ঢাবি ছাত্র রহিম হত্যা মামলা : চব্বিশ বছর পর সাত জনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

ঈদযাত্রায় এবার স্বস্তির আশা

পরের সংবাদ

মাগুরায় ইট তৈরিতে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, নেই অভিযান : ১১০ ভাটার মধ্যে অবৈধ ১০৬টি

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীপক চক্রবর্তী, মাগুরা থেকে : মাগুরায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ইটভাটা। মাগুরা জেলার ৪ উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটাগুলোতে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এসব ভাটার তদারকি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিজস্ব আইন থাকলেও বছরের পর বছর জেলায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ১০৬ ইটভাটা। ইটভাটার মালিকরা মানছেন না ইট তৈরি ও ভাটা স্থাপন আইন। এ অবৈধ ইটভাটাগুলোর নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা কৃষি বিভাগের প্রত্যয়নপত্র। পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইটভাটা ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা জেলায় ৪টি উপজেলায় মোট ১১০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বৈধ মাত্র ৪টি। বাকি ১০৬টিই অবৈধ। শীতের শুরু থেকে বর্ষার আগ পর্যন্ত একটি ভাটায় একটানা ৫ মাসের আগুনে ৭০-৮৫ লাখ ইট পোড়ানো হয়। যেখানে প্রতিমাসে কাঠের প্রয়োজন হয় ৯০-৯৫ হাজার মণ। সেই হিসেবে এক মৌসুমেই এক কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার মণ কাঠ পোড়ানো হয়।
আইন অনুযায়ী, ইটভাটা স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার বিধান রয়েছে। আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ভাটা হবে এসব এলাকা থেকে ১ কিলোমিটার দূরে। ইট উৎপাদনের জন্য কৃষি জমি, পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে কাঁচামাল ও জ¦ালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারও নিষিদ্ধ। অথচ ইটভাটাগুলোর অধিকাংশই স্থাপিত হয়েছে জনবসতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লাগোয়া ফসলি জমি ও নদীরপাড়ে। ইটভাটার চিত্র দেখলে মনে হবে জেলায় কিছুদিনের মধ্যে উজাড় হবে সব গাছ। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ গাছ হচ্ছে নিধন। অন্যদিকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত মাটি কাটায় স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর নাব্য। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যও ভারসাম্য হারাচ্ছে। সদরের কাশিনাথপুর গ্রামে গড়ে উঠা শাপলা ব্রিকসের প্রবেশ মুখে অনেকটা এলাকাজুড়ে রয়েছে কয়েক হাজার মণ কাঠ। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম মেনে কাঠের পরিবর্তে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর অনুমতি থাকলেও সেদিকে হাঁটছেন না কেউ। সরজমিন জেলা সদরের বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে দেখা গেছে, সবকটি ইটভাটায় লাগামহীনভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। কয়লা পোড়ানোর কথা থাকলেও মানছেন না কেউই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাটার মালিক বলেন, বছরের প্রায় ৮ মাস ভাটা চলে। ৪ মাস বন্ধ থাকে। বর্তমানে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের অধিক দাম দিয়ে কাঠ কিনে পোড়াতে হচ্ছে।
ইটভাটা তদারকি কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, জেলায় কোনো ইটভাটা মালিকের সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। তবে কাঠ পোড়ানোর দায়ে ইতোপূর্বে মালিকদের অর্থদণ্ডসহ ইটভাটা ভেঙে দেয়া হয়েছে।
যশোর জেলা পরিবেশ অধিপ্তরের উপপরিচালক নুর আলমের সঙ্গে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়