গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

ঈদ মোবারক : সৌহার্দ ও সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হোক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এক মাস কঠিন সংযম সাধনার পর এক অনাবিল আনন্দের মহাসম্মিলন ঘটে ঈদে। আজ পশ্চিম আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ উদযাপিত হবে। ঐক্যের পথে, কল্যাণের পথে, ত্যাগ ও তিতিক্ষার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত করে ঈদুল ফিতর। বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে এ উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয়। ঈদগাহে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার এক কাতারে নামাজ আদায় শেষে কোলাকুলির মাধ্যমে স্থাপিত হয় মহান এক সামাজিক সাম্য। বাঙালি মুসলিম জীবনে ঈদ শুধু ধর্মীয় উৎসব হিসেবে আসে না, এটা হয়ে পড়ে সর্বজনীন আনন্দ উদযাপনের উপলক্ষ, যার দৃষ্টান্ত বিশ্বে বিরল। এদিনে সবাই সজ্জিত হন নতুন পোশাকে, সবার ঘরেই থাকে বিশেষ খাবারের আয়োজন। পাড়া-মহল্লায় থাকে নানা আনন্দ আয়োজন। ঈদের আনন্দে সবার সমান অংশগ্রহণ থাকার কথা থাকলেও তা হয়ে ওঠে না বৈষম্যের কারণে। আমাদের দেশে দিন দিন ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। এ বৈষম্য যে কোনো সর্বজনীন উৎসবের আনন্দকে ক্ষুণ্ন করে। আমরা লক্ষ করি, একদিকে এক শ্রেণির মানুষ অঢেল সম্পদের মালিক আর আরেক শ্রেণি বিত্তহীন। বিত্তহীন অনেক পরিবারের সদস্যরা তিন বেলা ভালোমতো খেতে পর্যন্ত পান না আর বিত্তবানরা অপ্রয়োজনীয় ব্যয়বাহুল্যের মধ্য দিয়ে দৃষ্টিকটুভাবে অর্থ-বিত্তের প্রদর্শন ঘটান। ঈদুল ফিতরের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হলো সামর্থ্যবানদের দ্বারা ফিতরা-সদকার মাধ্যমে গরিবের হক আদায় করা। ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা দেয়ার নিয়ম। ফিতরার উদ্দেশ্য দারিদ্র্যের কারণে যাতে কেউ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। সচ্ছলরা সঠিক নিয়মে জাকাত-ফিতরা দান করলে দরিদ্ররাও ঈদের খুশির ভাগ পেতে পারে। রমজান সংযমের মাস হলেও অনেকে খাওয়া-দাওয়া ও কেনাকাটার পেছনে অঢেল অর্থ ব্যয় করেন। দরিদ্র স্বজন বা প্রতিবেশীর প্রতি তারা কোনো দায়িত্ব পালন করেন না, ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত থাকেন। এটি ইসলামের বিধানের পরিপন্থি। ঈদ উদযাপনের সময় আমাদের এ কথাটিও মনে রাখতে হবে। ইসলাম শান্তি এবং সম্প্রীতির কথা বলে। অথচ আমরা দেখছি এখন সারা বিশ্বের মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোতে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের ব্যাপক উত্থান, সন্ত্রাস, সহিংসতায় এক অরাজক ও অমানবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঈদ এসেছে শান্তির বারতা নিয়ে। কামনা করছি, দেশে-বিদেশে কারো জন্য আনন্দের ঈদ যেন বিষাদে পরিণত না হয়। বাংলাদেশে ঈদ উদযাপনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- যে যেখানেই অবস্থান করুন ঈদের সময় নিজ নিজ পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যে যাওয়া। শত প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে শহরবাসী নাড়ির টানে ছুটে যান গ্রামে। ইতোমধ্যে নিশ্চয় ঘরে ফেরা হয়ে গেছে অনেকেরই, অনেকে যাচ্ছেন আজ। আমাদের প্রত্যাশা, সবার ঈদ উদযাপন নিরাপদ ও নির্বিঘœ হবে। সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে ঈদের আনন্দের সওগাত। ভেদাভেদ ভুলে, হিংসা-বিদ্বেষ ছেড়ে মিলনোৎসবে সবাই দাঁড়াবে এক কাতারে। সৌহার্দ ও সম্প্রীতির বন্ধন হবে সুদৃঢ়। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়