গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

জগলুল আহমেদ ও তার স্ত্রী এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা : স.ম. শামসুল আলম > গল্প

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ করেই জগলুল আহমেদের স্ত্রী বিগড়ে গেল, বলা যায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। সভা-সমিতি দূরে থাক, জগলুলকে বাজারে পাঠাতেও চায় না সে। ফলে, জগলুল এখন অনেকটা ঘরবন্দি। কোথাও যেতে হলে স্ত্রীকে সঙ্গে নিতে হয়। ব্যাপারটা এ রকম যে, যখন মানুষ প্রিয় কাউকে শাসায় তখন এমনটা হয়, যেমন- ঘরের বাইরে এক পা দিলে তোর পা কেটে ফেলব। অথবা বলে, ঠ্যাং ভেঙে ফেলব। সে রকম কিছু ঘটেছে কিনা সেটাও কেউ বলতে পারে না।
জগলুল আহমেদ নিরীহ একজন গোবেচারা ধরনের মানুষ। সৎ, আদর্শবান, সত্যবাদী এসব গুণাগুণ আছে বলে তাকে সবাই পছন্দ করে। রাজউকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্য থেকে যদি একজন ভালোমানুষকে বেছে নিতে বলা হয়, একবাক্যে সবাই জগলুলের নামটাই বলবে। তাহলে তার স্ত্রী এত বিতৃষ্ণ হলো কেন? আগে তো এ রকম ছিল না।
অবসরে যাওয়ার বেশ আগে থেকেই জগলুল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু করেছিল। এটাতে তার স্ত্রীরও সমর্থন ছিল এবং বলা যায় মত দিয়েছিল, অবসর জীবনে একটা না একটা কিছু কাজ করা জরুরি, না হলে শরীর ভালো থাকে না, মন ভালো থাকে না, আবার অর্থ সংকটও দূর হয়। অর্থের প্রশ্নটা গভীরভাবে নাড়া দেয় এবং সামনে এসে সাড়া দেয় এজন্য যে, জগলুলের ৩টি ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে গেলে জমার খাতায় অঙ্কটা শূন্য ছাড়া কিছু থাকবে না। এ কারণেই, আগেভাগেই হোমিওপ্যাথির সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়েছে বলেই সবার ধারণা। অফিস শেষ করে বাসায় এসে তার ডিউটি ছিল ছোট্ট ড্রইং রুমটিতে বসে রোগী দেখা। প্রথমদিকে আয়-রোজগার তেমন বেশি কিছু হয়নি, তবে প্র্যাকটিস ভালো হয়েছে এবং পরবর্তীতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কোনো কোনোদিন রোগী দেখে শেষ করতে রাত ৯টা-১০টা বেজেছে। সুতরাং এই কাজটি পেশা হিসেবে নিতে পারলে অবসর জীবন ভালো কাটবে বলেই সবার বিশ্বাস।
অপরদিকে, জগলুল তার কিছু সহকর্মীকে নিয়ে একটি সমিতি গঠন করেছে। তারা প্রতিমাসে চাঁদা দিয়ে ভালো একটি ফান্ড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। সেখানেও জগলুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। প্রায়ই শুক্রবারে মিটিং হয়। কিন্তু এখন সেই মিটিংয়ে জগলুলের উপস্থিতি নেই। তার মানে, বাইরে যাওয়া মানা। অবসরে গিয়ে যেখানে আরো আনন্দে থাকার কথা জগলুলের, সেখানে বন্দি জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এটা মেনে নিতেও কষ্ট হচ্ছে সমিতির সদস্যদের। কিন্তু কিছু করার নেই। দিদার হোসেন একবার ফোনে কথা বলেছিল জগলুলের স্ত্রীর সঙ্গে, ভাবি খবর কী?
খবর ভালো, তবে জগলুর খবর জানতে চাইয়েন না, সে-ও ভালো।
এ-কথার পর কল কেটে দিলে আর কল করা ঠিক নয়। কেউ বুঝতে পারছে না ব্যাপারখানা।
জগলুল অবসরে যাবার পর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে একটি ছোট ঘর ভাড়া নিয়েছিল। মোবাইল, ঘড়ি, কম্পিউটার ইত্যাদি মেরামতের জায়গাটি ভাড়া নিয়ে জগলুল গড়ে তুলল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকেন্দ্র। পুরনো রোগীর পাশাপাশি নতুন রোগীও আসতে শুরু করল। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা- এভাবে রুটিন করে রোগী দেখতে লাগল। ছোট ছোট শিশিতে সাদা সাদা দানা দিয়ে তার মধ্যে এক-দুই ফোঁটা রস দেয়- আর এভাবেই তৈরি ওষুধ দিয়ে ভালো আয় হতে লাগল। যদিও জগলুল কখনো কাউকে ঠকিয়ে টাকা আয় করার কথা ভাবেনি, তবুও আয় বেড়ে গেল, কেননা রোগীর উপচে পড়া ভিড়। কারো কাশি, কারো গা-ব্যথা, কারো চুলকানি, কারো পেটব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি। তার ওষুধে ভালো উপকার পাচ্ছে সবাই, আবার ব্যক্তিগত আয়ও বেড়েছে। তবু দপ করে নিভে গেল এই আলোর দোকান। দপ করে, মানে রাতারাতি বন্ধ হয়ে গেল দোকানটি, দোকানটি মানে হোমিও চিকিৎসা, মানে জগলুল আহমেদের চিকিৎসা যার কোনো রেজিস্টার্ড ছাড়পত্র নেই। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা নিয়ে ভালোই তো চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই খুব অস্বস্তিতে পড়ল। জগলুলের ফোনেও ফোন করে পাওয়া গেল না। তার ফোন বারবারই বলে, দুঃখিত, এই মুহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়।
জগলুলের রোগীদের মুক্ত আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেল। কত ঝড় হলো, বৃষ্টি হলো, শিলা পড়ল, বাজ পড়ল। তারপর একদিন তারা ভুলে গেল, এই শহরে জগলুল নামে কোনো হোমিও চিকিৎসক ছিল। রোগীরা ভুললেও সমিতির লোকেরা ভুলতে পারে না। কেননা, টাকা-পয়সা সবই জগলুলের কাছে। কিছু এফডিআর করা আছে, কিছু সেভিংস অ্যাকাউন্টে, কিছু ক্যাশ আছে হাতে। এসব টাকা একত্র করে জমি কেনার কথা। এরপর ডেভেলপারকে দিয়ে বিল্ডিং করার কথা। ফ্ল্যাট ভাগাভাগি করে নেয়ার কথা। এতগুলো কথা যেখানে সমুদ্রের জলে হাবুডুবু খাচ্ছে কিংবা ধূসর মরুভূমিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে, সেখানে কথার মূল মালিক জগলুল আহমেদ অনুপস্থিত।
এর মধ্যে অবশ্য স্ত্রীর সিজ করে নেয়া মোবাইলটা জগলুল ফেরত পেয়েছে বড় ছেলে সঞ্জুর কল্যাণে। সঞ্জু বলেছে দোকান বন্ধ হয়েছে হোক, আব্বুর ফোনটা অন্তত ফেরত দাও আম্মু।
তার আম্মু শর্তসাপেক্ষে ফোন ফেরত দিয়েছে যে কোনো কথা বললে তার সামনে বলতে হবে। এটা আবার কেমন কথা যে, একজন কথা বললে আরেকজনের সামনে বলতে হবে? তবুও মেনে নিয়েছে জগলুল, ফোনটা অন্তত হাতে আসুক। যখন ঘুমিয়ে থাকবে তখন কি তাকে ডেকে তুলে সামনে বসিয়ে অন্যের সঙ্গে কথা বলবে? মনে মনে একটু হাসে জগলুল, তার হাসিতে কোনো কৃত্রিমতা নেই, কোনো দুঃখের ছাপ নেই। কেন তার স্ত্রী এত কঠোর হয়েছে বুঝতে পরে না সে। হয়তো কোনো কানকথায় তার কান ভারী হয়েছে।
এদিকে সমিতির লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে দিদার হোসেনও অবসরে চলে গেছে। সব ভার এখন তাকে দিতে চাইছে কেউ কেউ। কেউ কেউ আবার দিদারকে অতটা বিশ্বাসও করতে চাইছে না। কেননা দিদার লোকদের প্যাঁচে ফেলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অর্থ আদায় করত। পক্ষান্তরে জগলুলকে কেউ সেধেও ঘুষ দিতে পারেনি। খুব স্বাভাবিক একটি বিচার সাধারণভাবেই মনের মধ্যে সরলভাবে উপস্থাপন হয়। একজন ভালো মানুষের কদর একজন মন্দ মানুষও করতে জানে।
সমিতির পক্ষ থেকে জগলুলের বাসায় যাওয়া খুব জরুরি। এই সিদ্ধান্তের মধ্যে কেউ কেউ ঘটনার কাল্পনিক দৃশ্যে অবতীর্ণ হয়। ছালাম কাজী বলল, আমার মনে কয় জগলু ভাই ধরা খাইছে। ভাবি তারে যাঁইতা ধইরছে।- এ কথার মানে খুঁজতে চেষ্টা করে কেউ কেউ। কেউ কেউ কিছুটা আঁচ করতে পেরে হো-হো করে হাসে। বিষয়টা খোলসা করতে হয় ছালাম কাজীকে।
সমিতির অনেকেই জগলুলের রামকৃষ্ণ মিশন রোডের চেম্বারে গিয়ে দেখেছে কীভাবে চিকিৎসা করা হয়। কেউ কেউ জগলুলের কাছ থেকে ওষুধও এনেছে। দোকানটির মাঝ বরাবর অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম ও গøাস দিয়ে পার্টিশন দেয়া হয়েছে, যেটা আগে ছিল না। জগলুল এটা করেছে একদিকে রোগী বসার জায়গা এবং পার্টিশনের অপরদিকে রোগী দেখার জায়গা। সøাইডিং ডোর সরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। রোগী দেখার সময় ডোরটি টেনে বন্ধ করা হলেও লক করা হয় না। একদিকে জগলুলের ছোট একটি রিভলভিং চেয়ার এবং সামনে ছোট একটি টেবিল, যার ওপর হোমিওপ্যাথ শেখার মোটা একটি বই, কিছু ওষুধ এবং কাগজ-কলম। দেয়ালের সঙ্গে সেঁটে রাখা শেলফে আরো কিছু ওষুধপত্র। টেবিলের সামনে আরেকটি কাঠের চেয়ার, যেখানে রোগীকে বসতে দেয়া হয়। তার পাশে চিকন একটি কাঠের চৌকি ও বিছানা পাতা, যেখানে প্রয়োজনে রোগীকে শুতে হয়। তবে শোবার মতো রোগী তেমন একটা নেই। প্রায় সবাই সুস্থ সবল। তবুও চৌকি পাতার কারণ, দু-একজন রোগীও যদি আসে যাকে শোয়ায়ে দেখার প্রয়োজন হয়। ছালাম কাজী বলে যেতে লাগল আদ্যোপান্ত। এখানে অধিকাংশ রোগী মহিলা। কেউ বোরকা পরে আসে, কেউ শাড়ি পরে। কেউ সালোয়ার-কামিজ, কারো বা পরা থাকে হিজাব।
একজন মহিলা রোগী বলল, আমার পিঠে গোটা গোটা ব্রন হইছে।
জগলুল বলল, ব্রনটা কেমন দেখা দরকার।
কিন্তু মহিলার ব্লাউজ খুলে কীভাবে দেখবে সে? নামাজি ও পরহেজগার টাইপের মানুষ জগলুল আহমেদ। অবসরে যাবার পর দাড়িও রেখেছে সুন্নত পালনের উদ্দেশ্যে। সে তো বেগানা কোনো মহিলার শরীরে হাত দিতে পারে না।
মহিলাটি নিজ থেকেই বলল, সমস্যা নেই, সামনের দিকে বোতাম, আমি খুইলা দিতাছি, আপনি পিঠ দ্যাখেন, ব্লাউজ উঁচু কইরা ধইরা দ্যাখেন।
সে খুব আশা নিয়ে এসেছে, কেননা সে শুনেছে ব্রনের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ভালো কাজ করে। জগলুল তার ব্লাউজ উল্টিয়ে পিঠের ব্রন দেখে বলে, এখানে যতœ নেয়া হয় না, গোসলের সময় সাবান যায় না, ঠিকমতো ঘষামাজা করা হয় না, কচলানো হয় না। ঘাম আর ময়লা জমে ব্রন জন্মেছে, তাছাড়া খাবার-দাবারেও সমস্যা আছে।
নিম্ন মধ্যবিত্তের এই এক সমস্যা। ঠিকমতো ঘষামাজা করা হয় না, কচলানো হয় না, আবার খাবারেও সমস্যা থাকে। এমন কচলানোর প্রশ্ন উঠতেই সেখানে সøাইডিং ডোর ঠেলে ঢুকে পড়ল ভাবি। দাঁড়াও, তোমার কচলানো বের করতেছি। সেই থিকা হোমিও চিকিৎসা বন্ধ হইয়া গেল জগলুল ভাইয়ের।
এমন কথায় মজা পেয়ে কেউ কেউ হাসতে থাকল। কেউ কেউ বলল, ঘটনা সত্য হইতে পারে। আনছার আলী বলল, আমার মনে কয় এই রকম ছোট ব্যাপারে ভাবি এত রাগ হইতে পারে না যে, নিজের ব্যবসা গুটায়া নিবি। তাইলে ঘটনা কী? ঘটনা পিঠে নয়, বুকে। এক মহিলা বলল তার বুকে ব্যথা। স্বভাবতই জগলুল ভাই জিগ্যেস করল, বুকের কোনখানটায় ব্যথা? মহিলা কইল, কেমনে যে আপনেরে কই-। মহিলা ইতস্তত বোধ করলে জগলু ভাই বলল, ডাক্তারের কাছে অসুখ গোপন করা ঠিক না। তখন সেই মহিলা বলল, ব্যথা তার দুই বুকের চূড়ায়। বোঁটা দুইডায় হাত রাখা যায় না। কিন্তু ডাক্তার হাত দিয়া না দেখলি চিকিৎসা করবি কেমনে? ব্লাউজ খুইলা যখন জগলুল ভাই দুধে হাত রাখছে, ঠিক তখন ভাবি গিয়া হাজির।
আরেক দফা হাসির বন্যা বয়ে গেল। সবার হাসি থামার আগেই দিদার হোসেন বলল, তোমরা মিয়া অন্ধকারে ঢিল ছুড়লা-। আসল খবর আছে আমার কাছে। সবাই উৎসুক হয় দিদারের কথা শোনার জন্য। আসল খবরটা আসলে কী সেটা জানা যেন অনেক জরুরি। দিদার খুব আগ্রহভরে বলে, হ মিয়ারা, আসল খবর। একদিন- তখন সাড়ে ৭টা বাজে। রোগী দেখা শেষ কইরা জগলুল ভাই উঠি-উঠি করতেছে। তখন এক মহিলা আইসা হাজির। বেশি সাজগোজ নাই, না হিজাব, না বুরকা। সুন্দরী মহিলাকে সিম্পল শাড়িতেই বেশি সুন্দর লাগতেছে। জগলুল ভাই জিগ্যেস করল, আপনার সমস্যা কী বলেন? মহিলাটি তার সামনে নড়েচড়ে বসল। নড়াচড়ার ভঙ্গিটিও আকর্ষণীয়। সে কইল, আমার অসুখটার কথা আমার স্বামীরেও কইতে পারতেছিনে। রাইতের কাম শ্যাষ হইলে সে কয় গন্ধ লাগে, বিশ্রী গন্ধ। এটা একটা রোগ বটে। জগলুল ভাই ভাবতে থাকে। তারপর? সাদা সাদা স্রাব ভাঙে। জগলুল ভাই এবার নিজেই লজ্জা পায়। সে বলে, আপনার বয়স তো ত্রিশের বেশি না। ৫ বছর হইল বিয়া হইছে। এখনই এমন রোগ বাধায়া নিছেন? কী আর করা? মহিলাটি আবার বলে, ঐডার উপর দিয়া কালো হয়া গেছে। জগলুল ভাই চিন্তায় পড়ে যায়। এত ফরসা মানুষের ঐখানে আরো সাদা ধবধবে থাকনের কথা। সেইখানে কালো হইছে। কেমন কালো, কেমন স্রাব- সবই দেখা দরকার। মহিলাটি বলল, যেমনে খুশি দ্যাখেন, কিন্তু রোগ সারবি কিনা কন? মহিলার আশ্বাস পেয়ে জগলুল ভাই বলল, ঐ বিছানায় শুয়ে পড়–ন, আমি দেখতেছি। মহিলাটি বিছানায় শুয়ে নিজেই তার শাড়ি উল্টিয়ে ধরল। রোগের কাছে লাজ-শরম নাই। জগলুল ভাই বাম হাতে টর্চ মেরে দেখতে লাগল আর ডান হাত দিয়ে জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করতে লাগল। এ রকম পর্যবেক্ষণে মহিলাটি আরাম বোধ করছিল। সে বলল, ভেতরে ঢুকাইতে পারেন। এটা দিয়ে সে হাত ঢোকানোর কথা বলছিল, কিন্তু সে সময় ভাবি গিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠল, এইখানে ঢোকানোর কাজও হয়? ছি- ছি-। জগলুল ভাইয়ের হাত থিকা টর্চ পইড়ে গেল। মহিলাটি লাফ দিয়া উইঠা শাড়ি ঠিক করতি লাগল। প্লাস্টিকের হ্যান্ড গøাভস পরা ডান হাতটি নিয়ে জগলুল ভাই কী করবি বুঝতি পারতেছে না। কেননা ঐ হাতটি দিয়ে সে পরীক্ষায় ব্যস্ত ছিল। হাত নাড়িয়ে বলল, তুমি এইখানে আইছো ক্যান? ভাবি বলল, গোপন সূত্রে খবর পাইছি।
ছালাম কাজী বলল, খবরটা কি তুমি দিছিলা দিদার ভাই?
ছালামের কথায় সবাই হেসে উঠল। এরই মধ্যে দিদারের কাছে জগলুলের ফোন এলো। দিদার বলল, সবাই চুপ করো। জগলুল ভাই ফোন দিছে।
দিদার ফোন রিসিভ করে বলল, কী খবর জগলুল ভাই, তোমার তো কোনুই সাড়া নাই।
জগলুল বলল, আমার মাইয়া বেড়াতি আইছে আমার বাসায়। হ্যাঁ শোনো, সেই মাইয়া- যার বিয়াতে তোমরা দাওয়াত খাতি আইছিলা সেই মাইয়া। তার তো মাইয়া হইছে। এখন নাতিডার জন্য কিছু কিনতি হবি, তাই বাইরে বার হইছি।
দিদার বলল, নিষেধাজ্ঞা উইঠা গেছে?
টুট শব্দে লাইন কেটে গেল। দিদার কল দিয়ে ব্যস্ত পেল, মনে হলো জগলুল ভাই আবার কল দিচ্ছে। কিন্তু আর কল এলো না। এরপর কল দিলে আগের মতোই কণ্ঠস্বর শোনা যায়- দুঃখিত, এই মুহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়