কাগজ প্রতিবেদক : দেশে কঠিন দুঃসময় চলছে উল্লেখ করে এই অবস্থার পরিবর্তনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আজকে আমরা একটা দুঃসময়ে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহভাবে আমাদের আক্রমণ করেছে। বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ হয়ে গেছে। অর্থনীতিকে পুরোপুরিভাবে নিজেদের মতো করে লুটপাট চালাচ্ছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে একেবারে উপড়ে ফেলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নাগরিক স্মরণ সভায় বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন। ডা. জাফরুল্লাহ সারাটা জীবন দেশের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন- উল্লেখ করে তার স্মৃতির প্রতি তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ সভা উদযাপন কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, ঐক্যের কথা আমরা বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আমরা বলি- সেই চেতনার লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই এখন। যার জন্য জাফরুল্লাহ চৌধুরী সাহেবরা লড়াই করছিলেন, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যদি আবার আমাদের ফিরিয়ে আনতে হয়, বাংলাদেশকে যদি সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমরা পরিণত করতে অবশ্যই সবাইকে নতুন করে চিন্তা করে; নতুনভাবে আবার বলীয়ান হয়ে জাফরুল্লাহ ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই দুঃশাসনের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা হাত-পা ছুড়ছি। আমরা যারা রাজনীতি করি, রাজনৈতিক কর্মী আছি তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। আমি নিজেই নির্বিচারে নির্যাতিত হচ্ছি, অনেকে তাদের জীবন দিচ্ছেন।
গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাস নাইম বাবুর সঞ্চালনায় নাগরিক সমাজের মধ্যে ব্র্যাকের হোসেন জিল্লুর রহমান, সুজনের বদিউল আলম মজুমদার, ব্রতীর শারমিন মুরশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, এফবিসিসিআইয়ের আবদুল হক, মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বেলার সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ‘মায়ের ডাক’-এর সানজিদা ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, মিয়া মশিউজ্জামান এবং প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরী এই স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন।
প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘আজীবন মুক্তিযোদ্ধা’ এবং ‘অকুতোভয় দেশপ্রেমিক’ অভিহিত করে দেশের মানুষের জন্য তার বর্ণাঢ্য কর্মকাণ্ডের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা।
এই নাগরিক স্মরণ সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সহধর্মিণী শিরিন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীসহ আত্মীয়স্বজনরা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।