কাগজ প্রতিবেদক : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় নতুন করে আরো দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট ৩ ও ৪) নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসে এ প্রস্তাব দেন রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। প্রধানমন্ত্রী তাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নতুন দুটি ইউনিট স্থাপনে প্রাথমিক পর্যায়ে কারিগরি সমীক্ষা পরিচালনা করা দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাৎকালে রোসাটমের ডিজি নতুন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শুরু করতে ওই কারিগরি সমীক্ষা দ্রুততম সময়ে শুরু করার প্রস্তাব দেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের নির্মাণকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্ট আপ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শুরু হবে। ইউনিট ১ ও ইউনিট ২ থেকে ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। রোসাটম মহাপরিচালক আরো বলেন, নতুন ইউনিট ৩ ও ৪ এর নির্মাণকাজ প্রথম দুটি ইউনিটের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করা দরকার। বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের স¤প্রসারণ আর্থিক দৃষ্টিকোণ এবং কারিগরি ও পারমাণবিক নিরাপত্তার আলোকে অধিকতর লাভজনক ও যুক্তিযুক্ত যা আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারামাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রুশ ফেডারেশনে ফেরত নিতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য নির্দেশনা দেন। রোসাটমের ডিজি প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রুশ ফেডারেশেনে ফেরত নেয়ার বিষয়ে রুশ সরকারের পক্ষে নিশ্চয়তা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রুশ ফেডারেশনে ফেরত নেয়ার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রæতিও দেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানি রুশ ফেডারেশনে ফেরত নেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও রুশ ফেডারেশনের সরকার আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি সই করেছে।
রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার প্রায় আড়াই হাজার জনশক্তি কাজ করছে। তারা এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী রোসাটম মহাপরিচালককে বাংলাদেশি এসব দক্ষ মানব সম্পদকে অন্য পারমাণবিক প্রকল্পে কাজে লাগাতে বলেন।
সাক্ষাৎকালে রোসাটম মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় ভøাদিমির পুতিনকে অভিনন্দন জানান। রোসাটম মহাপরিচালকও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।