গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

শ্যামল দত্তের কবিতা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সমান্তরাল দর্শন

চার দেয়ালে বাঁধা কুঠুরিতে বন্দি চারজন মানুষ
একেকজন দাঁড়িয়ে আছেন এক এক দেয়াল ধরে
ইচ্ছে করলেই দেয়াল উপড়ে বেরোতে পারে প্রত্যেকেই
কিন্তু কী এক আশ্চর্য কারণে কেউ বেরোচ্ছেন না, সবাই নিথর, নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছেন।
অদ্ভুত এই দেয়াল- চারজন একসাথে ভাঙতে চাইলে হতে থাকে ইস্পাতের মত দৃঢ়,
অথচ একা নিমিষেই ভাঙতে পারে এক একটি দেয়াল
এমনকি নরম হাতের সামান্য কোমল স্পর্শেই ভেঙে পড়বে চুরচুর করে
কিন্তু কী এক অদ্ভুত রহস্যজনক কারণে কেউ একা ভাঙছে না তার সামনের অবরোধের দেয়ালটি
ভাঙার কথাটি এককভাবে ভাবছে না কেউ
বরং ভাবনায় লেপ্টে আছে তাদের ঐক্যের চিন্তা

তবে ঐক্যের এক মায়াবী সুতার বন্ধন তাদের প্রধান সমস্যা?
যদি বিচ্ছিন্ন বা একক হতেন,
তাহলে কি নিমিষেই তারা মুক্তি পেতেন?

নিয়তি এই যে একই কক্ষপথে তাদের মুক্তি নেই
বরং একমাত্র চারটি সমান্তরাল
অথচ একই ধরনের কোনো এক চিন্তা
ভাঙতে পারে এ দেয়াল,
পৌঁছে দিতে পারে তাদের নিজস্ব গন্তব্যে,
অন্যথায় নয়।

সেলফ পোর্ট্রেট

নিজেকে আঁকার এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ।
এতদিন আমার ভিতরের ক্রুর চেহারা
কখনো সামনে আনতে চাইনি

কত মানুষের পোর্ট্রেট ছবি এঁকেছি,
এসব ছবিতে কল্পনার নানা মিশেল রঙে রঙিন করে

তুলেছি চারপাশ।
ছবি আঁকার সময় স্বপ্নের ডানা ছিল উড়ন্ত,
চোখে পড়েছিল কল্পনার ঠুলি
কিন্তু কখনো সাহস পায়নি নিজস্বী ছবি আঁকতে কারণ আমি তো জানি আমার ভিতরের দানবিক, ক্লেদাক্ত ও বীভৎসরূপ, কতটা ভয়ংকর
তাকে আঁকা ছিল সম্ভব
কিন্তু আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে তুলে আনার
কারণ এতদিন আমি ছবি এঁকেছি স্বপ্নের দুনিয়ায় একটু গর্ত খুঁড়লেই শাবল হোঁচট খাবে বাস্তবের পাথরে

সাদা জমিনের সামনে দাঁড়িয়ে তুলে নিলাম হাতের তুলিটা
কারণ কঠিন সত্যটাকে আজ তুলে আনতে চাই ক্যানভাসের ওপর।
আমি জানি কাজটা অত্যন্ত কঠিন
কিন্তু এই রূঢ় বাস্তবতা থেকে আমার প্রস্থানের একমাত্র পথ এটিই।

কল্পনা ও বাস্তব

এ এক আশ্চর্য সুন্দর জায়গা
মোহিত হয়ে তাকিয়ে থাকতে হবে চারপাশে
আকাশে মেঘের খেলা
অন্যদিকে পাহাড়ের কোল থেকে
নেমে এসেছে ছোট্ট এক নদী
মনে হবে কোন এক শিল্পী
তুলির আঁচড়ে প্রতি মুহূর্তে এঁকে চলেছে
নতুন নতুন সব ছবি

পুরো জিনিসটা কল্পনায় আঁকা হলেও
বাস্তবে কোথাও না কোথাও আছে এ রকম দৃশ্যপট
দৃষ্টির সীমাবদ্ধতায় যা কিছু অদেখা
কল্পনার বিস্তৃত শক্তিতে তা আঁকা হলেও
হয়তো কোথাও আছে, অবশ্যই আছে

কল্পনায় আঁকা সুনির্দিষ্ট দৃশ্যপট
খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন

যেমন অর্থহীন মেঘের আঁচলে ঢাকা
অস্তগামী কোন সূর্যকে
কিংবা ভারী মেঘের কুয়াশায় ঢেকে থাকা পাহাড়টিকে
রঙিন তুলিতে আঁকা দিগন্তের দিকে উড়ে যাওয়া চিলের সারি
এসব খুঁজতে যাওয়া নিতান্তই অর্থহীন

এই সব কিছু হতে পারে কল্পনা
কিন্তু এতটাই নিখুঁত ও সৌন্দর্যময়
দৃশ্য কোথাও না কোথাও আছে, নিশ্চয়ই আছে

বাস্তবের রূঢ় ছবিটা কল্পনার বিস্তৃত শক্তির কাছে ছোট হলেও কোথাও না কোথাও এটা আছেই
না হলে বিশ্বাসহীনতায় মানুষের কোনো অস্তিত্ব থাকত না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়