গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

রুটিন হোক শিক্ষার্থীবান্ধব

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত-অনিয়মিত পরীক্ষার সময়সূচি গত ২০ মার্চ প্রকাশ করেছে। আগামী ১৯ মে পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। পরীক্ষার সময়সূচি এমনভাবে করা হয়েছে যে একটি পরীক্ষা দেয়ার পর পরবর্তী পরীক্ষার মাঝে মাত্র একদিন সময় হাতে পাওয়া যাবে এবং বলা যায় কোনো পরীক্ষার আগেই একদিনের বেশি বন্ধ নেই। এমন রুটিন পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন এবং একই সঙ্গে এমন অদ্ভুতুড়ে পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।
স্নাতক শেষ বর্ষের রুটিন অনেকটা তড়িঘড়ি করেই প্রকাশ করেছে বলা যায়। কারণ রুটিনে ২৩ মে’র পরীক্ষার তারিখ ২০২৫ সালের ২৩ মে হিসেবে দেখা যায়। পরীক্ষার রুটিনে এমন ভুল দেখার পর তা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয় এবং বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনরা নানাভাবে ট্রল করতে থাকে। চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীরা রুটিনে এমন ভুল পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিল যে অন্ততপক্ষে এই ভুল সংশোধনের জন্য হলেও রুটিন পরিবর্তন করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের আশা ভঙ্গ করে শুধু ২৩ মে, ২০২৫-এর জায়গায় ২৩ মে, ২০২৪, এতটুকু পরিবর্তন করে খুব দ্রুতই নতুন রুটিন প্রকাশ করে। ইতোপূর্বেও অনেক বিজ্ঞপ্তিতে এ রকম ভুল দেখা গেছে।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষ বা চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষেই সবচেয়ে বেশি সাবজেক্ট এবং সর্বোচ্চ ক্রেডিট, যা প্রায় অনার্স প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের গড় ক্রেডিটের সমান বলা যায়। ফলে এ ফলাফল শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফলাফলেই প্রভাব ফেলবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষায় একদিনের ছুটিতে বিশাল সিলেবাস রিভিশন দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা অকল্পনীয় ব্যাপার। আর শেষ বর্ষে কোনো পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে শুধু এই পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ এক বছর অপেক্ষা করতে হবে এবং আশানুরূপ ফল না পেলে পরবর্তীতে পরীক্ষা দিয়েও ফলাফল ভালো করার সুযোগ থাকছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর দায় কে নেবে?
সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড পরীক্ষা হয় জেলা শহরের কলেজগুলোতে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দূর-দূরান্ত থেকে জেলা শহরে পরীক্ষা দিতে আসে। তাই স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষার দিন পুরোটাই যাতায়াত এবং বিরতিহীনভাবে ৪ ঘণ্টা পরীক্ষা দিতেই শেষ হয়ে যায়। পরীক্ষার পর বাসায় পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়ার পর পুনরায় পরের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা, যা সত্যিই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। পরীক্ষা দিয়ে আসার পর পরীক্ষার্থীদের বিশ্রামের জন্যও একটু সময় মিলবে না।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কবল থেকে মুক্ত করতেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে সেশনজটমুক্ত করতে চতুর্থ বর্ষ বাদে অন্যান্য বর্ষের পরীক্ষা এমন রুটিনে নিলেও খুব সমস্যা হবে না। তারা অকৃতকার্য হলে বা তাদের মান উন্নয়নের জন্য পরবর্তী বর্ষে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকবে, তবে যেহেতু চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরবর্তীতে কোনো বর্ষ নেই এবং পরীক্ষার দেয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না; তাই পরীক্ষার মাঝে অন্তত ২-৩ দিন বন্ধ রাখলেই পরীক্ষার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকবে না।
এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ২০২২ সালের পরীক্ষার সময়সূচি যত দ্রুত সম্ভব পরিবর্তন করে পরীক্ষার মাঝে অন্তত ২ দিন বন্ধ রেখে পুনরায় সময়সূচি প্রকাশ করবে। এমনটাই প্রত্যাশা সারাদেশের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপমুক্ত হয়ে সতেজ মনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রত্যাশিত ফল অর্জন করতে পারবে। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

বরকত আলী : শিক্ষার্থী, দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়