আজকের খেলা

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

পরের সংবাদ

বরিশালে রোজাদারদের পছন্দের শীর্ষে দই-চিড়া : তরুণরা ঝুঁকছে আধুনিক খাবারে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম. কে. রানা, বরিশাল থেকে : কম-বেশি প্রতিটি অঞ্চলে ইফতার আয়োজনেই থাকে নিজস্ব কিছু পদ। নিজস্ব স্বাদ আর ঐতিহ্যের গুণে এগুলো হয়ে ওঠে জনপ্রিয়। বরিশাল অঞ্চলে দই, চিড়া আর মুড়ি দিয়ে তৈরি ইফতারি করার রেওয়াজ আজও চালু রয়েছে। এছাড়া বরিশাল অঞ্চলের ইফতারের জনপ্রিয় আরেকটি পদ হলো দুধপুলির পাটিসাপটা পিঠা। এ দুটি পদ ঘরে তৈরি হলেও এখন দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবার বরিশালের ইফতার বাজারে ব্যতিক্রম ও আলোচিত আইটেম হচ্ছে ‘মাটন খেপসা’। ইতোমধ্যে ভোজনরসিকদের মাঝে খাবারটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আরব দেশের জনপ্রিয় এই খাবারটি তৈরি করে আলোচনায় এসেছে নগরীর চৌমাথা এলাকার আরাবেল্লা রেস্টুরেন্ট। খেপসা মূলত ইয়েমেনি খাবার। আরব দেশগুলোতে সবাই এটি পছন্দ করে। খেপসা হচ্ছে বাসমতী চাল ও বিশেষভাবে তৈরি মাংসের মিশ্রণ। চিকেন, বিফ, মাটন এমনকি মাছ দিয়েও খেপসা তৈরি করা হয়। বিশেষ এই আইটেম প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আস্ত খাসির আকার ভেদে ৯ হাজার টাকা থেকে শুরু।
এছাড়া এখানে খাসির লেগ রোস্ট, মান্দিসহ বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় খাবার পাওয়া যাচ্ছে। আর জনপ্রিয় এই খাবার তৈরি করছে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা দেশি ও এরাবিয়ান খ্যাত সেফ মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, এরাবিয়ান ও ইন্ডিয়ান খাবারের স্বাদ দিতে এবার বরিশালের ইফতার বাজারে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকার চকবাজারের মতো বরিশালে ইফতারের ঐতিহ্যবাহী কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারপরও গত কয়েক বছর ধরে নামিদামি কিছু খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ বরিশাল নগরীর ইফতার বাজারকে চাঙা করে রেখেছে। এরই মধ্যে নগরীর ঐতিহ্যবাহী নাজেমস, আরাবেল্লা, রোজ গার্ডেন, গার্ডেন ইন রেস্তোরাঁ, লেক ভিউ, হান্ডি কড়াই, হট প্লেট, তাওয়া, জাফরান, হুমাহুম, রিভার ক্যাফে, রয়েল, আকাশসহ বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলে রয়েছে ইফতার বাজার। এসব রেস্তোরাঁগুলোতে খুচরা ইফতার বিক্রির পাশাপাশি বেসিক, প্লাটিনাম, প্রিমিয়ামসহ নানা নামে প্যাকেজ ইফতার বিক্রি করে আসছে।
এরই মধ্যে নগরবাসীর কাছে ইফতার বাজারের বিভিন্ন প্রকারের হালিম, মোরগ ও মুরগি মাসাল্লাম, খাসির লেগ রোস্ট, তেহারি, বিরিয়ানি, বোরহানি, শাহি জিলাপি ও জর্দা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরের চেয়ে এবার ইফতার আয়োজনে অনেকটা নতুনত্বের ছোঁয়া থাকলেও দামটাও গত বছরের থেকে একটু বেশি এবং বিভিন্ন পণ্যের আকারও ছোট হয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ইফতারসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। নগরীর গীর্জা মহল্লা এলাকায় দধিঘরে আসা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম

বলেন, বাবা-মায়ের পছন্দ দই-চিড়া। তাই তিনি নিয়মিত এখান থেকে দই-চিড়া কিনেন। প্রবীণ ক্রেতা শুক্কুর আলী বলেন, সারাদিন উপোস থেকে শরীরকে সতেজ রাখতে দই-চিড়ার বিকল্প নেই। তাছাড়া হোটেল-রেস্তোরাঁয় উন্নত খাবারের নামে যা বিক্রি হয়, তা খেয়ে অস্বস্তি বাড়ে।
নগরীর হটপ্লেট রেস্তোরাঁয় এসেছে জিহাদ, আরাফাত, সোলে, রাতুল, মিরাজ, এনামসহ আরো বেশ কয়েকজন বন্ধু। তাদের পছন্দ মাটন বিরিয়ানি। তারা বলেন, আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও একটু ভিন্ন স্বাদের ইফতার করছি।
বগুরা রোডের নাজেমস রেস্তোরাঁর হৃদয় জানান, তাদের এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের তেহারি ও বিরিয়ানি। এটা সারা বছর ধরেই নিজস্ব জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। এর বাহিরে রমজানে বেশি চলছে স্পেশাল হালিম, মুরগি মাসাল্লাম, খাসির রান, কালাভুনা, জিলাপি। বিগত সময়ের মতো এবারও প্রথম দিন থেকেই স্পেশাল এসব আইটেম ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে।
আরাবেল্লার জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ মো. জাবেদুর রহমান জানান, প্রথম দিন থেকেই তাদের ইফতারসামগ্রী বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ইফতারিতে এখানে মাটন খেপসা, কাচ্চি বিরিয়ানি, মোরগ পোলাও, মুরগি মোসাল্লাম, খাসির রান রোস্ট, চিকেন বারবিকিউ, বোরহানি, ফিরনি, হালিম, বিভিন্ন ধরনের পিঠা, চিকেন পুলিসহ বিভিন্ন আইটেম বিক্রি হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়