জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

অর্থাভাবে ১৫ বছর ধরে রশিতে বাঁধা ভারসাম্যহীন যুবক

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : ১৫ বছর ধরে রশিতে বাঁধা জীবন চলছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক আব্দুল হান্নানের। অর্থ সংকটের কারণে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য বিত্তশালী ও সরকারি সহায়তার দাবি পরিবারের। আব্দুল হান্নান দুর্গাপুর উপজেলার চণ্ডীগড় ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল সালামের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক আব্দুল সালামের বসতভিটার একপাশে একটি ছোট মাটির ঘরে বসবাস করছে আব্দুল হান্নান। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে নানা রকম ভয়ংকর আচরণ করায় পরিবারের লোকজন নিরুপায় হয়ে আব্দুল হান্নানের একটি পা রশি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। আব্দুল হান্নানের মা মোছা. মোমেনা খাতুন ছেলের খাওয়ানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করেন দিনরাত। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করালেও বর্তমানে আর্থিক সংকটের কারণে ছেলের চিকিৎসা করানো পরিবারের সম্ভব হচ্ছে না। কৃষক আব্দুল সালামের রয়েছে শুধু ১৪ শতাংশের বসতভিটা। এই পরিবারটি আজো কোনো সরকারি সহায়তা পায়নি।
জানা যায়, কৃষক আব্দুল সালামের চার ছেলের ভিতর তৃতীয় ছিল সে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করার পর পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সে এলাকার রং মিস্ত্রির সঙ্গে রং করার কাজ শিখতে থাকে। আব্দুল হান্নান ১৫ বছর বয়সে ২০০৭ সালে ঢাকার সি আর এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের রঙের কাজ করতে যায় আব্দুল হান্নান। সেখানে বিল্ডিংয়ে রং করার সময় একতলা থেকে পড়ে যায় মাটিতে। এ সময় সে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পায়। এরপর থেকে সে মানসিক ভারসাম্য হারায়। অনেক জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে আব্দুল হান্নানের অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরিবারের আর্থিক সমস্যার আজো কেন উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেনি আব্দুল হান্নানকে তার পরিবার। ডাক্তাররা বলেন আব্দুল হান্নানকে উন্নত চিকিৎসা করানো হলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আব্দুল হান্নানের বাবা আব্দুল সালাম জানান, আমি অপরের জমিতে কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। যে জায়গায় আমার সংসার চালাতে কষ্ট হয় সেখানে আমি ছেলের উন্নত চিকিৎসা কীভাবে করাব। অনেক কষ্ট করে তিন মেয়ে ও চার ছেলের মধ্যে দুজনকে বিয়ে দিয়েছি। ছেলেরা কাজ করে কোনো রকম তাদের সংসার চালায়। আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানায়।
আব্দুল হান্নানের মাতা মোছা. মোমেনা খাতুন বলেন, ১৫ বছর ধরে ছেলেটাকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। সব সময় তার প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। যখন আমি দুনিয়া থেকে বিদায় নিব তখন আমার এ হতভাগা ছেলেটার দেখাশুনা কে করবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান জানান, স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে হান্নানের জীবন কাহিনীটি শুনে সরেজমিনে হান্নানের বাড়িতে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে হান্নানকে নগদ আর্থিক সহায়তা ও তার থাকার ঘরটি মেরামতের জন্য টিন বিতরণ করি। সব ধরনের সরকারি সহযোগিতা তাকে করা হবে বলে ইউএনও জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়