চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মাসুদ আলী এ রায় দেন। রায়ের পর দণ্ডিতদের বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪) ও একই গ্রামের শেষপাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫), আসাননগর গ্রামের মাঝেরপাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুৎ আলী (২৩)। আসাননগর গ্রামের স্কুলপাড়ার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে শাকিল হোসেনকে (২৩) ২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার ও এজাহারের বিবরণ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ায় বৃদ্ধ নজির মিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন বসবাস করতেন। প্রতিদিনের মতো ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। ওইদিন রাতে যে কোনো সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারপাড়ার নজির মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে চুরির উদ্দেশ্য। প্রথমে নজির মিয়াকে গোসল খানার মধ্যে হাত-পা বেঁধে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তার স্ত্রীকে ঘরের ভেতর হত্যা করে।
নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে বাবা-মায়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিলে বন্ধ পায়। পরে ঘটনাস্থলে মেয়ে ও জামাই এসে দেখে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় ২৫ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবইন্সপেক্টর মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীন তদন্ত শেষে হত্যায় সরাসরি জড়িত সাহাবুল হক, রাজিব হোসেন, বিদ্যুৎ আলী ও ভিকটিমের মোবাইল কেনায় জড়িত শাকিল হোসেনের নামে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য শেষে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক
মাসুদ আলী আসামির উপস্থিতিতে গতকাল দুপুরে রায় ঘোষণা করেন। বিচারক তাদের তিনজনকে ফাঁসি, একজনকে ২ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।