মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

নৌপথের ঈদযাত্রা শুরু বৃহস্পতিবার : বুকিং হয়েছে লঞ্চের ৭০ শতাংশের বেশি কেবিন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেব দুলাল মিত্র : নৌপথে ঈদযাত্রার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নৌপরিবহনে ঈদযাত্রা শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় সব রুটের লঞ্চের ৭০ শতাংশের বেশি কেবিন বুকিং হয়ে গেছে। আগেভাগে কেবিন বুকিং দেয়ায় এবার যাত্রীদের বেশ সাড়া মিলেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ঈদযাত্রা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুর জেলায় সড়কপথে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। ফলে আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে নৌপথের যাত্রী। তবে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় নৌপথে এখন ভোলা জেলার বিভিন্ন রুটে লঞ্চগুলো একছত্রভাবে যাত্রী পরিবহন করছে। ভোলা সদর, বোরহানুদ্দিন, চরফ্যাশন, ইলিশা, বেতুয়া, মনপুরাসহ সব রুটে চলাচলরত লঞ্চগুলো এখনো ভালো ব্যবসা করে যাচ্ছে। ঈদযাত্রা শুরুর আগেই এসব রুটের লঞ্চগুলোতে ৭০ শতাংশের বেশি কেবিন বুকিং হয়ে গেছে।
লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রী সংকটের কারণে দীর্ঘদিন বসে থাকা লঞ্চগুলোও ঈদ উপলক্ষে নতুন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। ছুটি বেশি হওয়ায় এবারের ঈদে অধিকসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছাড়বে। ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-ভোলা, ঢাকা-রাঙ্গাবালী, ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুটে চলাচলকারী সব লঞ্চেই ভিড় হবে।
সুরভী শিপিং লাইন্সের পরিচালক রিয়াজুল কবির জানিয়েছেন, ঢাকা-পটুয়াখালী, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-ভোলা, ঢাকা-চাঁদপুর রুটে যে লঞ্চগুলো চলছে সেগুলো বেশ বড় ও বিলাসবহুল। এসব লঞ্চে এখন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তায় কোনো সমস্যা নেই। এবারো সমস্যা হবে না। সব লঞ্চ ঈদযাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কুয়াকাটা-২ লঞ্চের মালিক আবুল কালাম খান জানিয়েছেন, আগামী ৪ এপ্রিল সরদঘাট টার্মিনাল থেকে নৌপথে ঈদযাত্রা শুরু হবে। এদিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় বিপুলসংখ্যক যাত্রী ঢাকা ছাড়তে শুরু করবেন। অনেকে পরিবারের সদস্যদের আগেভাগেই বাড়ি পাঠাবেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে সদরঘাটের ব্যস্ততা আরো বাড়বে। ঈদযাত্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন নৌরুটে সদরঘাট থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০টি লঞ্চ চলাচল করবে। যাত্রীর চাপ বেশি থাকলে ভিড় সামাল দেয়ার জন্য আরো স্পেশাল লঞ্চ প্রস্তুত আছে।
তিনি আরো বলেন, কোনো লঞ্চ যাত্রী ভাড়া বাড়াবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অধিকাংশ কেবিন বুকিং হয়ে গেছে। ডেকের যাত্রীরা লঞ্চে উঠেই টিকেট কাটতে পারবেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বয়া, লাইফ জ্যাকেটসহ সব সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে নৌপথের ঈদযাত্রা এবার স্বস্তির হবে।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, যাত্রীদের নির্বিঘেœ ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কাক্সিক্ষত তথ্য দেয়ার জন্য সদরঘাট টার্মিনালে চারটি ডিজিটাল ডিসপ্লে বসানো হয়েছে। এতে লঞ্চের অবস্থান ও ছেড়ে যাওয়ার তথ্য যাত্রীরা জানতে পারবেন। কোনো লঞ্চ যেন অতিরিক্ত যাত্রী নিতে না পারে তা মনিটরিং করা হবে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যেতে দেয়া হবে না। লঞ্চের মাস্টারদের কালবৈশাখীর সংকেত পাঠানোর জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। নদী বন্দরের মাস্তুলে একটি সিগন্যাল দেয়া আছে। পাশাপাশি বন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তাৎক্ষণিকভাবে মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। নৌপথে টহল টিম ও নৌপুলিশের পাশাপাশি কোস্ট গার্ডের নজরদারি থাকবে। তবে মালিকদের লোকসান পোষাতে অতিরিক্ত লঞ্চ বা ফিটনেস বিহীন লঞ্চ চালানোর সুযোগ দেয়া হবে না।
সুন্দরবন-১১ লঞ্চের কর্মী মনির জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে কেবিনের চাহিদা রয়েছে। এবার অধিকাংশ কেবিন বুকিং হয়েছে গেছে। এখনো যারাই ফোন করছেন বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের কেবিন বুকিং রাখা হচ্ছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া প্রস্তুত : ঈদ সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘœ করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটেও পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এই নৌরুটে ১৫টি ছোট-বড় ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে। ঈদের আগে তিনদিন ও পরের তিনদিনসহ মোট ৭ দিন পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে পারবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘœ করতে দুটি ফেরি বাড়িয়ে ১৫টি এবং ৩টি লঞ্চ বাড়িয়ে মোট ২০টি করা হয়েছে। দৌলতদিয়া প্রান্তের তিনটি ফেরিঘাট সংস্কার করে পুরোপুরি সচল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগের মতোই শুধু যাত্রীবাহী যানবাহন পারাপার করা হবে। পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহন বন্ধ থাকবে।
এছাড়া আগামী ৬ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নদীতে সার্বক্ষণিক বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। ঘাটগুলোতে যানবাহনের ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেয়া হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ঘাট এলাকায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার থাকবে। পর্যাপ্ত আলোক ব্যবস্থা থাকবে। ঘাট এলাকায় চাঁদাবাজি বন্ধে জিরো টলারেন্সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়