জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

গবেষণা তথ্য : চট্টগ্রামে ৯৩ শতাংশ রোগীর দেহে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে করোনায় সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশের শরীরে ডেলটা ধরন পাওয়া গেছে। গত এক মাসে চট্টগ্রামের ৩০ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছেন এক দল গবেষক। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) নয়জন গবেষকের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক গবেষণায় গত ১ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে চট্টগ্রামে ২১ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে করোনায় সংক্রমিত ৩০ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী। রোগীদের মধ্যে অর্ধেক গ্রামের, বাকি অর্ধেক শহরের বাসিন্দা। ৩০টি নমুনার মধ্যে ২৮টিতেই ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, ৯৩.৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংক্রমণ এখন ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা হচ্ছে। বাকি দুটি নমুনার মধ্যে ১টিতে আলফা ভ্যারিয়েন্ট (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট) এবং অন্যটিতে লিনিয়েজ (চীনের উহানে শনাক্ত) ভ্যারিয়েন্ট। উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যায় হাটহজারীতে। গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রামে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও সমান দাপটে করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ চলছে। গবেষক ও চিকিৎসকরা বলছেন, ডেলটায় সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে তরুণ, যুবক, প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ সব বয়সিরাই আছেন। করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণে রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। পাশাপাশি মৃত্যুর হারও বাড়ছে। মানুষের মধ্যে করোনার স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা সংক্রমণ বিস্তারে ভূমিকা রাখছে।
সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি হয়। গবেষণা সহযোগিতায় ছিল পোলট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার। মুখ্য গবেষক ছিলেন অধ্যাপক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস। এছাড়া সিভাসুর অধ্যাপক শারমিন চৌধুরী, চিকিৎসক ইফতখোর আহমেদ, ত্রিদিব দাশ, প্রনেশ দত্ত, মো. সিরাজুল ইসলাম ও তানভীর আহমদ নিজামী গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। গবেষকরা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করেন। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) পরীক্ষাগারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. সেলিম খান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোরশেদ হাসান সরকার গবেষণায় জিনোম সিকোয়েন্সে সহযোগিতা করেন।
গতকাল শুক্রবার সিভাসুর উপচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, এর আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলফা বা ইউরো ভ্যারিয়েন্ট ও বিটা বা সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি থাকলে এবার তা ৯৩ ভাগই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। ডেলটা অতি উচ্চ সংক্রমণশীল ধরন। এই ধরনের উৎস ভারত। বাংলাদেশে প্রথমে সীমান্তবর্তী জেলায় ডেলটার সংক্রমণ হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই মাস থেকে মূলত ডেলটা ধরন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এখন দেশে ধরনটির দাপট চলছে। প্রতিনিয়ত সংক্রমণ বাড়ছে। করোনার বিধিনিষেধ না মেনে বাইরে ঘোরাঘুরি করা, উৎসব ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংক্রমণ বেশি ঘটছে।
প্রসঙ্গত গত জুন মাসে পরিচালিত এক গবেষণায় চট্টগ্রামে মাত্র দুই ভাগ ভারতীয় ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল। দুই মাসের মধ্যেই তা প্রায় শতভাগের কাছাকাছি চলে যায়। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে জুলাই মাসে মারা গেছেন ২৬১ জন, যা অতীতের যে কোনো মাসের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। পাশাপাশি জুলাই মাসে চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ২৩ হাজারের বেশি। এই সংখ্যা আগের যে কোনো মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ছয় দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন ৭৪ জন। শনাক্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৭০১ জন। আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলফা ধরন (যুক্তরাজ্য) ও বিটা ধরনের (দক্ষিণ আফ্রিকা) প্রাধান্য ছিল। এখন ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের কারণে করোনা শনাক্তের হার ও রোগী মৃত্যুও সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়