ঢাকায় সিপিবির সমাবেশ কাল

আগের সংবাদ

টার্গেট এবার রাজপথ দখল : পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি

পরের সংবাদ

ইতালিকে উড়িয়ে বিশ্বকাপে চোখ রাঙাচ্ছে আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে নভেম্বরে। এর আগেই লিওনেল স্কালোনির অধীনে আর্জেটিনা টানা ২টি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতে ফেলেছে ইতোমধ্যে। লা ফিনালিসিমায় ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রেখেছে মেসি-ডি মারিয়ারা। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় দ্বিতীয় স্থানে থেকেই কাতারে আসছে আর্জেন্টিনা। অপরাজেয় এ যাত্রা ধরে রেখে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে মেসি-ডি মারিয়ার হাতে কাতার বিশ্বকাপের শিরোপার আভাসটাই যেন পাওয়া যাচ্ছে। লিওনেল মেসি ও ডি মারিয়ার সঙ্গে আর্জেন্টিনার তরুণ খেলোয়াড়রা ওয়েম্বলিতে ইতালির বিপক্ষে যা করে দেখালেন তা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের টানা তৃতীয় শিরোপা হিসেবে বিশ্বকাপের স্বপ্নটা দেখাতেই পারে। ২০২১ সালে মারাকানা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ব্রাজিলের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে ২৮ বছর পর কোন আন্তর্জাতিক শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মেসি-ডি মারিয়ার ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফিও সেটিই। এই দুইজনের পায়ের জাদুতেই আন্তর্জাতিক শিরোপার খড়া কাটাতে পারে স্কালোনির শিষ্যরা। ফাইনালে ডি মারিয়ার একমাত্র গোলেই ব্রাজিলের বিপক্ষে জয় পায় আর্জেন্টিনা। সেদিন ম্যাচসেরা হন এই আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। আর কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা যৌথভাবে ওঠে মেসি ও নেইমারের হাতে।
ওয়েম্বলিতে ‘ফিনালিসিমিয়া’র ম্যাচেও মেসি-ডি মারিয়া আরো একবার জাদু দেখিয়েছেন। আর্জেন্টাইন এই ফুটবল জাদুকর ম্যাচে কোনো গোল না পেলেও আর্জেন্টিনার ৩টি গোলের ২টিরই কারিগর ছিলেন তিনিই। যে কারণে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটাও উঠেছে তারই হাতে। আর ডি-মারিয়া তো এবারো অসাধারণ এক গোল করেই বসলেন। পরপর ২টি আন্তর্জাতিক শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ডি মারিয়ার গোল পাওয়া দেখে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মনে হতেই পারে যে, ২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে তাকে একাদশে পাওয়া গেলে হয়তো বিশ্বকাপ খড়াটাও ঘুচে যেত আর্জেন্টিনার। তবে আরো একবার সুযোগ রয়েছে এ দুজনের। তরুণদের নিয়ে কাতারে নিজেদের শেষ বিশ্বকাপটা রাঙিয়েই যেতে চাইবেন এ দুজন। ফিনালিসিমা জয়ের পর মেসি বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি যে কোনো দলকে মোকাবিলা করতে। আজকের পরীক্ষাটি দারুণ ছিল কারণ ইতালি খুব ভালো দল। আমরা জানতাম ম্যাচটি খুব ভালো হতে চলেছে এবং শেষে চ্যাম্পিয়ন হতে পারায় খুবই আনন্দিত।’ আর আর্জেন্টাইন উইঙ্গার ডি মারিয়া মনে করিয়ে দেন জয়টা উপভোগ করলেও তারা নিজেদের গুছিয়েই প্রতি মূহর্তে এগিয়ে চলেছেন। তিন বলেন, ‘আমরা কোপা আমেরিকা জয়ের পর থেকে সবকিছু বদলে গেছে। আমার ওপর থেকে ভার নেমে গেছে এবং আমরা খেলতে উপভোগ করছি, একসঙ্গে দারুণ সময় কাটাচ্ছি এবং সবকিছু বেশ সহজ মনে হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা দারুণ রোমাঞ্চিত হলেও আমাদের পা অবশ্য মাটিতেই রেখেছি’।
টানা ২টি আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের পরও বিশ্বকাপ নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবছেন আর্জেন্টিনা কোচ। ইউরো চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয়ের পর বিশ্বকাপকে আলাদা চোখেই দেখছেন লিওনেল স্কালোনি। নভেম্বরে শুরু হতে যাওয়া কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা কোচিং স্টাফরা দলের জন্য নিজেদের কাজটা করে যাব। রক্ষণভাগে চারজন নিয়ে খেললেও কাতারে আমরা অন্তত আটজন ডিফেন্ডার নিয়ে যাব। অন্যান্য পজিশন নিয়ে পরে ভাবা যাবে।’
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালির সঙ্গে ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মেসি-ডি মারিয়ারা। ইতালির জার্সিতে ১১৮তম ম্যাচ খেলে এদিন আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরে গেলেন ইতালির সেন্টারব্যাক জর্জো কিয়েল্লিনি।
২৮ মিনিটেই মেসির অসাধারণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে নেন লাওতারো মার্টিনেজ। সতীর্থের পাস ধরে বাঁ-দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বা পায়ে সামনে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। ছয় গজ বক্সের মধ্যে সামনে থেকে বলে টোকা লাগিয়েই জালে জড়ান মার্টিনেজ।
১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা ব্যবধান দ্বিগুণ করে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের শট থেকে মিডফিল্ডে বল পেয়ে যান লাওতারো মার্টিনেজ। এরপর তিনি কিছুদূর সামনে এগিয়ে দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে দারুণ এক থ্রু পাস দেন ততক্ষণে বক্সের ভেতরে এগুতে থাকা ডি মারিয়াকে। ডি মারিয়া বক্সের দোন্নারুম্মাকে একা পেয়ে অসাধারণ এক চাপে বল জালে জড়িয়ে দেন।
আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি এসেছে ম্যাচের যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে। গোলটি করেছে পাওলো দিবালা, তবে এই গোলেও মূল অবদানটা মেসিরই। মাঝমাঠ থেকে দারুণ গতিতে আক্রমণে উঠে ডি-বক্সের ঠিক বাইরের বলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন মেসি। ইতালিও ক্লিয়ার করতে না পারলে আবার মেসির পা হয়েই যাওয়া বল ধরে ভেতরে ঢুকে নিচু কোনাকুনি শটে জালে পাঠান দিবালা।

ইতালিয়ান গোলরক্ষক দোন্নারুম্মার অসাধারণ কিছু সেভ না দিতে পারলে আর্জেন্টিনা হয়তো আরো বড় ব্যবধানেই জয় পেতে পারত।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন দলকে নিয়ে এমন ম্যাচের আয়োজনের আগেও দুবার হয়েছে। ১৯৮৫ সালের প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ফ্রান্স জিতেছিল ২-০ গোলে আর ১৯৯৩ সালে ডেনমার্কের বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জয়োল্লাস করেছিল আর্জেন্টিনা। যে কারণে বলা যায়, ২৭ বছর পর এই মর্যাদার লড়াইয়ের দক্ষিণ আমেরিকার হয়ে শিরোপা ধরে রাখল আর্জেন্টিনা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে কোনো ম্যাচ না হারা আর্জেন্টিনা ৩২ ম্যাচে অপরাজিত রইল। নিজেদের ইতিহাসে তাদের আগের রেকর্ড ছিল ৩১ ম্যাচের, ১৯৯১-১৯৯৩ সালের মধ্যে হয়েছিল সেই রেকর্ডটি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়