মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

চার হাজারি এলিট ক্লাবে মুমিনুল : চট্টগ্রাম টেস্ট

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চতুর্থ বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ৪ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেছেন মুমিনুল হক। গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮৪ বলে ৩৩ রান করে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। যদিও সময়টা বেশি নিয়েছেন তিনি অভিষেকের পর থেকে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে যে ধারাবাহিকতা ছিল মুমিনুলের, শেষ দুই বছরে তা বাঁধ সেধেছে। যে কারণে ধীরগতিতে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের পর এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছেন বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ১২ সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল।
এরই মধ্যে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শূন্য থেকে হাজার রানে পৌঁছতে মুমিনুল শুধু ২০ ইনিংস নিয়েছিলেন। আর হাজার রান থেকে দুই হাজারে যেতে খেলেছেন ২৭ ইনিংস। পরের হাজার রানে পৌঁছতে নেন আরো ২৯ ইনিংস। তবে এবার তিন হাজার থেকে চার হাজার রানে পৌঁছতে তার লাগল প্রায় দ্বিগুণ ইনিংস সর্বমোট ৩৭ ইনিংস লেগেছে তার।
এদিকে এলিট ক্লাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে কম ইনিংস খেলেছেন তামিম, চার হাজার রান করতে তার লেগেছিল ১০৬ ইনিংস। এরপর পরই আছেন সাকিব আল হাসান, তামিমের চেয়ে দুই ইনিংস বেশি খেলে ১০৮ ইনিংসে দেখা পান চার হাজার রানের। যেখানে সবার প্রথমে চার হাজার রান করা মুশফিকের লেগেছিল ১২২ ইনিংস সেখানে মুমিনুলের লাগল ১১৩ ইনিংস।
২০১৯ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসি যখন সাকিব আল হাসানকে এক বছর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছিল তখন থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের নেতৃত্ব মুমিনুলের কাঁধে। টেস্ট ফরম্যাটে তখন নিয়মিত খেলায় মুমিনুলকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয় বিসিবি। অপ্রস্তুত সেই অধিনায়কের জন্য অধিনায়কত্ব গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। তাতেই দুই বছরের ব্যবধানে মুমিনুল হয়ে উঠেন ‘খলনায়ক’। দলকে ঠিকঠাক মতো পরিচালনা করতে না পারার পাশাপাশি নিজের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক না হাওয়ায় দ্বিমুখী চাপে প্রবলভাবে পিষ্ট হন মুমিনুল। বাধ্য হয়ে তাই অধিনায়কত্বও ত্যাগ করেন। অধিনায়কত্ব মুমিনুলের পারফরম্যান্সে কতোটা প্রভাব ফেলেছে তাও স্পষ্ট হয়েছে পরিসংখ্যানে। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ১৭ ম্যাচে ৩১.৪৪ ব্যাটিং গড়ে মুমিনুলের সংগ্রহ ৯১২ রান। হাঁকিয়েছেন মাত্র ৩ সেঞ্চুরি। যেখানে অধিনায়কত্বের আগে ৩৬ টেস্টে ৪১.৪৭ গড়ে রান করেছেন ২৬১৩। সেঞ্চুরিও ছিল ৮টি। তবে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর নিজেকে নতুন করে গড়ছেন মুমিনুল। ৮ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরির সঙ্গে ২ ফিফটি নিয়ে এখন পর্যন্ত করেছেন ৪৮৩ রান। যেখানে গড় ছিল ৪০.২৫।
উল্লেখ্য টেস্টে মুমিনুলের অভিষেক হয়েছিল এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০১৩ সালে। টেস্ট অভিষেক হওয়ার আগে তার অভিষেক হয়েছিল ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে, ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। শুরু থেকেই টিম ম্যানেজম্যান্ট ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির থেকে মুুমিনুলকে টেস্টেই বেশি প্রধান্য দিয়েছে যার ফলে ক্রমেই একজন টেস্ট বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। অভিষেকের পর থেকেই টেস্টে নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রাখতে শুরু করেন মুমিনুল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে এক ইনিংস ব্যাটিং করে তুলে নিয়েছিলেন ফিফটি। পরের টেস্টেও ৬৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। মুমিনুল প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই সিরিজের টানা দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি করেন তিনি। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে খেলেছিলেন ১৮১ রানের অনবদ্য এক ইনিংস যা এখন পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার সেরা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১২৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুুমিনুল। ১১ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে মুমিনুল খেলেছেন ৬১টি ম্যাচ। ১১৩ ইনিংসে করেছেন ৪০০৮ রান, গড় ৩৮.৫৩। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১২টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি, সঙ্গে আছে ১৭টি হাফ সেঞ্চুরিও।
এভাবে টেস্টে বেশ কিছু রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন মুমিনুল। ২০১৩ সালে যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়, তখন তাকে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা দেয়া হয়েছিল। কারণ সে বছর মুমিনুলের ব্যাটিং গড় ছিল ৮৩। ওই বছর মুমিনুল হক টানা ১১টি টেস্ট ম্যাচে অন্তত এক ইনিংসে ৫০ এর বেশি রান করেছিলেন, এই রেকর্ডে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডস, ভারতের গৌতম গম্ভীর ও ভিরেন্দার সেওয়াগের পাশে নিজের নাম লিখিয়েছিলেন, যেখানে সবচেয়ে বেশি ছিল এ বি ডি ভিলিয়ার্স ও জো রুটের টানা ১২ টেস্ট ম্যাচে অন্তত এক ইনিংসে ৫০। সেখানে মুমিনুল হকের গড় ২০১৪ সালেও ছিল ৫০ এর উপর। তখন থেকেই তার থেকে প্রত্যাশাটা যে আরো অনেক বড়, অনেক উঁচুতে তা প্রমাণ হয়েছিল। তবে ২২ গজে সেই প্রত্যাশা পূরণ কতটা করতে পারবে মুমিনুল তা শুধু সময়ই বলে দিবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়