গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : ভারতের সবচেয়ে নিম্নমানের প্রোডাক্ট আওয়ামী লীগ

আগের সংবাদ

বহুমাত্রিক কৌশল আ.লীগের

পরের সংবাদ

হোটেল মালিক সমিতির মহাসচিব : রেস্তোরাঁয় মোবাইল কোর্টের নামে ‘চাঁদাবাজি’ চলছে

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মোবাইল কোর্ট যেভাবে পরিচালনা করা হয় তা উদ্যোক্তাদের জন্য চরম ‘অপমানজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হোটেল মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, গণমাধ্যম সঙ্গে নিয়ে যেভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় তাতে উদ্যোক্তাদের ‘ধসিয়ে’ দেয়া হয়। বিএসটিআইয়ের অভিযানে তো ‘এক রকমের চাঁদাবাজি’ হয়। মোবাইল কোর্টকে ইস্যু করে রাজধানীতে অনেক ভুয়া মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন ইমরান হাসান। সেই সঙ্গে তিনি প্রস্তাব করেন, এরপর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হলে এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখতে হবে। তিনি বলেন, লাইসেন্স না থাকলে হাতকড়া, জরিমানা দিতে দেরি হলে হাতকড়া পরানো হয় অভিযানগুলোতে। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। বাংলাদেশে যেভাবে মোবাইল কোর্ট চালানো হয়, এভাবে কোনো দেশে পরিচালতি হয় না। সরকারের সংস্থাগুলো একতরফাভাবে এসব অভিযান চালানোর ফলে অভিযানের উদ্দেশ্য সাধন হয় না।
ভোক্তা অধিকারের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অভিযান প্রসঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় গতকাল রবিবার ইমরান হাসান এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেনসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা, ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার (অপারেশনস) মো. আবু ইউসুফ, বিএসটিআই এর উপপরিচালক (সিএম) মো. রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ নিরাপদ খ্যাদ্য কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. আব্দুস সোবহান, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আঁখি শেখ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. নিয়াজ আলী চিশতী, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কোষাধ্যক্ষ ড. মঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার এবং বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সদস্যরা।
মোবাইল কোর্ট নিয়ে কথা বললে প্রতি কথায় জরিমানা করা হয় উল্লেখ করে হোটেল মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন, ফুড নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না। মোবাইল কোর্টে ফুড এক্সপার্ট থাকতে হবে। না হলে ম্যাজিস্ট্রেট এসে মেরিনেট করা খাবার ঘ্রাণ নিয়ে বলেন এটা পচা খাবার। এটা কোনো কথা নয়। তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশনের সঙ্গে অভিযানের সময় ‘নেগোসিয়েশনে’ না গেলে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে এক ধাক্কায়। রাষ্ট্রে খাবার ও রেস্তোরাঁ নিয়ে প্রচুর আইন হয়েছে। কিন্তু এসব আইন কীভাবে কাজ করবে সেটি নিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। ৭০ শতাংশ এলপিজি নিয়ে রেস্টুরেন্ট চালাতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রæটিপূর্ণ সিলিন্ডারের দায়িত্ব নেবে না রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, যারা এটি তৈরি করছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
রেস্তোরাঁগুলোর ওপর চাপ কমাতে এখন থেকে সরকারি সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে অভিযান চালাবে বলে জানিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, অ্যানালগ পদ্ধতিতে বাজারে অভিযান পরিচালনা করলে দেখা যায়, একই এলাকায় বারবার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে আবার এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। সবকিছু যাতে একটি নিয়মের আওতায় আসে তাই বাজার মনিটরিং অ্যাপভিত্তিক করা হবে। এছাড়া অ্যাপভিত্তিক বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু হলে স্বচ্ছতা আসবে জানিয়ে ভোক্তার ডিজি বলেন, কোথায় কোথায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং এর ফলাফল কী সেগুলো অ্যাপে থাকলে মোবাইল কোর্ট নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা থাকবে না। অন্যদিকে, ডিএমপি যেভাবে পুলিশ দিয়ে সাহায্য করে থাকে, তারাও বুঝতে পারবে কোনো অভিযানের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য সংযুক্ত আছে।
ভোক্তার ডিজি জানান, এখন থেকে সম্মিলিতভাবে ঢাকার রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান হবে। ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, বিএসটিআই, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন আলাদাভাবে অভিযান না চালিয়ে সম্মিলিতভাবে অভিযান চালাবে।
তবে সম্মিলিত এ অভিযানের পরিধি এখন পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটনের অধীনেই থাকবে। তবে অভিযান শুধু রেস্তোরাঁয় হবে নাকি বাজারেও হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভোক্তার ডিজি বলেন, ‘আপাতত আমরা রেস্টুরেন্ট নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করব। ধীরে ধীরে বাজার ব্যবস্থাও এই সম্মিলিত কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়