প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
জসিম আজাদ, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে ২ সহ¯্রাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে গৃহহারা হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর মধ্যে অন্তত ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদানের লার্নিং সেন্টার ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে। রোহিঙ্গা বসতিগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো এবং ঘনবসতি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।
গতকাল রবিবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ময়নার ঘোনায় ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা দ্রুত ১০ ও ১২ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান ও উখিয়া থানা পুলিশ আগুন নেভাতে কাজ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত ৮টা) হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে রহস্যময় উল্লেখ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় ১৪-১৫ বছর বয়সি এক রোহিঙ্গা কিশোরকে দেশলাইসহ আটক করা হয়েছে। এই কিশোরকে ঘরে আগুন দিতে দেখেছেন স্থানীয় অনেকে। তাকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে এটি পরিকল্পিত বা নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড কিনা।
উখিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ইনচার্জ এমদাদুল হক জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি টিম, পুলিশ ও অন্য বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে। এছাড়া স্থানীয়রাও আগুন নেভাতে সহায়তা করে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। তদন্তের পর বিষয়টি জানা যাবে। ৮ এবিপিএনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে বালুখালীর ১১ নম্বর ক্যাম্পে আগুন দেখা যায়। ক্যাম্পের ঘরগুলো পাশাপাশি হওয়ায় আগুন ১১, ১০ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের জানুয়ারিতে উখিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ছয়শ ঘর পুড়ে যায়। এরপর মার্চ মাসে বালুখালীতে আগুনে পুড়ে মারা যায় ১৫ রোহিঙ্গা। তখন ১০ হাজারের মতো ঘর পুড়ে গিয়েছিল। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে আশ্রয়শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২২২টি। এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত। ৬০টি নাশকতামূলক ও ৬৩টির কারণ জানা যায়নি।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।