সায়মা ওয়াজেদের কারণে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে : বাহাউদ্দিন নাছিম

আগের সংবাদ

পাহাড় জনপদে আতঙ্কের ঢেউ

পরের সংবাদ

শ্রমিকদের বেতনভাতা দ্রুত পরিশোধ করুন : ঈদের আগে অসন্তোষ কেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

প্রতিবার ঈদের আগে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিয়ে সম্পাদকীয় লেখা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। ঈদের বোনাস এবং শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে কোনো তালবাহানা অগ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে ঈদের আগে মহাসড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ করতে দেখা যায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের। আবার এসব আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটে। আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা, কুমিল্লা ও সিলেট- এই আটটি শিল্প অধ্যুষিত এলাকায় অধিকাংশ কারখানা। এসব শিল্প এলাকায় প্রতি বছর দেখা যায় ঈদের আগে বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করলে তা জনগণের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে ওঠে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনই দিতে পারেননি ৫০-৬০টি কারখানার মালিক। গাজীপুরের কেয়া স্পিনিং মিলের ৮ হাজার শ্রমিকের দুই মাসের বেতন, বোনাস ও আর্নলিভের টাকা দেয়নি কেয়া স্পিনিং মিল কর্তৃপক্ষ। এ কারণে গত তিন দিন ধরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুর, টঙ্গী বিসিক, কোনাবাড়ী, কাশিমপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকার ৭-৮টি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছেন বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে। এর বাইরে ঢাকার মিরপুর, সাভার, আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জের বেশ কিছু কারখানায়ও বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এভাবে বেতন-বোনাসের দাবিতে ঈদের আগে অসন্তোষ বাড়ছে পোশাক শিল্পে। শিল্প মালিকরা বলছেন, নানা কারণে ব্যবসা ভালো নেই। অনেক কারখানায় কাজ নেই। এ জন্য বেশ কিছু কারখানা মালিক অর্থ সংকটে আছেন, বেতন-বোনাস দিতে সমস্যা হচ্ছে। তারা চেষ্টা করছেন, অর্থ জোগানের ব্যবস্থা হলে শ্রমিকদের পাওয়া পরিশোধ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রণোদনা বাবদ প্রায় ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে মালিকরা জানান। তারা দ্রুত প্রণোদনা ছাড়ার অনুরোধ করেন। বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ এবং দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ জোগান দেয় এই খাত। এই বিপুল মুনাফার জোগান আসে মূলত শ্রমিকদের সস্তা শ্রম থেকে। বছরের পর বছর সরকার বাজেটের মাধ্যমে গতানুগতিক পথে। এছাড়া বিভিন্ন অর্থনৈতিক অজুহাতে এই শিল্পের মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা লেগেই থাকে। আমরা এর আগেও সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করেছিলাম, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২ কোটি মানুষ এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ এ অবদান সত্ত্বেও পোশাক শিল্পকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি। এ খাতের ওপর বারবার আঘাত এসেছে। এরপরও অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাক শিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাই নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা, বেতনের নিশ্চয়তা। বেতন-বোনাস সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে আবারো শ্রমিক অসন্তোষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঈদের আগে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়