ডিএনসিসি মেয়র আতিক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন করতে পারছি না

আগের সংবাদ

বেহাল রেলের মেগা প্রকল্প : খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানে না

পরের সংবাদ

চক্রের চারজন গ্রেপ্তার : উচ্চ বেতনের প্রলোভনে দুবাইয়ে নারী পাচার

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে দুবাইয়ে নারী পাচারকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলো- শামীমা আক্তার, শংকর বিশ্বাস, শেখ হানিফ মিয়া ও জুয়েল হোসাইন। গত সোমবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরা, কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ থেকে নারী পাচারকারী চক্রের এই চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে চক্রের মূলহোতা রয়েছে দুবাইয়ে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনতেও কাজ করছে র‌্যাব।
গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এক ভিক্টিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার শামীমা আক্তার ভিক্টিমের বান্ধবী। শামীমার সঙ্গে দুবাইপ্রবাসী অপুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব ছিল। অপু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে বেড়াতে এলে ভিক্টিম সুমাইয়া (ছদ্মনাম) ও শামীমার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা করে। অপু তখন ভিক্টিমকে দুবাই শপিংমলে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখান। অপুর প্রস্তাবে সুমাইয়া রাজি হলে অপু ভিক্টিমকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। এই কর্মকর্তা বলেন, শামীমা গোপনে সুমাইয়ার পাসপোর্ট তৈরি করে দেন। এরপর অপু নারী পাচার চক্রের মূলহোতা দুবাইপ্রবাসী কামাল হোসাইনের (৩৮) মোবাইল নম্বর ভিক্টিম সুমাইয়াকে দেন। কামাল সুমাইয়াকে রাজধানীর পল্টন মেসার্স মেহরাব এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্টের টিকেট ম্যানেজার গ্রেপ্তারকৃত শেখ হানিফ মিয়ার (২৮) কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে বলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার জুয়েল হোসাইন দুবাইপ্রবাসী। তিনি শেখ হানিফ মিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুবাইপ্রবাসী চক্রের মূলহোতা কামাল জুয়েলেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঘটনার সময় জুয়েল দুবাই ছিলেন। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। কামাল দুবাই থেকে জুয়েলের মাধ্যমে সুমাইয়ার দুবাই যাওয়ার খরচ বাবদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হানিফের কাছে পাঠান। হানিফ ও তার কর্মচারী গ্রেপ্তার শংকর সুমাইয়ার তিন মাস মেয়াদি দুবাইয়ের ট্যুরিস্ট ভিসা এবং বিমানের টিকেট করে দেন।
এরপর কামাল সুমাইয়াকে জানান, তার ভিসা ও টিকেট তৈরি হয়ে গেছে এবং ২৮ এপ্রিল দুপুরে হানিফের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ভিক্টিম তার মা ও বোনকে কিছু না জানিয়ে গত ৩০ এপ্রিল রাতে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা করেন। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছলে কামাল

সুমাইয়াকে তার বাসায় নিয়ে যান এবং তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন। এরপর কামাল ভিক্টিমকে জোড়পূর্বক অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন।
র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ওই কাজে সুমাইয়া রাজি না হলে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে। ভিক্টিম শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মায়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানান। এরপর সুমাইয়ার মা র‌্যাব-৩-এ তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ জানান। ভিক্টিম জানান, ওই চক্রের মূলহোতা কামাল ২২ বছর ধরে দুবাইয়ে বসবাস করেন।
বীণা রানী দাস আরো বলেন, অপু প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তাদের উচ্চ বেতনে দুবাইয়ে চাকরির প্রলোভন দেখান। ওই প্রলোভনে রাজি হলে কামাল নিজ খরচে বিভিন্ন মেয়েদের ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন। বর্তমানে সুমাইয়ার সঙ্গে তার মা যোগাযোগ করতে পারছেন না। গ্রেপ্তারকৃতদের নামে পল্টন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়