ডিএনসিসি মেয়র আতিক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন করতে পারছি না

আগের সংবাদ

বেহাল রেলের মেগা প্রকল্প : খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানে না

পরের সংবাদ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব : প্রত্যাবাসন পথে হাঁটা ছাড়া বিকল্প নেই

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেয়ার বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে সরকার তাদের জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ বিষয়টি জানিয়েছেন, সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন যে, বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে চাপে রাখতে পারে। এর আগেও বাংলাদেশের ওপর রোহিঙ্গা ইস্যুতে নানা ধরনের চাপ এসেছে। সরকার বিচক্ষণকতার সঙ্গে মোকাবিলা করছে। সরকারকে তার অবস্থানে দৃঢ় থাকতে হবে। প্রত্যাবাসনের পথেই হাঁটতে হবে। এছাড়া বিকল্প কিছু আমাদের সামনে খোলা নেই। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে আইসিজেতে মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। হেগের পিস প্যালেসে এ মামলার ওপর প্রাথমিক শুনানি হয়। কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চললেও এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আদেশ দেন। এই আদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল, অন্তর্র্বর্তী আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে আদালতকে মিয়ানমারের জানাতে হবে। এরপর আইসিজেতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ৬ মাস পরপর আদালতে অন্তর্র্বর্তী আদেশ পালনের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। মিয়ানমার এ বিষয়ে কোনো প্রকার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কি না আমাদের জানা নেই। আমরা আশা করেছিলাম, আইসিজের আদেশ নিঃসন্দেহে মিয়ানমারের ওপর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে বড় ধরনের চাপ তৈরি করবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বর্তমানে বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রিত। তাদের প্রতি সমবেদনা এবং মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি সংহতি এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের তাগিদ জানিয়ে আসছে বিশ্ব সম্প্রদায়। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। দুই দফা সময় দিয়েও তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে টালবাহানা শুরু করে। বিশ্বব্যাংক নতুন করে ইস্যু দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কাছে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রস্তাবিত ‘রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্ক’টি মতামতের জন্য পাঠায়। ওই বৈশ্বিক ফ্রেমওয়ার্কের তিনটি উদ্দেশ্য হচ্ছে- ১. উদ্বাস্তু ও হোস্ট কমিউনিটির জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা, ২. উদ্বাস্তুরা যে দেশে অবস্থান করছে সেই সমাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া অথবা তাদের ফেরত পাঠানো এবং ৩. দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যাতে করে নতুন উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়া সম্ভব হয়। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাসহ সব উদ্বাস্তুর বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আমরা মনে করি, এ অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, স্থিতি এবং নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুর রাজনৈতিক সমাধান অপরিহার্য। প্রত্যাবাসন না হওয়ায় মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে আঞ্চলিক সংকটও। রোহিঙ্গাদের কারণে নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। তাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করার কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের ওপর জোরালো চাপ রাখতে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়