গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : ভারতের সবচেয়ে নিম্নমানের প্রোডাক্ট আওয়ামী লীগ

আগের সংবাদ

বহুমাত্রিক কৌশল আ.লীগের

পরের সংবাদ

কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র্র : দিনদুপুরে নিশ্চিহ্ন পরিত্যক্ত ভবন কে ভেঙেছে জানে না কেউ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইমুম সাব্বির শোভন, জামালপুর থেকে : জামালপুরে দিনদুপুরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবন। কে বা কারা এই ভবন ভেঙে নিয়ে গেছে তা জানে না কেউই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে ভাঙা হয়েছে এই ভবন। শত বছর পুরনো ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই ভবন ব্যবহৃত হতো দাতব্য চিকিৎসালয় হিসেবে। ভবনটিতে ছিল তিনটি কক্ষ। জামালপুর-সরিষবাড়ী মহাসড়কের বাম পাশে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিপরীত পাশে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবস্থান। জনবহুল জায়গা থেকে গত শুক্রবার দুপুরে হাওয়া হয়ে গেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন। কে এই ভবন ভেঙেছে তা জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা।
গতকাল রবিবার দুপুরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান গেটের পরে হাতের বাম ও ডান পাশে পড়ে রয়েছে কিছু ইটসহ ভবনের ভাঙা কিছু অংশ। এছাড়া কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাঙ্গণে দেখা গেছে সেই ভবনের কিছু রড ও একটি ভেকু গাড়ি। কে বা কারা কি কারণে এই ভবন ভেঙেছে এমন প্রশ্নের উত্তর নেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীদের কাছে। তবে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন রায় বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। এরপর শনিবার আবারো অফিসে এসে দেখি পরিত্যক্ত ভবনটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে গেছে। পরে আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই ও জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে বসবাসকারী খালেদা বেগম বলেন, গত শুক্রবার চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে বেলা ১১টার দিকে ভবন ভাঙা শুরু করে। রাত ১টা পর্যন্ত ভবন ভাঙার কাজ চলে। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করতে গেলে মারধর করতে আসে তারা। স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহিন বলেন, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠ সহকারী সাজু বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে ভবনটি ভাঙার কাজ করে। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলেও তারা দেখায়নি।
ভবন ভাঙার বিষয়ে কেন্দুয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। শফিকুল ইসলাম বলেন, ভবনটি ভাঙায় আমরা সবাই খুশি। পরিত্যক্ত ভবন ছিল। গত শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এটি ভাঙা হয়। চেয়ারম্যানের নির্দেশে লোকজন এসে এসব ভাঙতে শুরু করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ভবনটি এই এলাকার মাদক ব্যবসার একটি আখড়া ছিল। ভবনটি সরানোর জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সদর এমপিকে কয়েকবার অবগত করেছিলাম। কে এই ভবন ভেঙেছে তা আমরা জানি না। ভবন ভাঙার পর আমি ভাঙাচোড়ার অবশিষ্ট অংশটুকুর নিরাপত্তার জন্য বাজারের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছি। আমার পরিষদের সামনে হলেও আমি জানি না কে ভেঙেছে। জামালপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সরকার বলেন, রবিবার দুপুরে আমি ঘটনাস্থল সরজমিন পরিদর্শন করেছি। আর এই বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকুর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
ডা. উত্তম কুমার সরকার আরো বলেন, ২০২২ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু একটি পক্ষের মামলার কারণে এই ভবন ভেঙে ফেলা যায়নি।
সদর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়