হেফাজতের সহিংসতা : এজাহারনামীয় এক আসামি গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

বোল্টের সিংহাসনে বসলেন জ্যাকবস

পরের সংবাদ

হঠাৎ উধাও নাপা-প্যারাসিটামল! মিললেও দাম নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি >> ফামের্সিগুলো বলছে, ‘স্টক শেষ’ >> ঔষধ প্রশাসন জানেই না

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানী থেকে গ্রাম। বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। এরই মধ্যে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ। অনেকে ভুগছেন শরীর ব্যথায়। প্রতি ঘরেই এমন উপসর্গের রোগী মিলছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু করোনা ভাইরাস নয়, ঋতু পরিবর্তনেরও প্রভাবে এমনটা হচ্ছে। এর ফলে বেড়েছে নাপা, নাপা এক্সট্রা, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপসহ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা। চাহিদা বাড়ায় বাজারে বেড়েছে এসব ওষুধের সংকট। কোথাও যদিও-বা মিলছে দাম রাখা হচ্ছে দ্বিগুণ বা তারও বেশি।
গোপীবাগের বাসিন্দা আশুতোষ রায়। হাল্কা জ¦র ও শরীর ব্যথায় আক্রান্ত মেয়ের জন্য ফার্মেসি থেকে নাপা প্লাস ওষুধ কিনতে গিয়ে ওষুধ পাননি। ফার্মেসির বিক্রেতা ধরিয়ে দিলেন অন্য ওষুধ। বিক্রেতা জানালেন, নাপা বা নাপা এক্সটার স্টক শেষ। রাজধানীর মিরপুর ৬ ও ১০ নম্বরেও রয়েছে এই সংকট। গোপীবাগের নাহার ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মো. মামুন বলেন, রাজধানীর ফার্মেসিগুলোতে জ¦র, ঠাণ্ডা ও এন্টিবায়োটিক ওষুধের চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। কেউ চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ কিনছেন। আর অনেকে নিজে থেকে ফার্মেসিতে এসে এসব ওষুধ কিনছেন। বিশেষ করে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা অনেক বেড়েছে।
বাঞ্ছারাম উপজেলা ও এই উপজেলার রূপসদী গ্রামেও দেখা গিয়েছে নাপাসহ সমগোত্রীয় ওষুধের কৃত্রিম সংকট। তবে দ্বিগুণ দামে মিলছে কোথাও কোথাও। প্রতি পাতা (১০টি) নাপা ১০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২০ থেকে ২৫ টাকাও বিক্রি হচ্ছে কোথাও কোথাও।
যশোরের নওয়াপাড়া ফার্মেসির মালিক আবির হোসেন জানান, বর্তমানে নাপা, নাপা এক্সটাসহ বেশ কিছু ওষুধের সরবরাহ কম। লকডাউনের কারণে বিদেশ থেকে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল না আনতে পারায় ওষুধ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আর তাই বাজারেও সরবরাহ কম বলে ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে। এ কারণে বাজারে ওষুধের সংকটের পাশাপাশি দামও কিছুটা বেড়েছে।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারের হক ফার্মেসির

স্বত্বাধিকারী মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ঘরে ঘরে সর্দি জ¦র থাকায় ঈদের পর থেকে ওষুধগুলোর সংকট হয়েছে। একই উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মক্কা মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল হাই বলেন, প্যারাসিটামল (নাপা, নাপা এক্সট্রা) জাতীয় ওষুধের সরবরাহ না থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে। সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ার এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া বগুড়া, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রংপুরসহ অনেক এলাকাতেই তৈরি হয়েছে নাপাসহ এ জাতীয় ওষুধের কৃত্রিম সংকট।
নাম প্রকামে অনিচ্ছুক ঢাকার শাহবাগের ওষুধ বিক্রেতা রাম চন্দ্র জানান, অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেটের চাহিদা এখন বেশি। কয়েক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রথম সারির ওষুধ কোম্পানিগুলো প্যারাসিটামল গ্রুপের ট্যাবলেট সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। আবার অনেক কোম্পানির প্রতিনিধিই আসছেন না। এ কারণে চাহিদার তুলনায় সংকট মনে হচ্ছে।
তবে এসব ওষুধের চাহিদা বাড়ার বিষয়টি জানলেও সংকটের কথা জানে না ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ নিয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগও করেনি অধিদপ্তরে। তবে সংকট যাতে সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সজাগ আছে দাবি করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। এ প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আইয়ুব হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, নাপা বা এই জাতীয় ওষুধ উৎপাদনকারী অনান্য প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। ওষুধের চাহিদা বাড়ায় বিদেশ থেকে প্যারাসিটামল তৈরির কাঁচামাল আরো বেশি করে আনার অনুমতিও দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়