সায়মা ওয়াজেদের কারণে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে : বাহাউদ্দিন নাছিম

আগের সংবাদ

পাহাড় জনপদে আতঙ্কের ঢেউ

পরের সংবাদ

প্লাস্টিকের মতো সীসা দূষণ বড় চ্যালেঞ্জ : পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া অত্যন্ত জরুরি। ‘এড্রেসিং দ্য চিলড্রেনস এনভায়রনমেন্টাল হেলথ উইথ এ পার্টিকুলার ফোকাস অন লেড পয়জনিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পরিবেশমন্ত্রী তার বক্তব্যে শিশু স্বাস্থ্যের ওপর সীসা বিষক্রিয়ার ক্ষতিকারক প্রভাব এবং এই সমস্যার সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসডো (ইএসডিও) গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে যৌথভাবে এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। ইএসডিওর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন অফিস অব চিফ কন্ট্রোলার অব ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্টসের চিফ কন্ট্রোলার (অতিরিক্ত সচিব) এসকে রফিকুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম। আরো বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মায়া ভ্যানডেনেন্ট, এসডোর সেক্রেটারি জেনারেল ড. শাহরিয়ার হোসেন ও নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা প্রমুখ। থিমাটিক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন এসডোর রিসার্চ অ্যান্ড ক্যাম্পেইন অ্যাসোসিয়েট সাদমিন সাদাফ জাহান। অনুষ্ঠানে বক্তারা সীসা বিষক্রিয়া প্রতিরোধের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ কোন অবস্থায় যাবে তা নির্ভর করবে জনস্বাস্থ্যের ওপর। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে আমরা হয়তো ৮ থেকে ৯-এ চলে যেতে পারি। দূষণে ক্ষতির পরিমাণ যদি ৮ কিংবা ১০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে সেই প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না। তাই জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে আমাদের প্রাধান্য দিতে হবে প্রতিরোধের ওপর। তিনি বলেন, প্লাস্টিকের ওপর আমরা এখন এতটাই নির্ভরশীল হয়ে গেছি যে, প্লাস্টিক ছাড়া এখন আমাদের জীবন চলে না। পাশাপাশি সীসার ওপরও আমরা নির্ভরশীল। এমন কিছু নেই যেখানে সীসা নেই। দুধ থেকে শুরু করে রান্নার পাতিল, রং সব কিছুতেই সীসা চলে এসেছে। এই সীসাকে আমরা কীভাবে প্রতিরোধ করব- এটা নিয়ে আমরা এখন কাজ করতে চাই।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, একদিকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি, স্বাস্থ্য খাতে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছি, অন্যদিকে স্বাস্থ্য যেন আমরা সুরক্ষা করতে না পারি সেই বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সীসা বিষক্রিয়ার ঝুঁকি কমাতে এবং শিশুদের স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সরকার ও তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, এ কাজে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সা¤প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সীসার সংস্পর্শে আসায় শিশুদের বুদ্ধিমত্তার অবনতি ঘটছে। দেশে ৯৬ লাখেরও বেশি শিশুর রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। বছরে এর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ মিলিয়ন আইকিউ পয়েন্ট। এই দূষণ মোকাবিলায় দেশে নানা প্রচেষ্টা চললেও শিল্প কারখানা থেকে নিঃসৃত দূষিত পানি এবং সীসাযুক্ত রঙে শিশুরা সীসা বিষক্রিয়ার শিকার হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, এর কারণে বাংলাদেশ আনুমানিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে যা ২০১৯ সালের দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশের সমান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়