মার্চের স্মৃতি

আগের সংবাদ

দুর্ঘটনারোধে নেই কার্যকর ব্যবস্থা : এসি রুমে বসে দুর্ঘটনা দেখেন কর্মকর্তারা > আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

পরের সংবাদ

জীবনমানের উন্নয়ন ও দিনবদলের যাত্রা : স্বাধীনতা দিবসের ভাবনা

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ দুনিয়ায় এসেছে, বাংলাদেশ থাকবে, কেউ একে ধ্বংস করতে পারবে না।’ এ কথা বলার অনেকদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসীন হয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশা পূরণ করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছেন শেখ হাসিনা। আর এজন্যই উৎসবে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন দিনে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশ্বনেতৃবৃন্দ এ দেশের অগ্রগতি নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা সবাই একসঙ্গে কাজ করে চলমান যুদ্ধের সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করেন। এছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে করেন বিশ্বনেতারা।
ইতোমধ্যে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, ‘দেশটি অসাধারণ উন্নয়ন অর্জন করেছে এবং উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে দেশটিতে আজ প্রাণবন্ত গণতন্ত্র বিরাজ করছে।’ তার মতে, উদ্ভাবনী উন্নয়ন নীতি ও কৌশল গ্রহণ করে বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে দারিদ্র্য হ্রাসে সফল হয়েছে। স্টাইনমায়ার আরো বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি এবং উদার মানবিক সম্পৃক্ততা বিশেষ করে স্বদেশ ভূমি থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আশ্রয়দানকে বিশ্ব অত্যন্ত মর্যাদা দেয়।’ ভারতের কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছিলেন, ‘গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসার দাবিদার।’ এছাড়া কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটান প্রভৃতি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা প্রশংসা করেছেন এ দেশের গতিশীল অগ্রগতিতে।

দুই. বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর এ দেশের মানুষের এগিয়ে যাওয়ার সব উদ্যম রহিত হয়, মানসিকভাবে হতোদ্যম এ দেশবাসী ২১ বছর সামরিক শাসকদের জাঁতাকলে পিষ্ঠ হতে থাকে। কীভাবে প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করে সামনে যেতে হবে, কীভাবে বিশ্বের দরবারে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে হবে, কীভাবে দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখাতে হবে তার সবই সে সময় নির্বাসিত, অন্তর্হিত, যেন প্রভাতে প্রদীপের সলতে পাকানোর কোনো লোক নেই, সন্ধ্যায় আলোকপ্রাপ্তি তো দূরের কথা! তারপর এলো ১৯৯৬ সাল; প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বাঙালির অহংকার হয়ে উঠলেন, জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি নিয়ে তিনি মানুষের সামনে দাঁড়ালেন। দেশের রাজনীতিতে সমাজ সংস্কার আর অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়ে উঠল মূলমন্ত্র; বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মঙ্গল চিন্তায় ব্যাপিত হলেন। ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন’ গ্রন্থের নামপ্রবন্ধে তিনি লিখলেন, ‘আমাদের দেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কর্মসূচি প্রয়োজন। আর্থ-সামাজিক কর্মসূচিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। রাজনীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে রাষ্ট্রের নাগরিকদের সুখ-সুবিধা নিশ্চিত করা, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, সুস্থ-সবল জাতি গঠন করা। রাজনীতি হতে হবে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে। দেশকে আমরা কী দিতে পারলাম সেটাই একজন রাজনীতিবিদের চিন্তা-ভাবনা হতে হবে। দেশ কী দিল তা বড় কথা নয়। দেশের জন্য, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটাই বড় কথা। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি নিয়ে। আজকের প্রতিযোগিতা হতে হবে অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে। সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে।’
এই উদ্ধৃতির সূত্র ধরে বলতে হয়, শেখ হাসিনার সৎ, বলিষ্ঠ এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তিনি টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী দশ নারী নেত্রীর একজন মনোনীত হয়েছেন। অভ্যন্তরীণ জনপ্রিয়তার দিক থেকেও শেখ হাসিনার সমকক্ষ হিসেবে কাউকে চিন্তা করার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন বছরের নানা জরিপে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকারের জনসমর্থন আগের তুলনায় বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ সরকারের কার্যক্রমকে সমর্থন জানিয়েছেন। ২০২১ সালের তুলনায় সরকারের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে ১৯ শতাংশ। এর আগের জরিপে বলা হয়েছিল, সরকারের প্রতি জনসমর্থন ১৯ শতাংশ বেড়ে ৮৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ৩৬ শতাংশ মানুষ বিরোধী দলের কার্যক্রমকে সমর্থন করছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ, বিরোধী দলের সমর্থক ক্রমান্বয়ে কমেছে। ৭৭.৭ শতাংশ বিশ্বাস করে বাংলাদেশ সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, যা ২০১৫ সালে ছিল ৬২ শতাংশ।
এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা দিন দিন অপ্রতিরুদ্ধভাবে বেড়েই চলেছে। এমন নেতৃত্বের কারণেই মহাকাশে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগতভাবে তার অগ্রসরতা জানান দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুসংহত করার পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ গত ১৫ বছরে ‘উন্নয়নের মহাসড়কে’ যে পথ পাড়ি দিয়েছে, তাকে ‘অসাধ্য সাধন’ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির দুর্যোগ মোকাবিলা করে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। তার কারণেই ‘আমরাও পারি’ এই শানিত বাক্যে দীক্ষিত আজকের প্রজন্ম। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি না, পৃথিবীতে কোনো দেশ এত অল্প সময়ে এত উন্নতি সাধন করতে পারে কিনা। কিন্তু আমরা সেই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছি।’ প্রকৃতপক্ষে গত ১৫ বছরে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং দিনবদলের যাত্রা শুরু হয়েছে।

তিন. ‘ক্ষমতা বন্দুকের নলে’- এতে বিশ্বাস ছিল না বঙ্গবন্ধুর। তিনি বিশ্বাস করতেন, ক্ষমতা বাংলার জনগণের কাছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাবার মতো আমাকে যদি জীবন উৎসর্গ করতে হয়, আমি তা করতে প্রস্তুত।’ ধৈর্য ও সাহসের প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের মানসকন্যা, দেশরতœ, কৃষকরতœ, জননেত্রী- বহুমাত্রিক জ্যোতিষ্ক। তাকে কেন্দ্র করে, তার নেতৃত্বে আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি অন্য রাজনীতিবিদদের চেয়ে প্রকৃতপক্ষে আলাদা, ভিন্ন, স্বতন্ত্র ও নেতৃত্বের গৌরবজনক আসনে সমাসীন। তিনি জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করেছেন; জাতীয় সংকট উত্তরণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি জনতার আকাক্সক্ষাগুলো এবং টিকে থাকার বাস্তবতার মধ্যে সেতুবন্ধনের সাহায্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে এনেছেন। তার নেতৃত্বের সাফল্যে বাংলাদেশ আজ গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম; যার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি পাল্টে গেছে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হয়েছে। ভিকটিমের দ্রুত বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায় ঘোষিত হয়েছে (১০ অক্টোবর, ২০১৮), এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেল হত্যাকাণ্ড ও বিডিআর সদস্য কর্তৃক সেনাসদস্যদের হত্যার বিচারসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন হওয়া তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তরুণ প্রজন্ম প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস বীভৎসতাকে। অতীতে সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও আর পেট্রলবোমায় মানুষ হত্যা করেও তারা থামাতে পারেনি যুদ্ধাপরাধের বিচার। এখন দমে গেছে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনৈতিক তৎপরতা। শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নয়, কূটনীতিক দিক থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সব বিরূপ পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে এসেছেন। তার মন্ত্রিসভায় যুক্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক। কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও উন্নয়ন সহযোগী ও অংশীদার বানিয়ে ফেলেছেন রাশিয়াসহ অন্য অনেক দেশকে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে। ২০১৫ সালের মে মাসে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা সে কথা আরো বেশি করে জানান দিয়েছিল। তার সরকারের উন্নয়নের মডেল অন্যান্য দেশের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণের অগ্রগতি দেশবাসীকে অবাক করেছে লেখাবাহুল্য।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে বিশ্বের ১৬৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। বেশ কয়েকটি অভীষ্টে কাক্সিক্ষত অর্জন না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। এসডিজির ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে চারটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সঠিক পথে ও ছয়টি অভীষ্ট অর্জনে বাংলাদেশ পরিমিত রূপে উন্নতি করেছে।
গত মেয়াদে (২০১৪-২০১৮) প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এ প্রকাশিত ‘পলিটিক্স ইন বাংলাদেশ : ওয়ান অ্যান্ড অনলি ওয়ান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসন ন্যায়সঙ্গত। সেটার কারণ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের সফলতা। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদ থেকে আমরা জেনেছি, বিশ্বব্যাংকের ‘মানবসম্পদ সূচক’ বলছে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়নে ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় এগিয়ে আছে। একটি শিশুর শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা এবং টিকে থাকার সক্ষমতা বিচার করে ভবিষ্যতে তার উৎপাদনশীলতা এবং আয়ের সম্ভাবনা বোঝার চেষ্টা করেছে বিশ্বব্যাংক। এর ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে তাদের ‘মানবসম্পদ সূচক’, দেখানো হয়েছে একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা।
বঙ্গবন্ধুর কাছে স্বাধীনতার মানে ছিল শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। শেখ হাসিনার কাজের ধারায় তারই প্রতিফলন রয়েছে। গ্রামীণ জীবনের ব্যাপক রূপান্তরে শেখ হাসিনার অবদান অতুলনীয়। এ বিষয়ে তার ভাবনার বিকাশ অনেক আগে থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘গ্রামকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গড়ে তোলার জন্য নতুন নতুন চিন্তাভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। গ্রামগুলোকে কেন্দ্র করেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে পারে। প্রতিটি পরিবার যদি যতœবান হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ও চিন্তাভাবনা গ্রহণ করে- তাহলে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা অর্জন করতে পারে।’ (পৃ ২১৬) শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু রয়েছে। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সরকারি ফরম, নোটিস, পাসপোর্ট ও ভিসাসংক্রান্ত তথ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন সেবাবিষয়ক তথ্য, চাকরির খবর, নাগরিকত্ব সনদপত্র, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, বিদেশে চাকরি প্রাপ্তির লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশনসহ ২২০টি সেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। উপরন্তু মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বিমা, মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং জমির পর্চাসহ অন্যান্য সেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রায় ১০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা টেলিমেডিসিন সিস্টেমসহ চলছে। মোবাইল টেলিফোন সিমের সংখ্যা ১৫ কোটিতে উন্নীত হয়েছে আর থ্রি-জির পর ফোর-জি (২০১৮) প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ব্যাপকভাবে। মোবাইল ফোনেই ভিডিও-কল করা যাচ্ছে এখন; টিভি দেখা হচ্ছে; ইন্টারনেটের গতি বেড়েছে। করোনা মহামারিতে অনলাইন ক্লাসে টেলি-কনফারেন্স এখন সহজ ব্যাপার। এভাবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এজন্যই চীন-জাপান-ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানসহ বিশ্বের সব নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব অনিবার্য।
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং অগ্রসরতার প্রতি জনগণের বিশ্বাস, আস্থা এবং ভালোবাসাই আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এগিয়ে চলার পাথেয়। জনগণ দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই আওয়ামী লীগ বারবার জয়ী হয়। দেশের মানুষ বিগত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। শেখ হাসিনার মতো যারা জনগণের উন্নয়নের রাজনীতি করেন, জনগণ তাদের পাশে থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের পক্ষে থাকবে, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে- এটাই আমাদের বিশ্বাস। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। জয় শেখ হাসিনা।

ড. মিল্টন বিশ্বাস : বঙ্গবন্ধু গবেষক, অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়