পরীমনরি ঘনষ্ঠি কে এই কবীর

আগের সংবাদ

তালিকায় হাইপ্রোফাইলদের নাম

পরের সংবাদ

দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত মডেল পৌরসভা করতে চাই : মো. মতিউর রহমান খান মেয়র, রহনপুর পৌরসভা

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবদুস সালাম তালুকদার, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অন্যতম সমৃদ্ধ উপজেলা গোমস্তাপুর। নাচোল, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর এই তিন উপজেলার রাজধানী বলেখ্যাত রহনপুর পৌরসভা। ৫নং রহনপুর ইউনিয়নের আশপাশের অংশ নিয়ে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রহনপুর পৌরসভা। ১৮.৫২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই রহনপুর পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার ৮৪৫ জন। সময়ের পরিক্রমায় ২০১৩ সালে এই পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হলেও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সেভাবে জোটেনি পৌরবাসীর ভাগ্যে। ফলে দুর্ভোগ পৌরবাসীকে নীরবে সয়ে যেতে হয়েছে। একাধিকবার জনপ্রতিবাদ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং পত্রপত্রিকায় সমস্যার ফিরিস্তি প্রকাশ পেলেও সংশ্লিষ্টদের কাছে তা গুরুত্বহীন হয়ে থাকে। ফলে এই শহরে বসবাসরত সুবিধাহীন নাগরিকদের প্রতিনিয়ত নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই পৌরসভায় নেই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ-পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। তাই একটু বৃষ্টি হলেই শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। এদিকে রয়েছে শহরে তীব্র যানজট, অটোভ্যান ও ভ্যানগাড়ির দখলে শহরের রাস্তাগুলো। অন্যদিকে গড়ে ওঠেনি কোনো বিনোদন স্পট, শিশুদের জন্য নেই তেমন কোনো আনন্দদায়ক স্থান।
এসব নানা সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয় গত ৩০ জানুয়ারি, ২০২১ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চামচ প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র সাবেক যুবলীগ নেতা মো. মতিউর রহমান খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২৬ বছর আগে রহনপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও আজো কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে রাস্তাঘাট, সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও সড়কবাতির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বেশির ভাগ এলাকায় রাস্তায় কোনো বাতি ছিল না। আমি এই ৭ মাসে সড়ক বাতির ৯৫ শতাংশ কাজ করেছি। যাতে পৌর শহর আলোকিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমার মূললক্ষ্য পৌরসভার যানজট দূরীকরণ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতকরণ। যা পৌরসভার ২৬ বছরেও কেউ করেনি। আমি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে আবেদন করেছি তাদের আওতার সড়কগুলো প্রশস্ত করার জন্য। সুপেয় পানির

ব্যবস্থা আগে ছিল ৭০ শতাংশ, আমি তা ৯৫ শতাংশে নিয়ে এসেছি। আগামী অর্থবছরে ১০০ শতাংশ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করব।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি গরুর হাট ছিল। শহরে যানজট নিরসনের জন্য এই হাটটি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে গেছি। আশা করি, সড়ক ও জনপথের রাস্তাগুলো দ্রুত প্রশস্তকরণ করে শহরের যানজট নিরসন করতে সক্ষম হবো।
মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়তে তিনি তরুণদের মাঝে খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ করেই চলেছেন। তিনি জানান, রহনপুর পৌরসভা সীমান্ত এলাকায়। তাই এখানে মাদকের ছড়াছড়ি বেশি। আমি বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে ও খেলাধুলার সামগ্রী দিয়ে মাদকমুক্ত তরুণ সমাজ গড়তে কাজ করে যাচ্ছি।
পৌরসভায় গরীব ও দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশ। আমি চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে পাওয়া উপহার সামগ্রীসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী তাদের মাঝে পৌঁছে দিই। এছাড়াও আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিভিন্ন মহামারিতে সাধ্যমতো সহায়তা আগেও ছিল এখনো অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া আগামীতে পৌর এলাকার গরীব, অসহায়, দুস্থ মানুষ এবং পৌর এলাকায় জায়গা আছে ঘর নেই এমন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা নির্ধারণ করে তাদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য সরকারি প্রকল্প ছাড়াও পৌরসভার নিজস্ব আয় থেকে একটি অংশ বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতোমধ্যে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা ১০০ শতাংশ করার নিমিত্তে পৌর এলাকায় মাইকিং চালাচ্ছি, অল্প কিছু দিনের মধ্যে তা পূর্ণ করতে সক্ষম হবো।
পৌর নাগরিকদের জন্য নাগরিক সনদপত্র ও প্রত্যয়নপত্র উন্মক্ত করে রেখেছি। যে কোনো নাগরিক যখন প্রয়োজন তখন তা গ্রহণ করতে পারবে। কোনো নাগরিককে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
মেয়র আরো জানান, পৌর এলাকার উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে পৌরবাসীর উৎসাহ ও ভালোবাসা পেয়েছি। রহনপুর পৌরসভাকে জলবদ্ধতা, যানজট, বায়ুদূষণ, মশামুক্তকরণ, ডিজিটাল, জবাবদিহিতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতকরণ এবং জনগণের স্বার্থসংরক্ষণ ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতের প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেন তিনি।
পরিশেষে মেয়র মো. মতিউর রহমান খান বলেন, মূলত আমি পৌর অভিভাবক বা পৌরপিতা হিসেবে নয়- নিজেকে পৌরবাসীর একজন সেবক হিসেবে মনে করে রহনপুর পৌরসভাকে একটি আধুনিক,পরিচ্ছন্ন ও মাদকমুক্ত নান্দনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য দলমতনির্বিশেষে সব নাগরিকের পরামর্শ ও আন্তরিক সহযোগিতা চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়