জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

প্রয়াণ দিবসে কবিগুরুকে স্মরণ : সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রবীন্দ্রনাথ চিরপ্রেরণার উৎস

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গতকাল ২২ শ্রাবণ ছিল কবিগুরুর ৮০তম প্রয়াণ দিবস। আলোচনা, গান, কবিতা ও নৃত্যে প্রয়াণ দিবসে কবিগুরকে স্মরণ করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। করোনা সংক্রমণের কারণে সীমিত পরিসরে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসের এবারের আয়োজন। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি, ছায়ানট ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী পৃথক পৃথক আয়োজনে স্মরণ করেছে কবিকে।
বাংলা একাডেমি : গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির কবিগুরু স্মরণের আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে ‘পূর্ববঙ্গ থেকে বাংলাদেশ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল এবং অধ্যাপক অনীক মাহমুদ। ‘আমারে তুমি অশেষ করেছ’ শীর্ষক রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অদিতি মহসিন এবং রবীন্দ্রকবিতা ‘অনুগ্রহ’-এর আবৃত্তি করেন রুবীনা আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
কে এম খালিদ বলেন, আগস্ট বাঙালির শোকের মাস। এই মাসে আমরা রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলকে হারিয়েছি। হারিয়েছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বৈশ্বিক পরিসরেও আমরা দেখি ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা এবং ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার ভয়াবহ বিস্ফোরণের ইতিহাস। তিনি বলেন, শোককে শক্তিতে রূপান্তরের দীক্ষা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু সব সময় রবীন্দ্র সাহিত্যে মুক্তির দিশা খুঁজে পেয়েছেন এবং সেই মুক্তিমন্ত্রকে জাতির মুক্তির সংগ্রামে কাজে লাগিয়েছেন।
সেলিনা হোসেন বলেন, পূর্ববঙ্গ থেকে বাংলাদেশ দুজন মহান মানুষের সামনে ছিল স্বপ্নের ভূমি। তারা পূর্ববঙ্গ আলোকিত করে নিজেদের প্রজ্ঞা ও জ্ঞান ছড়িয়েছেন বাঙালির মানব সচেতনতায়। উপহার দিয়েছেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাঙালির জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্বে। ১৯১৩ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে। এভাবে এই দুজনের মাধ্যমেই মূলত বাংলা-বাঙালির দিগদর্শন ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের মানচিত্রে।
জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীতে পাকিস্তানি শাসকচক্রের চরম বৈরিতার মধ্যেও আমরা বাঙালিত্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করেছি। আমাদের এ সংগ্রামে প্রেরণা ছিলেন

বঙ্গবন্ধু। কারণ তিনি রবীন্দ্রনাথকে তার জীবনচেতনার সঙ্গী করেছেন আর রবীন্দভুবন ক্রমশ আমাদের জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে আলোকবর্তিকা হয়ে কাজ করেছে। তাই আজো একটি মাঙ্গলিক সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্গবন্ধু আমাদের চিরপ্রেরণার অনন্ত উৎস। অনুষ্ঠানটি বাংলা একাডেমির ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ছায়ানট : গানে গানে রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। বিকালে অনলাইনের এই আসর সাজানো হয় কবিগুরুর বিভিন্ন পর্বের গান দিয়ে। তবে বর্ষার গানই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। আয়োজনের শুরুতেই মাকছুরা আখতার অন্তরা পরিবেশন করেন শ্রাবণ দিনের গান ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল’। এরপর মন মোর মেঘের সঙ্গী গেয়ে শোনান সৈকত মুখার্জি । ধারাবাহিক পরিবেশনায় একের পর কবিগুরুর গান নিয়ে মঞ্চে আসেন শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে সাজিয়া হোসেন প্রৈতী পরিবেশন করেন ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা, বিক্রম দাস গেয়ে শোনান ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে, অসীম দত্তের কণ্ঠে গীত হয় ‘আমার প্রিয়ার ছায়া, সাদিয়া সুলতানা দীনা পরিবেশন করেন ‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে, আবদুস সাত্তার পিনু গেয়ে শোনান’ শ্রাবণের পবনে আকুল বিষন্ন সন্ধ্যায়, অভয়া দত্তের কণ্ঠে গীত হয় ‘আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে, এ টি এম জাহাঙ্গীর পরিবেশন করেন ‘সঘন গহন রাত্রি ঝরিছে শ্রাবণধারা, মহুয়া মঞ্জরী সুনন্দা গেয়ে শোনান ‘যেতে দাও যেতে দাও গেল যারা, সুকান্ত চক্রবর্তীর কণ্ঠে গীত হয় ‘আমি তখন ছিলেম মগন গহন ইত্যদি। আসরে শান্তিনিকেতন প্রবন্ধের অংশ থেকে পাঠ করেন জয়ন্ত রায়। সোনার তরী কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন হাসান আরিফ। ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন এলভিস মোস্তফা, ফুলেশ্বরী পারমিতা পুষ্প নোশিন আনজুম ও দীপান্বিতা আনজুম এবং যায় দিন, শ্রাবণদিন যায় গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন রিতু পাল ও সুপর্ণা লিমা। গান, কবিতা ও নৃত্যে অনলাইনে আয়োজনে অনন্য হয়ে উঠে কবিগুরু।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়