নলডাঙ্গা : আ.লীগ-বিএনপি নেতাসহ আটক ১১ জুয়াড়ি

আগের সংবাদ

উন্নয়নের ভোগান্তি আর কত : কোনো প্রকল্পই শেষ হয় না নির্ধারিত সময়ে, বছরজুড়েই চলে সেবা সংস্থাগুলোর খোঁড়াখুঁড়ি

পরের সংবাদ

রাণীনগরে সিসা কারখানা : বিষাক্ত ধোঁয়ায় পেয়ারা নষ্টের অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের ২নং সøুইস গেট এলাকায় অবৈধ সিসা তৈরি কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় বাগানের প্রায় ৪০ টন পেয়ারা নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। বিষাক্ত ওই ধোঁয়ায় এলাকায় কয়েকটি গরুও মারা গেছে বলে জানা যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উন্মুক্ত স্থানে অবৈধ কারখানার ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিলেও প্রশাসনের কর্তারা দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ফলে পরিবেশ ও চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সরজমিন জানা গেছে, উপজেলার রাণীনগর-বান্দাইখাড়া প্রধান সড়কের ২নং সøুইস গেটের পাশে অবৈধভাবে একটি উন্মুক্ত কারখানা স্থাপন করে পুরনো ব্যাটারি পুরে সিসা তৈরির কাজ করে আসছে একটি চক্র। বিভিন্ন এলাকা থেকে পুরনো ব্যাটারি কিনে গাড়ি ভর্তি করে এনে সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে সারা রাত চলে আগুনে পুড়িয়ে সিসা তৈরির কাজ। তবে সকাল হওয়ার আগেই কাজ সম্পন্ন কার্যক্রম শেষ করে চলে যায় চক্রটি। ব্যাটারির এসিডের বিষাক্ত ধোঁয়া এবং দুর্গন্ধে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়ছে।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানটির পাশেই প্রায় ৫ হাজার বিভিন্ন ফলদ গাছের বাগান রয়েছে। সেখানে বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাবে বাগানের ফল কালো হয়ে নষ্ট যাচ্ছে। এছাড়া গাছপালার পাতা বির্বণ হয়ে মরে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, কারখানার আশপাশে স্থানীয়রা গরু চড়াতে এসে ঘাস খাওয়ার পর ওই এলাকার প্রায় চারটি গরুও মারা গেছে। তবে এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করেও কোনো ফল হচ্ছে না। এমনকি প্রশাসনের লোকজনও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। বাগান ও প্রজেক্ট মালিক আব্দুল কুদ্দুস মণ্ডল জানান, তার জন্মস্থান রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভাতঘরপাড়া গ্রামে। তিনি ব্যবসা করার জন্য গত দুই বছর আগে এ এলাকায় এসে জমি কিনে এবং লিজ নিয়ে একই স্থানে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে ৯টি পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে আসছেন। পাশাপাশি পুকুর পাড় জুড়ে গড়ে তুলেছেন ফলদ বাগান। সেখানে প্রায় সাড়ে ১ হাজার ২০০ থাই পেয়ারা, ২৫০ আম, ১০০ বেদেনা, দুই হাজার ৫০০ লেবু এবং বেশকিছু কলাগাছ রয়েছে। গাছে ফল আসতে শুরু করলে তা বড় না হতেই সিসা তৈরি কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাবে সব ফল কালো হয়ে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৪০ টনেরও বেশি পেয়ারা নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বেদেনা, আম, কলা, লেবুসহ বিভিন্ন জাতের লাখ লাখ টাকার ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারখানার মালিককে বলেও কোনো ফল হয়নি।
কালিকাপুর গ্রামের শাহাদত হোসেন বলেন, কারখানার পাশের চরে ঘাস খাওয়ার কারণে তার একটি গরুও মারা গেছে।এছাড়া এ এলাকার আরো তিনটি গরু মারা গেছে। এদিকে অভিযুক্ত ওই কারখানার নির্দিষ্ট মালিকের নাম বা খোঁজ না পাওয়ায় এবং সিসা তৈরির চক্রটির কোনো লোকজনকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, সিসা তৈরি কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় প্রচুর পরিমাণে কার্বন থাকে। ফলে ধোঁয়ার প্রভাবে ফল কালো হয়ে পচে নষ্ট হয়ে যায়। ইতোমধ্যে কারখানাটি বন্ধের জন্য থানার ওসিকে বলেছি।

রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কে এইচ এম ইফতেখারুল আলম খান বলেন, সিসা তৈরির বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানবদেহে শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ এবং ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়া পশুপাখি এবং গাছপালার মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, সিসা তৈরি কারখানার কথা শুনেছি। এটি বন্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়