কাগজ প্রতিবেদক : আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর বঙ্গবাজারের খালি জায়গায় গড়ে ওঠেছিল কিছু অস্থায়ী অবৈধ দোকান। নতুন করে মার্কেট তৈরি করতে এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো অবৈধ দোকান সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ মাসেই এখানে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বহুতল মার্কেটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ঈদের আগেই ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি ঈদুল ফিতরের পরই বঙ্গবাজারে ব্যবসায়ীদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের কথা বলেছিলেন।
সরজমিন গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর দেখা যায়, বঙ্গবাজারের সামনের অংশে গড়ে ওঠা বাঁশের তৈরি দোকানের কাঠামো ভেকু দিয়ে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত থেকে বিষয়টি দেখভাল করছেন। অনেক দোকানি নিজ নিজ দোকানের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে আগে থেকেই ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে বঙ্গবাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান সিটি করপোরেশন শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী। তাদের অভিযোগ ঈদের আগেরদিন বেচাকেনা শেষে মালমাল দোকানে তারা রেখে যান। এসে দেখেন দোকান ও মালামাল তাদের কিছুই নেই। তাদের মালামাল চুরি হয়েছে বলেও অভিযোগ কারো কারো।
বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এই অস্থায়ী স্থাপনা ভাঙার কথা ঈদের আগে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলতি মাসের যে কোনো দিন বঙ্গবাজারে বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় দেয়ার কথা রয়েছে। সেজন্য কিছু কাজ এগিয়ে রাখতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনুদানের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য যে অনুদান রয়েছে, সেই টাকা শিগগিরই ব্যবসায়ীদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে বঙ্গবাজারে নতুন নামে ১০ তলা ‘বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণি বিতান’ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসসিসি। ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, ১০ তলা আধুনিক এই ভবনে থাকবে বেজমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোর। গ্রাউন্ড ফ্লোরে মোট ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি ও সপ্তম তলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে। এছাড়া অষ্টম তলায় দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হবে। ভবনের পার্কিংয়ে একসঙ্গে প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। ভবনটিতে ২২টি খাবারের দোকান রাখা হবে। সেইসঙ্গে নকশায় আরো ৮১টির বেশি দোকান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০ থেকে ১০০ স্কয়ার ফুট।