আজকের খেলা

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

পরের সংবাদ

লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখুন

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশজুড়ে এখন মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে। চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। এর সঙ্গে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। সারাদেশে লোডশেডিং ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গণমাধ্যমে খবর আসছে, গ্রামাঞ্চলে ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ইফতার ও সেহরির সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না। বিঘিœত হচ্ছে সেচসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম। রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছিল। ইফতার ও সেহরির সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) তথ্যমতে, এখন বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট, যা সামনে বেড়ে সাড়ে ১৭ হাজার হতে পারে। তবে গত দু-তিন দিন সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। যদিও উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার মেগাওয়াট। জ¦ালানি সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতে না পারায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ না বাড়লে সামনে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পেট্রোবাংলা বলছে, এখন দিনে ২৬৪ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে এলএনজি থেকে ৬০ কোটি ঘনফুট মিলছে। একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় কমপক্ষে ২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম পাচ্ছে। এ টার্মিনাল চালু হলে গ্যাস সরবরাহ বাড়তে পারে। গত মাসে সামিটের টার্মিনালটি চালুর কথা থাকলেও গ্যাস সরবরাহ এখনো শুরু করেনি। অতীতে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিল, সরকার লাভও করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে জ¦ালানি তেলের দাম বেড়ে গেলেও এখন কমতির দিকে। এলএনজির দামও কমেছে। কিন্তু ডলার সংকটে পড়ে কয়লা আমদানি করতে না পারায় দুই দফা বন্ধ রাখতে হয়েছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। বন্ধ হওয়ার পথে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হতে হলে তেল, গ্যাস ও কয়লার সরবরাহ নির্বিঘœ করতেই হবে। বর্তমানে সাধারণ মানুষের কাছে এটা একটা বড় প্রশ্ন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সম্পূর্ণ সক্ষম থাকার পরও কেন আমাদের দিনের পর দিন লোডশেডিংয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এ সক্ষমতা অর্জনে প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে, আরো হচ্ছে। ফলে জাতীয় গ্রিডে আরো নতুন সক্ষমতা যোগ হতে যাচ্ছে। তা হলে সাধারণের ভাগ্য বদল কবে হবে। দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায়ও সমস্যা রয়েছে। দেশের অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনের অবস্থা বেহাল ও জরাজীর্ণ। সঞ্চালন লাইনে বড় ধরনের বিভ্রাটের কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল- এমন নজিরও আছে। সঞ্চালন লাইন শক্তিশালী করতে নেয়া প্রকল্পগুলোর সার্বিক অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে আগামী দিনে দেশবাসী বিদ্যুৎ খাতের প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হবে। প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সভ্য জগতের অপরিহার্য অনুষঙ্গ বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ছাড়া এক মুহূর্তও স্বস্তিতে থাকার বিষয় কল্পনাও করা যায় না। বিশ্বের সব দেশই বিদ্যুতের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। গুরুত্ব বিবেচনায় আমাদের সরকারও দেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। এই সাফল্যের সঙ্গে সবার চাহিদামতো বিদ্যুৎপ্রাপ্তির বিষয়ও নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যাতে চলমান রমজান এবং আগামী ঈদ স্বস্তির সঙ্গে উদযাপন করতে পারে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়