জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় : দুই অধ্যাপক পদে প্রার্থী একজন তবুও নিয়োগের আয়োজন

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দুটি শূন্যপদে অধ্যাপক পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে প্রার্থী মাত্র একজন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় নিয়োগ-বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নয়। তবু শুধু বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেয়ার জন্য নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অধ্যাপক পদে (গ্রেড-৩) নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এক শিক্ষক। প্রভাষক পদে নিয়োগের সময় ওই শিক্ষকের কাম্য যোগ্যতা ছিল না। তবু সে সময় ড. আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ) প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এখন অধ্যাপক পদে বাংলা বিভাগে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন তিনি।
অভিযোগ আছে, অধ্যাপক পদে আবেদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন (অগ্রায়ন) না থাকলেও তাকে নিয়োগ দেয়ার জন্য কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে আগামীকাল রবিবার সিলেকশন বোর্ডের আয়োজন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শিক্ষা জীবনের সর্বস্তরে দ্বিতীয় শ্রেণি পাওয়া এই শিক্ষক বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গ করে ২০০৯ সালে প্রভাষক হিসেবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি বেরোবির বাংলা বিভাগে দুজন স্থায়ী অধ্যাপক (গ্রেড-৩) নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যেখানে আবেদনের শেষ তারিখ ছিল গত ২ ফেব্রুয়ারি। রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র জানায়, ওই বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ড. তুহিন ওয়াদুদ একক প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন। তবে দুটি পদের বিপরীতে একজন প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার নিয়ম নেই। সূত্র আরো জানায়, অধ্যাপক পদে আবেদন করার সময় ওই প্রার্থীকে অনমুতি (অগ্রায়ন) দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই হিসেবে তার আবেদনপত্রটিও বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সবকিছুকে উপেক্ষা করে তাকে নিয়োগ দেয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, আগামী ১১ আগস্ট বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ শূন্য হতে যাচ্ছে। ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়ার জন্যই এভাবে তাকে নিয়োগের আয়োজন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব.) আবু হেনা মুস্তাফা কামালকে (০১৭৫৮ ৪৭৩ ০৪৭) ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে অধ্যাপকের দুটি শূন্যপদের বিপরীতে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে ড. তুহিন ওয়াদুদের সিলেকশন বোর্ড আগামী ৮ আগস্ট রবিবার অনুষ্ঠিত হবে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে

নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখার এক কর্মকর্তা। আবেদনের সময় ড. তুহিন ওয়াদুদকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অগ্রায়ন ও অভিজ্ঞতার সনদ দেয়নি বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
মাত্র একজন প্রার্থী নিয়ে সিলেকশন বোর্ড আয়োজন করার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসীবুর রশিদ গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, সব নিয়ম মেনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অভ্যন্তরীণ নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করা হবে। মাত্র একজন প্রার্থী নিয়ে কীভাবে নিয়োগ বোর্ড হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাতে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের কোনো ব্যত্যয় হবে না এবং সিলেকশন বোর্ড ঠিক মনে করলে তাকে নিয়োগও দিতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে ২০০৯ সালের মার্চ মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গ করে বেরোবিতে প্রভাষক হিসেবে ড. তুহিন ওয়াদুদকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগও আছে। ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ওই বছরের নভেম্বর মাসে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। যেখানে আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২০০৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী প্রভাষক পদে আবেদনের যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল শিক্ষাজীবনে সর্বস্তরে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি অথবা সিজিপিএ ৩ দশমিক ৫ থাকতে হবে। তবে পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা থাকলেও একাডেমিক ফলাফলের শর্ত শিথিলের বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। অথচ ড. আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ) তার শিক্ষা জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই প্রথম শ্রেণি পাননি। তার আবেদনপত্রে দেখা যায়, তিনি ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে দাখিল ও আলিম পাস করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা বিভাগে ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ¯œাতক (সম্মান) ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এমন একাডেমিক ফলাফল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও এ বিষয়ে কেউ এতদিন মুখ খোলেনি। বরং বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা রাখায় তাকে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক এবং পরে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়েছে বিভিন্ন প্রশাসন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা প্রজাতির গাছ লাগিয়ে ব্যক্তিগত দাবি করে বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। এমনকি প্রতিষ্ঠানের এসব গাছ দেখিয়ে ব্যক্তিগত পুরস্কার অর্জনের জন্য বিভিন্ন সংস্থায় আবেদন করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়