ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

আগের সংবাদ

অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

বেঁধে দেয়া দামের প্রতিফলন নেই

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চলতি রমজান মাসেও নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যে বেকায়দায় মধ্যবিত্তরা। সরকারি কোনো নির্দেশনা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। যে যার মতো মূল্য নির্ধারণ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে বেকায়দায় পড়ছে মধ্যবিত্ত মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বাজার করা যেন যুদ্ধের মতো।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত ১৫ মার্চ ২৯টি পণ্যের মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। রমজান মাস উপলক্ষে মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় এই ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও বাজারে ওই নির্দেশনার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। এতেই বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সবকিছু তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। সরকার এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামাতে পারছে না কোনোভাবেই। জনগণকে যেন জিম্মি করে রেখেছে।
সরকারের বেঁধে দেয়া দাম অনুসারে প্রতি কেজি গরুর মাংস সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৬৪ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা। কিন্তু সব বাজারেই ৭৫০ টাকা কিনতে হচ্ছে গরুর মাংস। ক্ষেত্র ভেদে কসাইরা আরো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেয়া দাম ব্রয়লারের ১৭৫ টাকা এবং সোনালি মুরগির ২৬২ টাকা হলেও তা মানছে না ব্যবসায়ীরা।
বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী পাইকারি বাজারে ছোলার দাম সর্বোচ্চ ৯৩ এবং খুচরা পর্যায়ে ৯৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। মসুর ডাল খুচরা পর্যায়ে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা, মোটা দানার মসুর ডাল বিক্রি হবে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং খেসারি ডালের খুচরা মূল্য হবে ৯৩ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা, যা এখন বাজারে ৮০ টাকার অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে। রসুন ১২০ টাকা, আদা ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কিনতে হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে। সবজির ক্ষেত্রেও নির্ধারণ করে দেয়া মূল্য মানছেন না ব্যবসায়ীরা। বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, শিম, মিষ্টি কুমড়াসহ সবকিছুই ১০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। রোজার অতি প্রয়োজনীয় একটি পণ্য খেজুর, যা এখন মধ্যবিত্তদের সামর্থ্যরে বাইরে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্নমানের খেজুরের কেজিপ্রতি দাম হবে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল জনপ্রিয় জাহেদি খেজুরের কেজিপ্রতি দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। কিন্তু বাজারে এখনো ২৫০ টাকার নিচে কোনো সাধারণ খেজুর পাওয়া যায় না। দাম কমাতে এবারো সরকার অনেক ভোগ্যপণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। কোনো কোনো পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে, কিন্তু তারপরও দাম বেড়ে চলছে প্রতিনিয়তই। এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কবে শেষ হবে? বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করতে চাইবেন, কারণ মানুষের লোভ সীমাহীন। এ লোভ নিয়ন্ত্রণ করে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বার্থ রক্ষা করে বাজার স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব প্রশাসনের। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে প্রশাসন বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। লাগামহীন এই বাজার দরের সব দায় কি সিন্ডিকেটের? প্রশ্ন থেকে যায়।

আব্দুল্লাহ আল মুনাইম : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়