শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

খুলনায় গ্রামজুড়ে মন্দির বাড়ি ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ১০

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা খুলনার রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পর ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকালে উপজেলার শিয়ালি গ্রামে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
রূপসা থানার ওসি সরদার মোশাররফ হোসেন বলছেন, এ ঘটনার পর শনিবার রাতেই ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১৫০-২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন হচ্ছে এফআইআর নামীয় আসামি এবং একজন হচ্ছে সন্দেহভাজন। তবে মামলাটিতে কাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং কাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না দেখে প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত শনিবার শিয়ালি গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা কীর্তন করতে করতে শিয়ালি মহাশ্মশান মন্দিরে যাওয়ার পথে পার্শ্ববর্তী মসজিদের সামনে কীর্তন বন্ধ করা নিয়ে ইমামের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের নজরে এলে গতকাল রবিবার স্থানীয়

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে উভয়পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্ররোচনায় পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর, বামনডাঙ্গা, শেখপুরা গ্রামের কয়েকশ’ লোক শনিবার বিকালে একযোগে হিন্দু অধ্যুষিত শিয়ালি গ্রামে অতর্কিত আক্রমণ করে গ্রামের সার্বজনীন দুর্গামন্দির, হরিমন্দির, মহাশ্মশান মন্দির ও গোবিন্দ মন্দিরের প্রতিমা এবং অনির্বাণ হীরার দোকান, প্রীতম মজুমদারের মেশিনারি দোকান, পরেশ মল্লিকের ওষুধের দোকান, শ্রীবাস মল্লিক ও সৌরভ মল্লিকের মুদি দোকান, বলাই মল্লিকের চায়ের দোকানসহ বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে খুলনার রূপসা উপজেলায়

সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার দাবি করেন। বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, লক্ষ্য করা যাচ্ছে- প্রশাসন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশে বারবারই সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। গ্রামটির হিন্দু অধিবাসীরা বলছেন, হামলকারীরা অন্তত ৪টি মন্দির এবং ভেতরে থাকা প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। প্রশাসন থেকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।
রূপসার ইউএনও রুবাইয়া তাছনিম বলেছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মসজিদে নামাজ চলার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা ‘গান-বাজনা’ করছিলেন অভিযোগে দুপক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয় যেটাকে তারা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে বর্ণনা করছেন। ওই দ্ব›েদ্বর সমাধান সেদিনই হয়ে গিয়েছিল এবং ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে শনিবারের হামলার সম্পর্ক নেই। ইউএনও বলেন, শুক্রবারের ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আমরা জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই এবং স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করে দ্ব›েদ্বর মীমাংসা করে দেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়