গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

সিংগাইরে পাড়া-মহল্লায় সাড়া ফেলেছে ‘গোশত’ সমিতি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ব্যতিক্রমী ‘গোশত বা মাংস’ সমিতি। দেশের প্রতিটি এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষেরই একটা-দুটো করে সমিতি রয়েছে। সিংগাইর উপজেলা এর ব্যতিক্রম নয়। এই উপজেলায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ‘গোশত বা মাংস’ সমিতি। প্রথম দিকে এ সমিতির কথা শুনে অনেকেই অবাক হলেও বর্তমানে লোকজন এ সমিতি থেকে উপকৃত হওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাড়া-মহল্লায় এর প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, সিংগাইরে গ্রাম, পাড়া বা মহল্লায় ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এ ধরনের মাংসের সমিতি গঠন করা হয়। মাংস সমিতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর বাড়ছে মাংস সমিতির সংখ্যা। প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতি সদস্য মাসে মাসে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে জমাকৃত অর্থ একত্র করে গরু কেনা হয়। ঈদের দিন বা তার এক বা দুই দিন আগেই গরু কিনে জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেয়া হয়। এতে ঈদ উদযাপনের ক্ষেত্রে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবাই বাড়তি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। স্থানীয়দের ভাষায়, এই সমিতির নাম ‘গোশত বা মাংস সমিতি’। অনেকের কাছে ‘গরু সমিতি’ নামেও পরিচিত। এ সমিতিতে সদস্য হয়ে উপকৃত হচ্ছেন দরিদ্র পরিবার।
ধল্লা ইউনিয়নের মেদুলিয়া গ্রামের গোশত সমিতির সদস্য মোকসেদ আলী মোল্লা, হারুন শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ ও রায়হান জানান, তাদের সমিতিতে এবার সদস্য ছিল ২২ জন। প্রতি মাসে সদস্য প্রতি ৫০০ টাকা করে অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে রোজার ঈদের আগে জমানো টাকা দিয়ে গরু কিনে জাবাই করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। তুলনামূলক বাজার দরের চেয়ে কম দামে এবং একসঙ্গে বেশি পরিমাণ গোশত পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি। উপজেলার ধল্লা ইউনিয়ন ছাড়াও জয়মন্টপ, জামির্ত্তা, চান্দহর, বায়রা, তালেবপুর, শায়েস্তা, চারিগ্রাম, জামশা ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের আরো অনেক সমিতি গড়ে উঠেছে। শবেকদরের দিন থেকে শুরু হয় সমিতির পশু জবাইয়ের কাজ। চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এলাকায় গোশত সমিতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সমিতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গরুর মাংসের উচ্চমূল্য থাকলেও সমিতির কারণে ঈদুল ফিতরে এখন ঘরে ঘরে গরুর গোশত রান্না হয়। এ ধরনের সমিতির কারণে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ আরো বেড়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার বলেন, সব শ্রেণির লোকের অংশগ্রহণে এ ধরনের গোশত সমিতি সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে সবার মধ্যে ঈদের আনন্দটাও অনেক বাড়িয়ে দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়