শিগগিরই প্রয়োগ শুরু : আরো ৭ লাখ ৮১ হাজার টিকা এলো জাপান থেকে

আগের সংবাদ

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিবিদ্ধ ২ : সশস্ত্র আরসা ও আরএসও আধিপত্যের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

পরের সংবাদ

মৎস্য আহরণ থেকে বঞ্চিত জেলেরা : কচুরিপানার দখলে ভৈরব নদ

প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : কচুরিপানা আর ময়লা-আবর্জনায় সৌন্দর্য হারাতে বসেছে মেহেরপুরের ভৈরব নদ। মেহেরপুরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্রোতহীন ভৈরবের ৮০ শতাংশই এখন কচুরিপানার দখলে। মৃত প্রায় ভৈরব নদকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৫ সালে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেহেরপুরের কাথুলি থেকে মুজিবনগরের রশিকপুর স্লুইস গেট পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজ শুরু করে। যা শেষ হয় ২০১৭ সালের শেষের দিকে। সেসময় ভৈরব ফিরে পায় তার পূর্ণ যৌবন। নদের খনন করা অংশে দুই পাড়ের মানুষকে গোসল করতে, মাছ ধরতে দেখা গেছে।
গ্রামের মানুষ বলেছেন, খননে লাভ হয়েছে। সেচের সুবিধা বেড়েছে। জেলেরা এই ভৈরব নদ থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পেরেছে। কিন্তু যথাযথ দেখভালের অভাবে বছর তিনেকের মধ্যেই কচুরিপানা ও দুপাশের মাটি ধসে সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে ভৈরব নদ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসিনতাই যে উদ্দেশ্য নিয়ে ভৈরব পুনঃখনন করা হয়েছিল তার কোনোটিই বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পুনঃখননের মেহেরপুরের অংশের ২৯ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ২২ কিলোমিটারজুড়েই রয়েছে কচুরিপানায় আচ্ছাদিত। যা দেখলে মনে হয় কোনো খেলার মাঠ। কচুরিপানাকে বুকে নিয়ে যেন বহু কষ্টে বইছে ভৈরব নদ।
জানা গেছে, ভারতে গঙ্গার শাখা নদী জলাঙ্গি থেকে ভৈরবের উৎপত্তি। ভারতের নন্দনপুর সেতুর নিচ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই নদ। মেহেরপুরের শোলমারি গ্রাম থেকে কাথুলি পর্যন্ত ভৈরবের দুই পাশে দুই দেশ। কাথুলিতে বিজিবি ফাঁড়ির কাছে দুই তীরে বাংলাদেশ। সীমান্ত থেকে কাথুলি পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার মৃত ভৈরবের মধ্যে ধানখেত ও বিভিন্ন ফসল ছাড়া চোখে পড়ে না। এই ৭ কিলোমিটার ভৈরব নদে সেচ পাম্পের ড্রেনের মতো করে ভারত থেকে বাংলাদেশের ভৈরব অংশে পানি আসে। এছাড়াও ভারত বহু বছর আগে রেগুলেটর তৈরি করে ভৈরবের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে পুনঃখনন করেও তেমন একটা লাভ হয়নি।
জাগো মেহেরপুরের মুখপাত্র শোয়েব রহমান বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, দেশীয় প্রজাতি মাছের ঘাটতি চাহিদা মেটাতে, পরিবেশকে সুন্দরভাবে বাঁচানোর প্রয়োজনে, আর কৃষকের সেচকার্যে সহযোগিতার মাধ্যম হয়েছিল ভৈরব নদ। অথচ সেই ভৈরব নদটি মাত্র ২/৩ বছরের মধ্যেই আশা-নিরাশার একটি বিষয় বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের ধীরে চলো নীতিতে নদটি তার যৌবন যেন আবারো হারাতে বসেছে। কচুরিপানা ও আবর্জনা এ যেন নদ ভরাট এরই এক নামান্তর। এতে নদের স্রোত প্রবাহ যেমন বাধায় পড়ছে অন্যদিকে পৌরসভার ড্রেনের পানিতে ভৈরবের পানি দূষিতই নয় বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। এছাড়াও উন্মুক্ত মাছ শিকারে শৌখিন মৎস্য শিকারিদের বিভিন্নভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেহেরপুর শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান বলেন, আরো প্রায় ৫৬ কিলোমিটার ভৈরব খনন করা হবে। যা চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীর সঙ্গে মিশে যাবে। সেই সঙ্গে দুটি স্লুইসগেট তৈরি করা হবে। যাতে করে বর্ষায় পানি বৃদ্ধি পেলে অন্য মৌসুমের জন্য পানি ধরে রাখা যায়। যেহেতু ভৈরব নদ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাই নোম্যান্সল্যান্ডের কাছে ভৈরব একেবারেই মৃত। সেজন্য পানি প্রবাহ কম হয়। স্থির পানিতে অনেক জলজ উদ্ভিদের জন্ম হয়। ভৈরবের বাকি অংশ পুনঃখনন হয়ে গেলে আশা করছি ভৈরবের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়