দ্রুত বাড়বে। এই তত্ত্ব যে সঠিক ছিল না, এটা আজকে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে। স্প্রেড ৪ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। এরপরও ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়ে গেছে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে অর্থনীতির উচ্ছ¡াসের নিচে যে কালো ছায়া আছে, সেটা হলে আমাদের ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ কোনোভাবেই আমরা বাড়াতে পারছি না। এ বছর যে হিসাবটি প্রাথমিকভাবে এসেছে, সেটা গত বছরের থেকে আরো ২-৩ শতাংশ কমে গেছে। এ সময় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রশংসা করেন ড. দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এখন পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তত্ত্ব দিয়েছে, তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সুস্থতা ফিরে এসেছে। বিবিএসের বিশ্বাসযোগ্যতা বেড়েছে।
অন্যদিকে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য সুলতানা কামাল বলেন, আশা করেছিলাম এবার পুনরুদ্ধারের বাজেট হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য তেমন কিছু নেই। কোভিড পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজাতে একটি স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য ও স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞ মুশতাক রাজা চৌধুরী।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, শিক্ষকদের টিকার আওতার আনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কত শতাংশ শিক্ষক টিকা পেলেন, তা তদারকিতে আনতে হবে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাজেটের অর্ধেক বরাদ্দ হলো সরকারি কেনাকাটা। সরকারি ক্রয় খাত রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। কোভিডের কারণে গরিব পরিবারের আয় কমেছে, তারা আরো গরিব হয়েছে বলে মনে করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, প্রবৃদ্ধির ধরন দেখলে বোঝা যায় বৈষম্য বাড়ছে। প্রবৃদ্ধিতে স্বল্প আয়ের মানুষের অংশগ্রহণ কমেছে। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ছোট ও মাঝারি শিল্প মাসের পর মাস পরিচালনায় নেই, যা কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়