গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

উপকূলের বিস্তীর্ণ লোনা জমি উর্বর করে সবজি চাষ : দুই মৌসুমে ৯০ হাজার মণ উৎপাদন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বরগুনা প্রতিনিধি : উপকূলের বিস্তীর্ণ লোনা জমিকে উর্বর করে সবজি চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা জানিয়েছেন, শেষ দুই মৌসুমে (এক বছরে) একটি গ্রামে প্রায় ৯০ হাজার মণ সবজির উৎপাদন হয়েছে, বিক্রি হয়েছে কয়েক কোটি টাকায়। কৃষকদের এ উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়েছে পাশের জেলাতেও।
বরগুনার তালতলী উপজেলার সওদাগরপাড়া ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের যে জমিতে লবণাক্ততার কারণে এক যুগ আগেও ধানের চাষও করা যেত না, সেখানেই এখন বছরজুড়ে রকমারি ফসল ফলাচ্ছেন চাষিরা। এখানকার চাষিরা বিশেষ এক চাষপদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, স্থানীয়ভাবে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কান্দি’। কৃষিবিদেরা বলছেন, এ চাষ পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে রেইজড বেড (জমি উঁচু করার) পদ্ধতি বলা হয়।
তালতলী উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দুই দিকে নদী, এক দিকে সাগর বেষ্টিত সওদাগরপাড়া গ্রামের খালগুলোয় লবণাক্ত পানির প্রবাহ থাকে। নদী থেকে গ্রামে ঢোকা সেই পানি মাটিতে মিশে লবণাক্ততার কারণে বছরের বেশির ভাগ সময় ৪ হাজার ৯৪০ একর জমি অনাবাদি থাকত। বছরে শুধু আমন ধান ফলাতেন কৃষকেরা। সওদাগরপাড়া আদর্শ কৃষি সমিতির হিসাবে, ‘কান্দি’ পদ্ধতি অবলম্বন করে শেষ দুই মৌসুমে (এক বছরে) গ্রামে প্রায় ৯০ হাজার মণ সবজির উৎপাদন হয়েছে, বিক্রি হয়েছে কয়েক কোটি টাকায়।
শাহাদাতের পদ্ধতি অনুসরণ করে সফলতা পেয়েছেন গ্রামের অন্যান্য কৃষকরা। গ্রামের ২৪০ জন কৃষক ৪৯৪ একর জমিতে সবজি আবাদ করছেন। গঠন করেছেন সওদাগরপাড়া আদর্শ কৃষি সমিতি। মূলত শীত মৌসুমে শিম, মরিচ, বেগুন আর বর্ষা মৌসুমে মরিচ, শসা, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, বরবটি ও লাউ বেশি আবাদ হয়। তারা জানান, শীতের শেষ দিকে বৃষ্টির জমানো পানি বোরো আবাদের জন্য সেচ দেয়ার পর শেষ হয়। এরপর পায়রা নদীর শাখা তালতলী খাল থেকে পাইপের সাহায্যে পানি এনে সেচ দিতে হয়। এজন্য বিএডিসি তাদের দুটি পাম্প মেশিন ও পাইপ দিয়েছে। তালতলী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, বছরব্যাপী সবজির আবাদের সূত্র ধরেই গত দুই বছর গ্রামের ৪০০ হেক্টরে জমিতে বোরো আবাদও হচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ২০ শিক্ষার্থীও সবজির আবাদ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান হাফিজ আশরাফুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের এ উদ্যোগ জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও ঝুঁকি হ্রাসের অসাধারণ দৃষ্টান্ত। এখন আমাদের উচিত তাদের এ কৌশলগুলো অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপপরিচালক জোবাইদুল আলম জানান, এ অঞ্চলের লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সেই ক্ষেত্রে সওদাগর পাড়ার কৃষকেরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে যেভাবে ফসল ফলাচ্ছেন, তা সারাদেশের কৃষকদের অনুকরণীয় হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়