সাবের হোসেন চৌধুরী : বনের জমি দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও ছাড় নয়, বন কর্মকর্তার খুনিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

আগের সংবাদ

সর্বাত্মক অভিযানে যৌথবাহিনী

পরের সংবাদ

সার্টিফিকেট বিক্রিতে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জড়িত : ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টাকার বিনিময়ে আসল সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
জালিয়াতি করে সার্টিফিকেট বিক্রির বিষয়টি বোর্ডের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা জানতেন। এর সঙ্গে বোর্ডের লোকজনসহ অনেকে জড়িত। তাদের ম্যানেজ করেই চলত জালিয়াতি। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে কারিগারি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান পায় ডিবি। এই সার্টিফিকেট কিন্তু জাল নয়। সরকার যে কাগজ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয়, শামসুজ্জামান একই কাগজ ব্যবহার করে সার্টিফিকেট বানাত। অর্থাৎ তিনি শিক্ষা বোর্ড থেকে কাগজ এনে বাসায় বসে সার্টিফিকেট বানাতেন। তারপর রেজাল্ট অনুযায়ী টাকা নিতেন, তবে ৩৫ হাজারের কমে কোনো সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন না তিনি।
সার্টিফিকেট বানানোর পর সেই রেজাল্টের তথ্য শিক্ষা বোর্ডের সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। এসব সার্টিফিকেট দিয়ে অনেকে বিদেশে গেছেন, অনেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, আবার অনেকে চাকরি করছেন। এভাবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট বিক্রি করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, গ্রেপ্তারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ সে অনেক চমকপ্রদ তথ্য দিচ্ছে।
শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদ তৈরির কাগজ কীভাবে বের করত এই প্রশ্নের জবাবে শামসুজ্জামান ডিবিকে জানিয়েছেন, বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করতেন। সবার সঙ্গে যোগসাজশ করে কাগজ বের করতেন। এমন কি তার এই সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার বিষয়ে অনেক সাংবাদিকরাও জানতেন। সবাই তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তার অপরাধ গোপন রাখতেন।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, শামসুজ্জামান অবৈধভাবে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়ে অভিযোগ উঠলে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। বোর্ডের কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে দেখলেন অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে। ফলে সেটাও ধামাচাপা দেয়া হয়। নিজেরা না বোঝার দোহাই দিয়ে অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কম্পিউটার কাউন্সিলে। তারাও বিষয়টি ধরতে পেরে চুপ হয়ে যান।
জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান আরো জানান, সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সবাই জানতেন। টাকার বিনিময়ে সবাই তার কাছে ম্যানেজ করে আসল সার্টিফিকেট বানিয়ে সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। তার কাছ থেকে কারা কারা সার্টিফিকেট কিনেছেন, সেগুলো জানার চেষ্টা চলছে। এছাড়াও এই চক্রের সঙ্গে কোনো রাঘববোয়াল জড়িত থাকার তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়