আশুলিয়ায় ফার্নিচার গুদামে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩

আগের সংবাদ

বাতাসে আগুনের হলকা!

পরের সংবাদ

শিশুদের হইহুল্লোড়ে মুখর শরীয়তপুর পার্ক : প্রশংসায় ভাসছে জেলা প্রশাসন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া ‘শরীয়তপুর পার্ক’ এখন শিশুদের চেঁচামেচি আর হইহুল্লোড়ে মুখর। বিকাল থেকে রাত অবধি অভিভাবকের হাত ধরে আনন্দে মেতে উঠে কোমলমতি শিশুরা। শিশুদের বায়না পূরণ করতে অনেক বাবা-মার বিকাল কাটে এ পার্কে। তাদের বাঁধভাঙা আনন্দে বাবা-মায়ের মনও যেন আনন্দে নেচে ওঠে। শিশুদের বিনোদনের এমন সুযোগ তৈরি করে প্রশংসায় ভাসছে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জনান, দীর্ঘদিনেও শরীয়তপুর শহরে কোনো বিনোদন কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি বিনোদন কেন্দ্রের প্রবল আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছিল। বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ এ জেলায় পদায়িত হওয়ার পর বিষয়টি তার নজরে আসে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিশুদের বিনোদনের জন্য সরকারি বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয় অনুদানের ওপর ভিত্তি করে একটি পার্ক করার উদ্যোগ নেন তিনি।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের উল্টো পাশে ১ একর জমির উপরে নির্মিত হয়েছে কোমলমতি শিশুদের বিনোদনের জন্য এই পার্ক। পার্কটির নাম দেয়া হয়েছে ‘শরীয়তপুর পার্ক’। এ পার্কটির সম্পূর্ণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিনোদনের জন্য ঈদুল ফিতরে দিন থেকে পার্কটি খুলে দেয়া হয়েছে শিশুদের জন্য। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আর সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে পার্কটি। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে শতশত শিশু বিনোদনের জন্য আসে পার্কটিতে। শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ নেয়ায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাতেও ভুলেন না অভিভাবকরা।
পার্কে ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় মধ্যবয়সি আল্পনা আক্তারের সঙ্গে। তিনি তার ৫ বছরের ছেলে রোহান আর ৮ বছরের মেয়ে তানজিলাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে তার বাড়ি। ফেসবুকে দেখে ছেলেমেয়ে বায়না ধরেছে শরীয়তপুর পার্কে আসার। অবশেষে সন্তানদের চাওয়া পূরণ করতে এত দূর থেকে এসেছি।
ঘুরতে কেমন লেগেছে জানতে চাইলে তানজিলা বলেন, অনেক মজা করেছি। আমাদের বাড়ির কাছে হলে প্রতিদিন আসতাম। কিন্তু আমাদের বাড়ি অনেক দূরে। কাছে এমন একটা পার্ক থাকলে ভালো হতো। তার ভাই ৫ বছর বয়সি রোহান ছুটাছুটি আর চেঁচামেচি করে যেন আত্মহারা। বেশ আনন্দ পাচ্ছিল ছেলেটি।
আল্পনা আক্তার বলেন, সন্তানদের আনন্দের জন্য তাদের বায়না পূরণ করতেই হয়। তাদের জন্যই আজ আসা। তাদের চেঁচামেচি আর হইহুল্লোড় শুনতে ভালোই লাগছে।
এ আয়োজন করার জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আংগারিয়া থেকে বেড়াতে আসা আবু সুফিয়ান বলেন, আমি দুই মেয়েকে নিয়ে এসেছি। এই শহরে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরার কোনো জায়গা নেই। পার্কটি হওয়ায় অনেক ভালো হয়েছে। এখন ইচ্ছে করলে একটু বাচ্চদের নিয়ে ঘুরার সুযোগ পাব।
বিনোদপুরের শিক্ষিকা রওশন আরা বলেন, জেলা প্রশাসক প্রসংশনীয় কাজ করেছেন। এতদিনেও একটি পার্ক তৈরি হয়নি, এটা ছিল আমাদের জন্য লজ্জার। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সব কাজ শেষ করে পার্কটি পূর্ণতা পাবে এটা আমাদের বিশ্বাস।
পার্কের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাইনউদ্দিন বলেন, অতি অল্প সময়ে পার্কটি এ অবস্থায় পৌঁছেছে। আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করেছি যাতে এ ঈদে শিশুদের জন্য পার্কটি খুলে দেয়া যায়। আমাদের পরিশ্রম সফল হয়েছে। যেভাবে শিশুরা ভিড় করছে, আমাদের কল্পনাকেও হার মানিয়েছে। এ জেলায় শিশুদের বিনোদনের কোনো স্পট না থাকায় পুরো জেলার সব বয়সের মানুষের ঢল নেমেছে এ পার্কে। এখনো অনেক কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি অল্প দিনের মধ্যে আরো অনেক সমৃদ্ধ হবে এ পার্ক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়