শিগগিরই প্রয়োগ শুরু : আরো ৭ লাখ ৮১ হাজার টিকা এলো জাপান থেকে

আগের সংবাদ

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিবিদ্ধ ২ : সশস্ত্র আরসা ও আরএসও আধিপত্যের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

পরের সংবাদ

লকডাউনের কারণে অনেকেই কর্মহীন : আড়িয়াল বিলে শাপলা তুলে সংসার চলে শত পরিবারের

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অধীর রাজবংশী, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) থেকে : একদিকে মহামারি করোনা সংক্রমণের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে করোনা রোধে চলছে কঠোর লকডাউন। করোনার সার্বিক পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন নি¤œ আয়ের পরিবারগুলো। অনেকেই জীবিকার তাগিদে জীবনযুদ্ধে বিকল্প উপার্জনের মাধ্যম বের করে নিচ্ছেন। এর মধ্যে বিনা পুঁজিতে দিনের কয়েক ঘণ্টা শাপলা কুড়িয়ে প্রায় শতাধিক পরিবারের আয়ের উৎস তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে এমনটাই লক্ষ করা গেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিল এলাকার গাদিঘাট ও হাঁসাড়ার আলমপুরে। শাপলা কুড়িয়ে দৈনিক একেক জনের কামাই হচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।
সরজমিনে দেখা গেছে, বিলজুড়ে শাপলার সমাহার। বিস্তীর্ণ বিল থেকে ছোট ছোট কোষা নৌকা বোঝাই করে এসব শাপলা আনা হচ্ছে এলাকার রাস্তার পাশে। শাপলার আঁটি গুনে গুনে পিকআপ ভ্যানে তোলা হচ্ছে। দাম চুকিয়ে শাপলা ভর্তি ট্রাকগুলো ছুটে যাচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে।
গাদিঘাট এলাকার সুমন খান, মো. মোশারফ, নূর হোসেনসহ অনেকে বলেন, শাপলা কুড়িয়ে আয়ের পাশাপাশি বেকার দিন পার করছেন তারা। এখানে প্রায় ৫০/৬০ জন শাপলা কুড়ানোর কাজ করছেন। লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েন তারা। পরিস্থিতির শিকার তারা শাপলা কুড়িয়ে সংসার চালানোর পথ বেছে নিয়েছেন।
হাঁসাড়া এলাকার আলামপুরের আমির হোসেন, শাজাহান, দেলোয়ার হোসেন, বলাই রাম জানান, চলমান লকডাউনে তেমন কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি তারা। অনেকটা বাধ্য হয়েই শাপলা কুড়াতে হচ্ছে। এখানে ৩০/৪০টি পরিবারের সংসার চলছে শাপলা বিক্রি করে। উপজেলার সদরে ডাকবাংলো মার্কেটের সামনে শাপলা বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে হরপাড়ায় থেকে শ্রম বিক্রির কাজ করে আসছেন। লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে পড়েন। কামারখোলা বিল থেকে শাপলা কুড়িয়ে এসে প্রতিদিন ডাকবাংলো মার্কেটের সামনে বিক্রি করছেন তিনি।
শাপলার পাইকার সেলিম শেখ বলেন, সিরাজদিখান থেকে এখানে পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসেছেন শাপলা নিতে। প্রায় ১ হাজার আঁটি শাপলা ক্রয় করে ঢাকার যাত্রাবাড়ী যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। আলামপুর এলাকার জমাইতুল্লাহ ও চাঁন মিয়া জানায়, প্রতিদিন বিকালে এসব শাপলা নিতে আসেন এখানে। পরে রাজধানীর কাওরান বাজারের বিক্রি করেন তারা।
গাদিঘাট এলাকার ওহাব হাওলাদার বলেন, আড়িয়াল বিল এলাকায় শাপলা কুড়িয়ে কর্মহীন অনেকের সংসার চলছে। তাদের কাছ থেকে এসব শাপলা কিনে নিচ্ছি। এতে করে উভয় পক্ষেরই অর্থ কামাই হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে ভোর ৫ থেকে দুপুর পর্যন্ত বিলে শাপলা কুড়ানো হয়। প্রায় ৬০/৭০টি শাপলা হিসেবে অনুযায়ী ১টি আঁটি বাঁধা হয়।
প্রতি আঁটি শাপলা পাইকাররা ক্রয় করেন ১২ টাকায়। দৈনিক একজন কমপক্ষে ৫০ আঁটি শাপলা কুড়াতে পারেন। প্রতিদিন শ্রীনগর থেকে শাপলা বোঝাই করে প্রায় ৮/১০টি পিকআপ ভ্যান ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে যাচ্ছে। সুস্বাদু সবজি হিসেবে শাপলার ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগামী কার্তিক-পৌষ মাস পর্যন্ত শাপলা কুড়াবেন তারা। করোনাকালীন ক্রান্তিলগ্নে শাপলা কুড়ানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কর্মহীন শতাধিক পরিবারের সংসার চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়