ডায়েট ভুলে জমিয়ে খান নুসরাত

আগের সংবাদ

অভিযানে কোণঠাসা কেএনএফ

পরের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে পৃথক তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র লুট, থানায় হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাহাড়ে গতকাল থেকে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযান জরুরি ছিল। এর আগে গত বছর র‌্যাব পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও মৌলবাদবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র বিপুলসংখ্যক অনুসারী ও শীর্ষ নেতাকে আটকের পর বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলোর গড়ে ওঠা নেটওয়ার্ক অনেকটা ভেঙে যায়। স্থানীয়দের ধারণা, এবারের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান এ অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসীদের নির্মূলে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে যৌথ বাহিনী। রুমা ও থানচির সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো যে অত্যন্ত উদ্বেগজনক, তা বলাই বাহুল্য। এসব নিছক অপরাধই নয়, পাহাড়ে শান্তি ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপও বটে। ২০২২ সালের গোড়ার দিকে কেএনএফের নাম নজরে আসে, আসতে থাকে তাদের নানা তৎপরতার খবর। মূলত ফেসবুকে পেজ খুলে এই গোষ্ঠী তাদের অস্তিত্বের জানান দেয়। সঙ্গে ছিল সশস্ত্র তৎপরতা। বান্দরবানের বম জাতিগোষ্ঠীর কিছু ব্যক্তি এটি গড়ে তুলেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। কেএনএফ ফেসবুক পেজে দাবি করে, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান অঞ্চলের ছয়টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে তারা। তারা রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম- এই উপজেলাগুলো নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করে। তাদের কল্পিত সেই ‘রাজ্যের’ মানচিত্রও তাদের পেজে দিয়ে দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা একাধিক বিবৃতিতে কথিত এই সংগঠন জানায়, কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র দল গঠন করেছে তারা। তাদের মূল সংগঠনের সভাপতি নাথান বম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করছেন, কেএনএফ পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার এবং অপহরণ ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। পুরো বম জনগোষ্ঠীকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকাণ্ডের খেসারত দিতে হচ্ছে। কেএনএফের সঙ্গে বম জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর একটি সংখ্যা জড়িয়ে পড়েছে। কেএনএফ তাদের নানাভাবে বাধ্য করেছে। কিছুদিন পরপরই অশান্ত হয়ে উঠছে পার্বত্যাঞ্চল। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের নামে সক্রিয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলো নিজেরাই পারস্পরিক দ্ব›েদ্ব লিপ্ত থাকছে সব সময়। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত চলছে বন্দুকযুদ্ধ ও অপহরণের ঘটনা। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় সে সময়কার বিচ্ছিন্নতাবাদী শান্তি বাহিনীর ২ হাজার সশস্ত্র কর্মী অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। অবসান ঘটে অব্যাহত রক্তপাতের। দুঃখজনক ব্যাপার, নতুন নতুন শঙ্কা নিয়ে পাহাড়িদের বসবাস করতে হচ্ছে। হঠাৎ করে কেএনএফ পাহাড়ে মাথা গজিয়ে উঠল, কেন এমন ঘটনা তার তদন্ত করা উচিত। পরিস্থিতির আর যেন অবনতি না হয় যৌথ অভিযানের মধ্য দিয়ে যেন স্বস্তি ফিরে আসে। পাহাড়ে সহিংসতার এক বড় কারণ সেখানে অস্ত্রের সহজলভ্যতা। বিস্তীর্ণ অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে অবাধে অস্ত্র প্রবেশ করে। তাই অরক্ষিত সীমান্ত সুরক্ষিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়