কাগজ প্রতিবেদক : আগামী ৩১ মে থেকে রাজধানী ঢাকার রাস্তায় আর রংচটা বাস চলতে পারবে না। এছাড়া ঢাকার সড়কে ফিটনেসবিহীন বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অভিযান শুরু করবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ ভবনে ‘ফিটনেসবিহীন, বায়ু দূষণকারী ও রুটপারমিটবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধকরণসংক্রান্ত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার পরিবহন মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ৩১ মে তারিখের পর ঢাকার রাস্তায় কোনো ধরনের রং উঠে যাওয়া বাস চলতে দেয়া হবে না। আমরা এর জন্য অভিযানে বের হবো। আশা করব মালিকরা নিজ উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন বাস উপহার দেবেন। আমরা পুরো বিষয়টি মনিটরিং করব। আগামী ৩০ মে’র মধ্যে ঢাকার সড়কে চলাচলকারী সব বাস-মিনিবাসের তালিকা ও মালিকদের নাম বিআরটিএ-তে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ সভায় বলেন, রাজধানীতে ৩৯টি কোম্পানির ৫২৮টি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছিল। এর মধ্যে ২৫৭টি ঠিক করা হয়েছে। তবে এ তালিকা পূর্ণাঙ্গ আকারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার তাগিদ রয়েছে বিআরটিএ’র। গত ৩১ মার্চ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের কালো ধোঁয়া এবং উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণসামগ্রী না রাখা এবং বায়োম্যাস বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের বেশি পুরনো বাস রাজধানীতে চলতে দেয়া হবে না।’ ওই সভায় মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা শহরে চলাচলকারী পুরনো বাসের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে এবং পরিবহন মালিক সমিতিকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের অধিক পুরনো বাস তুলে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এছাড়া পুরাতন যানবাহন পুরোপুরি নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপ করতে বিআরটিএকেও নির্দেশ দেন।
তবে বাস মালিকরা এপ্রিল মাসের মধ্যে ২০ শতাংশ বাস রং করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। বাকি ৮০ শতাংশ গাড়ি ধাপে ধাপে রং করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে বলেন, দ্রুত সময়ে গাড়িগুলোর ফিটনেস ঠিক করা কঠিন হবে। ঢাকার ৬০ শতাংশ বাস মালিকের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গাড়িগুলো ঠিক করে রাস্তায় নামানোর মতো আর্থিক সচ্ছলতা নেই। কেননা এইসব মালিকদের অধিকাংশ একটি-দুটি পুরনো বাস কিনেই মালিক হয়েছেন। এদের কেউ কেউ গাড়ির মেকানিক থেকে, কেউ আবার বাসচালক থেকে বাস মালিক হয়েছেন। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির হিসাবে দেখিয়ে তারা বলেন, ঢাকার সড়কে এখন সাড়ে ৩ হাজার বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহন করছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পুরোপুরি ফিটনেস ঠিক করা পর্যন্ত যদি ১ থেকে দেড় হাজার গাড়ি বসিয়ে রাখা হয়, তাহলে নগরে গণপরিবহন সংকট তীব্র হবে। মালিকদের ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকার রাস্তায় চলাচলরত বাসগুলো সংস্কার করে তোলা হবে। রং চটে যাওয়া গাড়ি চলতে না পারে সে বিষয়ে ঈদুল ফিতরের পর সমিতির জোনাল অফিসগুলো থেকে গাড়িগুলোর মনিটরিং বাড়ানো হবে। ভাঙাচোরা গাড়িগুলোর মালিকদের ১৫ দিন সময় দেয়া হবে। তারপরেও কেউ সড়কে এসব বাস নামালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।