কাগজ প্রতিবেদক : ব্রাজিলকে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক (আরএমজি) আমদানির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে আরএমজি পণ্য তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সীমিত পরিসরে ব্রাজিলে রপ্তানি করা হচ্ছে। দেশটি সরাসরি এই পণ্য আমদানি করলে ব্রাজিলের জন্য এটি আরো সাশ্রয়ী হবে। গতকাল সোমবার সকালে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
স্পিচ রাইটার বলেন, বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য ব্রাজিলের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে বিপুল পরিমাণ চিনি, সয়াবিন তেল ও তুলা আমদানি করে। বাণিজ্যিক ভারসাম্য নিশ্চিত করতে ব্রাজিল বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়াজাত পণ্যসহ আরো পণ্য আমদানি করতে পারে। বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে। তিনি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ব্রাজিল একই মত পোষণ করে। তিনি গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ, ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় এমনকি হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ নিহত হয়েছে। নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরাও হামলা থেকে রেহাই পাননি। প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধার

সঙ্গে স্মরণ করেন যে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ হিসেবে ব্রাজিল প্রথম ১৯৭৩ সালের ১৫ মে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্রাজিলের সহায়তা চেয়েছেন। সাক্ষাৎকালে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামসংবলিত তার দেশের জাতীয় ফুটবল দলের জার্সিও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিও ডি জেনিরোতে ২৪ জুলাই অনুষ্ঠেয় ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে একটি বৈশ্বিক জোট গঠনে জি-২০ টাস্ক ফোর্সের চূড়ান্ত বৈঠকে যোগ দিতে তার দেশের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার একটি আমন্ত্রণপত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন। মাউরো ভিয়েরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ব্রাজিল উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায়।
ব্রাজিলের মন্ত্রী বলেন, ব্রাজিল ও বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমপরিমাণ এবং উভয় দেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি গাজা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করে বলেন, তার দেশও গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে।