দৈনিক ওঠানামার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

আগের সংবাদ

জনগণের সাহসেই পদ্মা সেতু : বন্যার দুর্ভোগ ও ক্ষতি কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার > বিএনপির নেতা কে? সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ড পৌরসভায় যত্রতত্র ময়লা, দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুহাম্মদ ইউসুফ খান, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে : সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গা ঘেঁষে যত্রতত্র সবধরনের ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ কারণে মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভার বাসিন্দারা বছরের পর বছর ময়লার অসহ্য দুর্গন্ধ সহ্য করতে হলেও এ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই।
সীতাকুণ্ড প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও দু’দশকেও গড়ে উঠেনি আধুনিক কসাইখানা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এক্ষেত্রে পৌরসভার কার্যক্রম চলছে সনাতন পদ্ধতিতে। সীতাকুণ্ড মডেল থানা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে শেখপাড়া নামক স্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গা ঘেঁষেই কসাইখানার অবস্থান। এখানে প্রতিদিনই ৮/১০টি গরু-মহিষ-জবাই করা হয়। জীবিত বা সুস্থ পশু জবাই করা হয় কিনা তা জনসাধারণের অজানা। একটি টিনের ছাউনিতে গরু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান থাকলেও ছাউনির বাইরে মহাসড়কের পাশেই জবাইয়ের কাজ চলে। জবাইয়ের পর রক্ত নাড়ি-ভুঁড়িসহ উচ্ছি¡ষ্ট সব পড়ে থাকে যত্রতত্র। যে টিনশেড ঘরে গরু জবাই করা হয় সেখানে বাউন্ডারির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পোকা-মাকড় গিজগিজ করতে দেখা গেছে। গরু জবাই করার পূর্বে একজন ভেটেরিনারি সার্জনকে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বিধান থাকলেও এখানে তা মানা হয় না এবং পৌরসভারও নিজস্ব কোনো চিকিৎসক নেই বলে জানা যায়। এতে রোগাক্রান্ত কিংবা ভাইরাস আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে মানুষ লাম্পি স্কিন, তরকা রোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে- এমন অভিযোগও আছে। কসাইখানার সামনে এবং দুপাশে ১০০-২০০ গজ এলাকাজুড়ে বর্জ্যরে বিশাল স্তূপ। সীতাকুণ্ড পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে যেসব খোলা ডাস্টবিন রয়েছে সবক’টি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা খোলা ট্রাকে করে নিয়ে ফেলা হয় কসাইখানার আশপাশে। ফলে এসব ময়লা-আবর্জনার পচা দুর্গন্ধে ত্রাহী অবস্থা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যানবাহনে চলাচল করছে বিশাল ময়লার স্তূপ ঘেঁষে। উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ। চরমভাবে দূষিত হচ্ছে বায়ু। বিষাক্ত ময়লা আবর্জনার উৎকট গন্ধে আশপাশের শত শত বাসিন্দার জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে।
কসাইখানা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থানটির সামান্য উত্তর পাশে ছোট একটি ব্রিজ রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এ ব্রিজটির নিচে আছে একটি খাল। পাশেই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শ্মশান। এ ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে দেখা গেল অবর্ণনীয় এক দৃশ্য। যেখানে ফেলা হয়েছে হাজার হাজার পচা ডিম ও ডিমের ভেতর পচাগলা মুরগির বাচ্চা। এতই দুর্গন্ধ যে, দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা তাহমিনা আরজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো বিশেষ দিক-নির্দেশনা নেই। পঁচা ডিম ফেলার বিষয়ে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লি. এর মুরগি ফার্মের ব্যবস্থাপক পংকজ কুমার সাহা বলেন, পচা ডিমগুলো আমরা থার্ড পার্টির কাছে চুক্তিভিত্তিক দিয়ে থাকি। ওরা কোথায় ফেলে সেটা জানি না।
সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, কসাইখানার জন্য ভেটেরিনারি সার্জন ও তাদের নিজস্ব কোনো পশু চিকিৎসক নেই। ফলে গরু জবাইয়ের পূর্বে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রশ্নে তিনি বলেন, পৌরসভার সবক’টি ওয়ার্ডের ডাস্টবিনের ময়লা এখানে ফেলা হয়। বিকল্প জায়গার বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি। সরকার সাড়া দিলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়