শুভ জন্মদিন : প্রেমিক কবি ফারুক মাহমুদ

আগের সংবাদ

দক্ষিণাঞ্চলে পেয়ারা বাজার মন্দা

পরের সংবাদ

প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা চাই

প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে এগিয়ে আসে বর্তমান সরকার। ঘরহীনকে ঘর, কর্মহীনকে কর্মসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১ লাখ ২৩ হাজার গৃহহীন মানুষকে ঘর উপহার দিয়েছে। যেটা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয় কাজ। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন খাতে সরকার কোটি কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়ে থাকে।
কিন্তু কতটুকু বাস্তবায়ন হয়, সেটাই প্রশ্ন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের ঘর দেয়া ৩৯টি প্রকল্পে দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশ গৃহনির্মাণ করার ক্ষেত্রে সঠিক কোনো পন্থা অবলম্বন করা হয়নি। ভিটেতে ঠিকমতো মাটি দেয়া হয়নি। সঠিকভাবে প্লাস্টার করা হয়নি এবং রডের বদলে বাঁশ দেয়াসহ প্রচুর অনিয়ম-অভিযোগ ফুটে উঠছে। ঘরহীন মানুষ ঘর পেয়েই হতাশায় নিমজ্জিত। সর্বশেষ যেটুকু সম্ভব ছিল, যতটুকু আশা নিয়ে নতুন ঘরে উঠেছিল সেটাও আজ বিলীনের পথে। কখন ভেঙে যাবে এই চিন্তায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া ঘরের মানুষ। চারপাশে অসংখ্য ঘর ভেঙে যাওয়ায় মানুষ ঘরে থাকতেও ভয় পাচ্ছে আজকাল।
এসব প্রকল্পের সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জড়িত। দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। কথা হলো ওএসডি কি পূর্ণাঙ্গ সমাধান? সাময়িক এ বিচারকার্য হলেও এর ফলাফল কী? এভাবে তো অহরহ দুর্নীতি হচ্ছে অবিরাম-অবিরত। দুর্নীতিবাজরাও পার পেয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি কোনো শাস্তির ব্যবস্থা করা হয় না বলে। তারপর আবার আইনের ফাঁকফোকর এবং রাজনৈতিক অপশক্তির কল্যাণে অনেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। করোনা মহামারিতে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেখানেও লাগামহীন দুর্নীতি হয়েছে। তেমন কোনো শাস্তি চোখে পড়েনি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা কারো বাসার নিচে, কারো মশারির ভেতরে, কারো দোকানে, কারো ছাদেসহ বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে। এ যেন দুর্নীতির মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ২০২০ প্রতিবেদনে দুর্নীতিতে ১০০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৬। যা ২০১৯ সালের সমান। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এর পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা যেমন দেশের জন্য অশনিসংকেত তেমনই লজ্জার। তার থেকেও বড় বিষয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের দেশের বদনাম। অনেক বড় বড় অর্জনকে মøান করতে এসব দুর্নীতি যথেষ্ট। এসব দুর্নীতির কারণে আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে বিজনেস করতেও দ্বিধাবোধ করে বা করবে।
প্রকৃত অর্থে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করা উচিত। দুর্নীতি বন্ধে এসব বিষয়ে এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রত্যেকটা সেক্টরে আজ দুর্নীতির মহোৎসব। কোন দলমত হিসাব করে ছাড় দিলে দেশের জন্য এক সময় দুর্নীতি নির্মূল করা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
পাশাপাশি মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ করার ওপর তৎপর হতে হবে। অধিকাংশ প্রকল্প বেঁধে দেয়া সময়ে বাস্তবায়ন হয় না। যার ফলে অতিরিক্ত কোটি কোটি টাকা ওই প্রকল্পের জন্য বাজেট দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের সততা, সৎ ইচ্ছা এবং দায়িত্বশীলদের সুষ্ঠু তদারকি অতি জরুরি। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা দেশকে শুধুই অগ্রগতিতে নিয়ে যেতে চাই। আর সেজন্য এখন থেকেই দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে। পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের জন্য কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংগঠনিকভাবে কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করা যাবে না। এখন থেকেই দুর্নীতি কঠিন হাতে দমন করলে আগামীর বাংলাদেশ হবে একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।

মো. সায়েদ আফ্রিদী : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়