পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও আইওএম মিশনপ্রধানের

আগের সংবাদ

পাহাড়ে নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ

পরের সংবাদ

তারাগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীর বুকে সবুজের সমারোহ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সিরাজুল ইসলাম বিজয়, তারাগঞ্জ (রংপুর) থেকে : রংপুরের তারাগঞ্জে নদীর বুকে ধান চাষ এখন কৃষকের সোনালি ফসলের মহোৎসব। বর্ষা মৌসুমে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলিন হয়ে যায় এই নদীতে। সময়ের সেই খরস্রোত নদী যৌবন হারিয়ে এখন চরে রূপ নিয়েছে। এতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা হয়। এর বুকজুড়ে দেখা দেখা দেয় সবুজ আর সবুজ। চরে রূপান্তরিত হওয়া যমুনেশ্বরী কৃষকের বাঁচার স্বপ্নকে জাগিয়ে রেখেছে। উপজেলায় বর্ষাকালে পানি ও ফসলি জমির আদ্রতা ধরে রাখে একমাত্র খাঁরুভাজ, চিকলী ও যমুনেশ্বরী ছোট-বড় প্রায় তিনটি নদী। এ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে নদীগুলো। বর্ষায় নদীগুলো পূর্ণ যৌবন পায়। বর্ষা অন্তর্হিত হওয়া পরই দেখা দেবে দিগন্তব্যাপী চর। বিগত কয়েক বছরে নদী শুকিয়ে যাওয়ার ফলে এর বুকে বোরো ধান, বাদাম, সরিষা, আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন ফসল কৃষকরা সফলভাবে চাষাবাদ করছে। অথচ এই নদী ছিল একদা তারাগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে নৌপথে বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র নৌরুট। খরস্রোতা সেই নদী এখন যৌবন হারিয়ে চর। আর তাতে চাষাবাদ হচ্ছে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল। চাষাবাদে তার বুকজুড়ে সবুজের হাসি দেখতে পাওয়া যায়। ঘনিরামপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, নদীর পাশে জমি আছিল ‘হামার জমি নদীত ভাঙ্গি গেইছে’, এখন চর হইছে। সেই চরত মিষ্টি কুমড়া আবাদ করছি। উন্নত জাতের কুমড়ার খুব ভালো ফলন হইছে। হাজিপুর গ্রামের মোকলেছার রহমান বলেন, নদী হামার এখন আবাদের মূল হয়া গেইছে। গম-ভুট্টাসহ সবজিও বাম্পার ফলন হয়ছে। এবার নদীর চরে আলু চাষ করে বেশ লাভবান হইচি। এলাকাবাসী জানান, এই চরে কৃষক কৃষানিরা দিনভর কাজ করে সোনার ফসল ঘরে তুলছেন। রহিমাপুর চাকলা খেয়াঘাটের বয়স্ক মাঝি আবজারুল ইসলাম বলেন, এই নদীতে এক সময় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় নৌকায় চড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। আজ সেই নদী এখন মরা খাল। নদীর পানি দিয়ে বোরো চাষাবাদ হতো একটা সময়। এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। নদীকে বাঁচাতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারিভাবে নদী খননের মধ্য দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে নদীর নাব্য। নদীর বর্তমান অবস্থা দেখে উপজেলার সচেতন মানুষদের ধারণা আগামী দশ বছর পর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে রূপকথা হিসেবে মনে হবে। কবির কাব্যকথা, শিল্পীর গানের কথার মতোই মনে হবে তাদের কাছে যে এইখানে একটা নদী ছিল। এই নদী বেঁচে থাকবে শুধুই স্মৃতির মণিকোঠায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী বলেন, নদীর বুকজুড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হেক্টর বোরো ধান সরিষা, আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, ভুট্টাসহ নানা ফসল চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিচ্ছে মাঠপর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা ভালো ফলন ও ভালো দামও পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়