সায়মা ওয়াজেদের কারণে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে : বাহাউদ্দিন নাছিম

আগের সংবাদ

পাহাড় জনপদে আতঙ্কের ঢেউ

পরের সংবাদ

বুয়েটে প্রগতিশীল রাজনীতি চায় ছাত্রলীগ, পক্ষে অনেকে : নিজেদের অবস্থানে অনড় ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সমর্থক শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি চালুর পক্ষে। তাদের মতে প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতি না থাকায় সেখানে ‘অন্ধকার রাজনীতি’ জন্ম নিচ্ছে। অন্যদিকে বুয়েট ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি প্রবেশ করতে না দেয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আন্দোলনরত ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’। গতকাল বুধবার বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগপন্থি শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগসহ সব ধরনের প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসে চালু থাক সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এখানে ছাত্রদল বা অন্যান্য সংগঠন কমিটি দিলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা শুধু চাই, এখানে কোনো অন্ধকার রাজনীতি না থাকুক।
এ সময় কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম বলেন, প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির পক্ষে এর আগে সংবাদ সম্মেলন করার পর থেকে আমরা নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার। ফেসবুক গ্রুপে আমাদের নানাভাবে ছবিসহ হেনস্তা করা হচ্ছে। আমাদের বাসায় ফোন যাচ্ছে এবং হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এজন্য আমরা উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি সব ধরনের প্রমাণসহ যাতে এ ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হয়।
এদিকে, সন্ধ্যা ৭টায় ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বুয়েটের ছাত্ররাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনরত ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, গত দুদিন ধরে জনমত নিরীক্ষণের জন্য আমরা আমাদের নিজ নিজ ‘ইনস্টিটিউশনাল মেইল’ ব্যবহার করে ছাত্ররাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষে অনলাইনে ভোটগ্রহণ করি। এতে মোট ৫ হাজার ৮৩৪ জনের মধ্যে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে স্বাক্ষর দিয়েছে ৫ হাজার ৬৮৩ জন। অর্থাৎ, ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।
বুয়েট ইস্যুতে ছাত্রদলের অবস্থানের বিষয়ে তারা বলেন, আমাদের অবস্থান কোনো একক ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়। আমরা ছাত্ররাজনীতি-ই ক্যাম্পাসে প্রবেশের বিরুদ্ধে। অতএব, এটি করতে চায় এমন যে কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধেই আমাদের অবস্থান সমান এবং অনড়। এছাড়া বুয়েট ইস্যুতে ছাত্রদলের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ উল্লেখ করে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে তা প্রত্যাখ্যান করে তারা আরো বলেন, ৩ এপ্রিলে বুয়েট ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অবস্থান স্পষ্টকরণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহাবস্থানের দাবিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সংগঠনটি বলছে, ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠন হিসেবে সুস্থ ধারার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনীতি চর্চায় বিশ্বাসী। ছাত্রদল বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ক্যাম্পাসে অপরাজনীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে।
আন্দোলনরত ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’ বলেন, ‘আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা, ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে চলমান আন্দোলনের এই সংকটপূর্ণ মুহূর্তে ছাত্রদলের এমন বক্তব্যকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করি এবং তাদের এই রাজনৈতিকভাবে মদতপুষ্ট সংহতিকে আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ তাদের লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ২০২০-এর জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে ছাত্রদল যখন বুয়েটে তাদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে তখনো আমাদের তৎকালীন অগ্রজ ব্যাচ ‘পৌনঃপুনিক ১৫’ তাদের এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে এবং ভিসি ও ডিএসডব্লিউ বরাবর তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করে। আরো উল্লেখ্য যে, হিজবুত তাহরীর মতো নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠনের অস্তিত্বকেই আমরা সমর্থন করি না। সেখানে এরূপ নিষিদ্ধ সংগঠনের সমর্থন বা সহানুভূতি গ্রহণ করার প্রশ্নই আসে না।
চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার যে কোনো সম্ভাব্য প্রচেষ্টাকে ধিক্কার জানিয়ে তারা আরো বলেন, পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো সংগঠনও যদি এমন বক্তব্য দিয়ে আমাদের আন্দোলনের দাবি এবং অবস্থানকে ঘোলাটে করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় আমরা তাদেরও প্রত্যাখ্যান করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়