শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

অবশেষে হেফাজত আমির বাবুনগরী টিকা নিলেন

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ সংগঠনের অন্য নেতারা। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে একের পর এক উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে জনগণকে টিকা নিতে নিরুৎসাহিত ও মাস্ক পরতে নিষেধ করেন তারা। ধীরে ধীরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে এখন টিকা নিতে শুরু করেছেন অনেক ধর্মীয় নেতা। ‘কওমি মাদ্রাসায় কখনো করোনা আসবে না’- এমন কথা একাধিকবার বলে আসছিলেন হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। এবার তিনিও টিকা গ্রহণ করেছেন। গতকাল রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে সিনোফার্মের টিকা নেন তিনি। গাড়িতে করে টিকাকেন্দ্রে যাওয়া সত্তরোর্ধ্ব বাবুনগরী টিকা নেন গাড়িতে বসেই।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন বলেন, বাবুনগরী দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে টিকা নেন। নেতাকর্মীদের ভিড় থাকায় তিনি গাড়িতে বসেই টিকা নেন। গত ১৪ জুলাই বাবুনগরী টিকার জন্য নিবন্ধন করেন। তাকে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা দেয়া হয়েছে। পরে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলেম সমাজের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার বিষয়ে অমূলক ভীতি ও দ্বিধা বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু এটি একটি সংক্রামক ভাইরাস। বিষয়টি নিয়ে ভীত হওয়া যাবে না। এই মহামারি থেকে রক্ষায় এবং সবার ভীতি দূর করতেই হেফাজতের আমির ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিভিন্ন আলোচনায় তিনি দাবি করেছিলেন মাদ্রাসায় করোনা আসবে না। গত ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় এক ব্রিফিংয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, যেখানে কুরআন-হাদিস পাঠ করা হয়, যেখানে হেফজখানায় ছাত্ররা কুরআন পাঠ করে, সেখানে করোনা আসবে না। তার কারণ হলো আল্লাহর রহমত। এছাড়া গত ৩০ জুলাই এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সবার প্রধান কর্তব্য হচ্ছে, সব প্রকার অন্যায়, জুলুম ও পাপাচার থেকে বিরত হয়ে ভবিষ্যতে আর কখনো এসব না করার সংকল্প নিয়ে তওবা করে আল্লাহমুখী হয়ে যাওয়া। করোনা থেকে দূরে থাকতে হলে কী করতে হবে, তার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বেশি বেশি তওবা, ইসতিগফার, নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে থাকতে হবে। একমাত্র আল্লাহর দয়া, রহমত ও ইচ্ছা ছাড়া মহামারির এই দুর্যোগ কেউ রোধ করতে পারবে না।’
কেবল বাবুনগরী নন, উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ও বিতর্কিত হয়েছেন অনেক ধর্মীয় নেতা। মুফতি কাজী ইব্রাহীম করোনাকে ‘আল্লাহর সৈনিক’, তাদের বিশ্বে পাঠানো হয়েছে অমুসলিম ও ‘ইসলামবিদ্বেষীদের শায়েস্তা করতে’, ঠিকমতো নামাজ-রোজা করলে মুসলমানদের করোনা হবে না, এ ধরনের বক্তব্য ক্রমাগত দিয়ে এসেছেন তারা। গত বছরের মার্চে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের একটি মাহফিলে যোগ দিয়ে আজহারিও করোনা থেকে বাঁচতে একটি নির্দিষ্ট দোয়া করতে নিজের ফেসবুকে পরামর্শ দেন। তবে এক বছর পর সেই মালয়েশিয়া যখন করোনায় জর্জরিত, হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঠাঁই হচ্ছে না, অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশে টিকা নেয়ার বিষয়ে স্ট্যাটাস দেন আজহারি।
জামায়াতপন্থি ধর্মীয় বক্তা তারেক মনোয়ার একাধিক ওয়াজে মাস্ক না পরার কথা বলেছেন বারবার। বলেছেন, একটি দোয়া করে ঘর থেকে বের হলেই করোনা হবে না কারো। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া আমির হামজা আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত ঠিকমতো নামাজ পড়লে, রোজা রাখলে কারো করোনা হবে না। এ বিষয়ে একটি চ্যালেঞ্জও দেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় টিকা নিয়ে উল্টা-পাল্টা কথা বলা বিএনপি নেতারাও টিকা নিয়েছেন। সবার আগে নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তারপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও টিকা গ্রহণ করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়